এবার দোসর জনসংখ্যাপঞ্জি, মুসলিমদের বঞ্চিত করাই লক্ষ্য?
ওদিকে বিরোধীদের অভিযোগ মুসলিমদেরকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করতেই জনসংখ্যাপঞ্জি করতে চাইছে বিজেপি।যা বাস্তবায়ন করতে পশ্চিমঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বিরোধী নেতারা বলছেন, জনসংখ্যাপঞ্জি করে মুসলিমদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করাই বিজেপির লক্ষ্য। এর মধ্যেই নাগরিকত্ব আইন রদের দাবিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে বুধবারও বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। কর্ণাটক রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে নামেন। তারা আইনটি বাতিল করে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। কর্ণাটক রাজ্যে বন্দিশিবির নির্মাণের সমালোচনাও করেন তারা।
বিক্ষোভে উত্তাল রাজধানী নয়াদিল্লিও। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পেশাজীবী বহু মানুষ বিজেপি সরকারের একচেটিয়া সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন।
তারা বলছে, আমরা ভারতকে বাঁচাতে লড়ে যাবো। সবাই এখন রাস্তায় নেমেছে। কেউ এখানে ধর্ম দেখছে না। ভারতীয় হিসেবে লড়ছে। রাজধানী দিল্লিতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, আশ্চর্যকর ঘটনা। এটা আমাদের অধিকার হরণ।
আসামেও লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। রাজ্যটিতে এনআরসি করে ১৯ লাখের বেশি মানুষকে নাগরিকত্বহীন করায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে।তারা বলছে, নরেন্দ্র মোদি যা করছে আমরা তার বিপক্ষে। এটা আমাদের ঐহিত্য, সংস্কৃতি ও সামাজের বিপরীত।
বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রাজনীতি করছে একটি মহল। মানুষকে উস্কে দেয়া হচ্ছে। দেশে তৈরি করা হচ্ছে অস্থিরতা। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা এর জন্য দায়ী। বিজেপিও আইনের সমর্থনকারীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। কারণ এই আইন ধর্মীয় সহিংসতার শিকার মানুষের ভালোর জন্য আমরা করেছি।
এদিকে আন্দোলন দমাতে উত্তর প্রদেশে গুলি চালানো হয়েছে বলে স্বীকার করেছে পুলিশ। সেখানে ১৬ জন নিহত হয়েছে। পুরো ভারতে প্রায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, এই হালনাগাদ কার্যক্রমের সঙ্গে এনআরসির কোনো সম্পর্ক নেই। এর আগে ভোল পাল্টে তিনি বলেন, পার্লামেন্ট বা মন্ত্রিসভায় দেশজুড়ে এনআরসি করা নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। বিরোধীরা সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই কথা বলেছেন। আর সংকট কাটাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান অমিত শাহ।
এ অবস্থায় বিজেপি নেতাদের মিথ্যাবাদী বলে আখ্যা দিয়েছেন, বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা। তারা বলছেন, গণআন্দোলন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় উদ্ভট সব কথা বলছেন বিজেপির মন্ত্রীরা। বাম নেতারাও বিজেপির নিন্দা করেছেন।