OMG : প্রতি সপ্তাহে ৫ গ্রাম প্লাস্টিক হজম করছে আমরা !
সপ্তাহে ৫ গ্রাম পর্যন্ত প্লাস্টিক খাচ্ছে পৃথিবীর মানুষ! বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডব্লিউডব্লিউএফ) ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি পরিবেশগত দাতব্য সংস্থা গবেষণাটি তত্ত্বাবধান করেছে। গবেষণাটি করেছে অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীজুড়ে প্লাস্টিক সংক্রান্ত দূষণ মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি সপ্তাহে মাথাপিছু ৫ গ্রাম পরিমাণ প্লাস্টিক হজম করছে মানুষ। আর প্লাস্টিকের এই পরিমাণ একটি ক্রেডিট কার্ডের সমান।
গবেষকরা বলছেন, ‘আমরা যে প্লাস্টিক খাই তার সবচেয়ে বড় উৎস হলো খাবার জল । এর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো ‘শেলফিশ’। লবণাক্ত জলের এই মাছ প্রচুর পরিমাণ প্লাস্টিক খায় এবং এর থেকে তৈরি খাবারগুলো আমরা খাই। এভাবেই আমরা দৈনন্দিন খাবারের সঙ্গে উদ্বেগজনক হারে প্লাস্টিক গ্রহণ করছি।’
প্রতিবেদনটি বলছে, শুধু জল থেকেই মানুষ গড়ে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৭৬৯ পার্টিকেল প্লাস্টিক খায়। স্থান ভেদে এর মাত্রা কমবেশি হতে পারে, কিন্তু কেউ এর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এর ওপর ভিন্ন ভিন্ন আরো ৫২টি গবেষণাও সমাপ্ত করা হয়েছে।
আমেরিকায় পাইপ লাইনে সরবরাহ করা জলের ৯৪ শতাংশেই থাকে প্লাস্টিক ফাইবার। অর্থাৎ প্রতি লিটার জলে থাকে গড়ে ৯ দশমিক ৬টি প্লাস্টিক ফাইবার। তুলনায় ইউরোপের জলে দূষণ কম। সেখানে প্রতি লিটারে পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৮টি প্লাস্টিক ফাইবার। প্লাস্টিকের এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা মানুষের দেহে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব রাখতে পারে।
সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিনের খাবার ও বিভিন্ন জলে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা পাওয়া যাচ্ছে। ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টারের অধ্যাপক রিচার্ড ল্যামপিট সিএনএনকে বলেন, ‘মানুষের দেহে প্লাস্টিকের প্রভাব কতটা ক্ষতিকর, তা পরিমাপে আরও বিস্তৃত গবেষণার প্রয়োজন আছে। যদি দীর্ঘমেয়াদে প্লাস্টিক মানুষের দেহে প্রবেশ করতে থাকে, তবে এর স্বাস্থ্যঝুঁকি মারাত্মক আকার নিতে পারে। তবে এই বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়।’
বর্তমানে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৩৩০ মিলিয়ন মেট্রিক টনের বেশি প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে। প্লাস্টিকের বৈশ্বিক উৎপাদন ২০৫০ সালের মধ্যে বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিএনএনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে পুরো বিশ্বে যে পরিমাণ প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে, তা বিগত বছরগুলোর মোট পরিমাণের সমান। এর এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ সরাসরি প্রকৃতির সংস্পর্শে আসছে। প্লাস্টিক দূষণের তীব্রতা অঞ্চলভেদে কম-বেশি হয়। তবে এখনো পর্যন্ত এমন কোনো স্থান এই পৃথিবীতে নেই, যেখানে প্লাস্টিক দূষণ দেখা যায়নি।