ছোট হয়ে আসছে আমাদের মুখ!
তাহলে শুধু আমরা আধুনিক প্রজাতির মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সরাই কেন চিবুকধারী বা এটির উদ্দেশ্য আসলে কি?- নানাভাবে গবেষণা করেও এ রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারছেন না গবেষকরা। মানুষের নিচের চোয়ালের সামনের প্রাচীরের নিচে প্রদর্শিত প্রসারক অংশটি সম্পর্কে গত শতাব্দীতে দীর্ঘদিন ধরে চালু ছিল বিভিন্ন তত্ত্ব।
তত্ত্বগুলোর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, আমাদের চিবুক আমাদের খাবার চিবোতে সাহায্য করতে পারে। কারণ, চর্বণের সঙ্গে জড়িত চাপ মোকাবেলায় অতিরিক্ত হাড়ের প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের এ আকৃতির মুখের সঙ্গে গাছ থেকে মাটিতে নামা অন্যান্য বনমানুষ প্রজাতির তুলনা করার পর এ যুক্তি ধোপে টেকে না।
নর্থ ক্যারোলাইনার ডরহম ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পাম্পুস বলেন, আমাদের চিবুকের অতিরিক্ত ফর্ম চিবানোর শক্তির জন্য খুব দরকারী নয়। আমাদের রান্না করা খাবার অনেক নরম। আমরা খুব বেশি কঠিন করেও চিবাই না। ফলে চিবুক চিবানোর জন্য বিবর্তনের ফল নয়’।যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্লোরা গ্রোয়েনিংও একমত, ‘মানব চিবুক একটি যান্ত্রিক অভিযোজনকে সমর্থন করে না। এটি আমাদের চর্বণেও সাহায্য করে না’।
আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাথান হল্টন বলেন, ‘আমাদের মুখ ছোট হয়ে আসছে- এ কারণেও মুখের এ বিশেষ অংশটি তৈরি হতে পারে। চিবুক তাই মানুষের মাথার খুলি কমানোর একটি উপজাত হতে পারে। যেমন, বিলুপ্ত হোমিনিন আত্মীয়দের তুলনায় আমাদের নিম্ন চোয়াল ও এর হাড় কম শক্তসমর্থ। আমাদের পূর্বপুরুষদের চাবানোর জন্য শক্তিশালী চোয়ালের প্রয়োজন ছিল। এর অর্থ হল, ধারাবাহিক বিবর্তন প্রক্রিয়ায় চোয়ালের সামগ্রিক শক্তি কমে গেছে।আবার এটিকে কেউ কেউ অভিযোজন বা বিবর্তনের অংশ বলেও মনে করেন না। ১৯৭৯ সালে জীববিজ্ঞানী স্টিফেন জে গুল্ড ও রিচার্ড লিওনটিন গবেষণা শেষে বলেন, ‘এটি কেবলমাত্র হতে পারে অ অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য। জৈব ও স্থাপত্য বা অন্য কিছুর একটি পরিবর্তন অন্যত্র ঘটছে, যারই একটি উপজাত হিসেবে চিবুক তৈরি হতে পারে’।