পানিহাটি খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য, স্বামীকে খুন করে মৃতদেহের সঙ্গে রাত কাটালেন স্ত্রী!
কলকাতা টাইমসঃ
গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে প্রাক্তন স্বামীকে খুন করে মৃতদেহের সঙ্গে রাত কাটালেন স্ত্রী! ভোরের আলো ফুটতেই চুপচাপ দরজা খুলে তিনি সোজা চলে গেলেন নিজের বাড়িতে। এরপর স্নান, খাওয়া-দাওয়া সেরে সোজা নিজের কর্মক্ষেত্র এয়ারপোর্টে চলে গেলেন। সারা দিন সেখানে কাজও করলেন।
উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে ৫২ বছরের প্রৌঢ় প্রতুল চক্রবর্তীর খুনের রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে এই তথ্যই উঠে এলো পুলিশের হাতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় প্রতুলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মাত্র চার দিন আগেই পানিহাটি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায় শ্যামল মজুমদারের বাড়ির দোতলায় ঘর ভাড়া নেন প্রতুল। নিজেকে তিনি গুরুগ্রামের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। বাড়ির মালিককে তিনি জানিয়েছিলেন, একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থায় উঁচু পদে কাজ করেন তিনি।
বাড়ির মালিক শ্যামল মজুমদার শুক্রবার বলেন, একাই থাকতেন ওই ব্যক্তি। হোম ডেলিভারিতে খাবার আসত। বৃহস্পতিবার খাবার দিতে এসেছিল ডেলিভারি বয়। বার বার ডাকার পর প্রতুলের কোনও উত্তর না পাওয়ায় তিনি শ্যামলবাবুকে ডাকেন। এরপর তারা দরজা ঠেলে ঢুকে দেখেন, প্রতুলের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। গলায় শাড়ির ফাঁস। তদন্তে নেমে প্রথমেই পুলিশ আটক করে শ্যামলকে। জানা যায় অমিতাভ রায় চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে শ্যামলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতুলের। কিন্তু প্রথমেই হোঁচট খেতে হয় পুলিশকে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, নিহত ব্যক্তির নাম এবং গুরুগ্রাম ছাড়া আমাদের কাছে কোনও তথ্যই ছিল না।
তিনি আরও জানান, মৃতের ঘরে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আমরা মহিলাদের একটি রুমাল এবং বাগুইআটি এলাকার একটি হোটেলের বিল খুঁজে পাই। মহিলার উপস্থিতি জানার পরই খড়দহ থানার আইসি মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলেই পুলিশ বাগুইআটির ওই হোটেলে যায়। সেখানে প্রতুল আধার কার্ডের ফোটোকপি দিয়েছিলেন। সেখান থেকে কাশীপুরের একটি ঠিকানা পান তদন্তকারীরা।
সেই ঠিকানায় গিয়ে পুলিশ জানতে পারেন অদিতি চক্রবর্তীর কথা। জানা যায় প্রতুলের স্ত্রী অদিতি। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পদস্থ কর্মী অদিতিকে এর পর জেরা শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা অনেকটাই নিশ্চিত ছিলেন যে, খুনের পেছনে কোনও মহিলার ভূমিকা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত রাতভর জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেন অদিতি।