হালকাশীতে পাওলি কাঁপেন
কলকাতা টাইমস :
দর্শকদের হৃদয়ে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি নামই যথেষ্ট- পাওলি দাম। তিনি কলকাতায় বসে, মুম্বাইয়ে বসে এ দেশেও আগুন ঝরান। সেটা শুধু ‘হেট স্টোরি’ কিংবা ‘ছত্রাক’ আছে বলেই নয়, তার ‘কালবেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘থানা থেকে আসছি’, ‘মনের মানুষ’, ‘এলার চার অধ্যায়’, ‘অংকুর অরোরা মার্ডার কেস’ও সমানভাবে মুগ্ধ করে। পাওলিও জানেন সে কথা। তাই অবলীলায় বলে দিতে পারেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ও এখানকার শিল্পীরা বড্ড ভালো। তারা আমাকে ভীষণভাবে টানে।’
শেকড়ের টান তো আছেই। এই বাংলার ফরিদপুরে তার আদিনিবাস। হয়তো সেখানে তার জন্ম নয়, হয়তো কখনও যাওয়া হয়নি সেখানে; কিন্তু বন্ধন তো আছে। ১৯৪৭-এ দেশভাগের আগে তার পূর্বপুরুষরা ফরিদপুর ছেড়ে আশ্রয় খুঁজেছিলেন কলকাতায়। কিন্তু শেকড় ছেড়ে বেশিদূরে যেতে পারে না মানুষ। টান পড়ে এক সময়। মায়া বহুগুণ হয়ে পোড়ায় কেবল। ভিটেবাড়িকে অস্বীকার করে, এমন স্পর্ধা কার! পাওলি তো এমন ননও। গভীর মায়ার তার কণ্ঠ চুঁইয়ে তাই বেরিয়ে আসে, ‘একবারের জন্য হলেও ফরিদপুর যেতে চাই। দেখতে চাই জায়গাটা কেমন!’
পাওলি প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছিলেন ‘মনের মানুষ’ উপলক্ষে। গৌতম ঘোষের এ ছবি ছিলো ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার। কিছু অংশের দৃশ্যধারণ বাংলাদেশেও হয়েছিলো। এরপর বিভিন্ন উপলক্ষ মাথায় নিয়ে আরও দু’একবার এসেছেন। কাজ মিটিয়ে চলেও গেছেন। এবারের আসাও কল্লোলের ‘সত্তা’র প্রধান নায়িকা তিনি। সঙ্গে আছেন শাকিব খান। প্রথম ধাপের শুটিংয়ের জন্য ক’দিন আগে এসেছেন। আজ এফডিসি, কাল গুলশান লেডিস পার্ক করেই কাটছে দিন। আশেপাশে ভক্তও জুটছে প্রচুর। সাংবাদিকরা সাক্ষাৎকার নিতে, ছবি তুলতে চাইছেন। কিন্তু স্পটে কল্লোলের রেড-এলার্ট, ‘নো ক্যামেরা।’ কি তার কারণ? সেটা নিয়ে আশেপাশে গুঞ্জন প্রচুর।
তবে পাওলির কানে প্রচুর প্রশংসা আসছে ‘পারাপার’ নিয়ে। ১৪ নভেম্বর মুক্তি পাওয়া সঞ্জয় নাগের এ ছবির কাহিনী মতি নন্দীর। পাওলি তো এতে আছেনই, আছেন এ দেশের আহমেদ রুবেলও। ‘সত্তা’র সঙ্গে ‘পারাপার’-এর এই আরেকটা মিল। একটায় রুবেলের নামের আগে লেখা হবে ‘ওপারের’, একই শব্দ আবার আরেকটি ছবির ক্ষেত্রে বসবে পাওলির নামের আগে। পাওলি বলছেন, ‘শেষ অবধি আমাদের দু’টো বাংলা ছবি হচ্ছে, এটাই আসল কথা।’
এই এপার-ওপারই পাওলির টিকে থাকার লড়াই। কলকাতা-মুম্বাই-বাংলাদেশ, যেখানেই ভালো কাজের প্রস্তাব পাচ্ছেন; ছুটে যাচ্ছেন। সে কারণেই তিনি পাওলি দাম, সেজন্যই তার ফিল্মোগ্রাফি এতো বৈচিত্রময়, এতো সমৃদ্ধ। তিনি বলেছেন, ‘একটা সময় আমি হিন্দি ছবি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যেটা হয়তো চট করে কেউ করতো না। তার ওপর মুম্বাইয়ে আমার কোনো গডফাদার নেই। তার মানে এই নয় যে আমি টালিউড ছেড়েছি। একগুচ্ছ বাংলা ছবিও করছি। এরপরেই আসবে মৈনাক ভৌমিকের ‘ফ্যামিলি অ্যালবাম’, দেবেশদার ‘নাটকের মতো’, প্রতীক বাব্বর ও ইন্দ্রনীলের সঙ্গে ‘অরণি তখন’।’
পাওলির দু’টি হিন্দি ছবিও আসছে সামনে ‘ইয়ারা সিলি সিলি’ আর ‘মায়ামৃদঙ্গ’। অবশ্য সব প্রসঙ্গ পাশে সরিয়ে রেখে কেবলই আলাপ হবে পাওলির, কেবলই ‘সত্তা’র।