নির্ভেজাল ও স্বাস্থ্যকর খাবার একমাত্র এখানেই পাবেন
কলকাতা টাইমস :
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুইডেন। সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিচিত্রতায় ভরপুর দেশটি। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও সুখী দেশের তালিকায় রয়েছে সুইডেন। সেই সঙ্গে এ দেশের খাবারও দারুণ স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু। গোটা বিশ্বের খাদ্য বিশারদ ও ভোজনরসিকদের কাছে সুইডেনের খাবার রহস্যের গন্ধ ছড়ায়। তবে সম্প্রতি দেশটির কনসাল জেনারেল ফ্রেডেরিকা অর্নব্রান্ট তাদের খাবারের রসস্য উন্মোচানের চেষ্টা করেছেন। এখানে জেনে নিন সুইডিশ খাবারের অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা।
১. ভারতীয় উপমহাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষ খুব কমই জানেন সুইডিশ খাবার সম্পর্কে। বিশ্বজুড়ে সুইডিশ শেফরা বহু পুরষ্কার অর্জন করেছেন। গত বছর একজন খ্যাতিমান সুইডিশ শেফ ভারতে আসেন। তিনি রান্নার নানা কৌশল ও গুপ্ত মন্ত্র সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। সুইডেনে খাবার রান্নার সঙ্গে সেই খাদ্য পণ্য কি ধরনের জমিতে কোন উপায়ে উৎপন্ন হচ্ছে, তাও বিবেচনায় রাখা হয়।
২. সে দেশের মানুষরা আলু পছন্দ করেন। ছোটকালে ফ্রেডেরিকা আলুর কি কি তরকারি আছে শুনেই খেতে বসতেন। এসব মাটির নিচের খাবার অনেক দিন থাকে। এদের স্বাদও দারুণ। সুইডেনে সেরা খাবার আলু। এর সঙ্গে মিল রেখে চাল এবং পাস্তাও বেশ জনপ্রিয়।
৩. সব খাবারের স্বাদ অনন্য। এর কারণ রয়েছে। সবকিছু সরাসরি ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা হয়। মাছ আসে নদী, লেক এবং সমুদ্র থেকে। মাংস আসে বন থেকে। তারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকেন। খাবারও সংগৃহীত হয় সেখান থেকেই।
৪. অন্যান্য ইউরোপিয়ান দেশের খাবার থেকে বেশ ভিন্নতা রয়েছে সুইডিশ খাবারে। দীর্ঘ লম্বা ও অন্ধকার শীতের সঙ্গে মানানসই খাবার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে এখানে। তাদের মাংস, মাছ, সবজি বা ফল সংরক্ষণ করে রাখতে হয়। অন্যান্য ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাবারের চেয়ে সে দেশের খাবার কিছুটা বেশি লবণাক্ত। তবে খাবারের স্বাদের বিচিত্রতা রয়েছে।
৫. সুইডেনের উত্তরে হরিণ, মুস প্রজাতির হরিণ, রেইন ডিয়ার ইত্যাদির বাস। সেখানে নদীর স্যামন এবং হোয়াইটফিশ মেলে। দক্ষিণের দিকের মানুষ সামুদ্রিক খাবার বেশি খান। এভাবে অঞ্চলভেদে খাবারের ভিন্নতা তৈরি হয়েছে।
৬. সে দেশে ব্রেড তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের। এগুলো বাইরের দেশে জার্মানব্রেড নামেই পরিচিত। এই জনপ্রিয় ব্রেড রীতিমতো একটি আবিষ্কার। এগুলো বানাতে অনেক সময় ব্যয় হয় এবং ঘরের ছাদে ঝুলিয়ে রাখতে হয়। এ ছাড়া শক্ত রুটিও পাওয়া যায়। এসব ব্রেড ফ্রিজারে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। উত্তরে আরেক ধরনের বিশেষ ব্রেড রয়েছে। বিশেষ উপলক্ষে তৈরি হয় ফ্ল্যাট ব্রেড।
৭. অনেক খাবারকেই সুইডিশ করে দেয় লিঙ্গনবেরি জ্যামের ব্যবহারে। এর স্বাদ অন্যান্য বেরি জ্যামের মতো মিষ্টি নয়। কিছুটা টক। এর স্বাদ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। মিট বলের সঙ্গে দারুণ লাগে।
৮. সুইডিশরা প্রচুর মাংস খায়। তবে এ অভ্যাস বদলাচ্ছে। তারা আরো বেশি বেরি, সবজি এবং ফল খাওয়া শুরু করেছেন। এসব গ্রীষ্মকালে সংগ্রহ করে রাখা হয়। এগুলো রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। রেস্টুরেন্টে এদের ব্যবহারে নানা রেসিপি তৈরি হয়।
৯. কিছু খাবার আছে যা দারুণ জনপ্রিয়। এদের মধ্যে রয়েছে অ্যাপল পাই। আছে ভ্যানিলা কাস্টার্ড কিংবা আইসক্রিম। বাড়িত বানানো হয় ইয়েলো ক্লাউডবেরি জ্যাম। তারা মিষ্টি খেলেও তার স্বাদ বদলানোর চেষ্টা করেন না।
১০. মোটামুটি ৫টি খাবার সুইডেনের খাদ্যাভ্যাসকে দিয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য। এগুলো হলো,
ক. স্মোকড স্যামন/কিউরড স্যামন।
খ. হেরিং মাছের যেকোনো রেসিপি।
গ. ক্রেফিশ বয়েলড ইন সল্টি ওয়াটার উইত ডিল।
ঘ. লিঙ্গনবেরি জ্যাম উইথ ম্যাশড পটেটো অ্যান্ড ব্রাউন সস।
ঙ. জেস পটেটো উইথ ব্রাউন সস অ্যান্ড রোয়ান-বেরি।