পরকীয়া ফাঁস করে দিলো তোতা!
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। গোপন কথাটি থাকে না গোপনে। কোনো না কোনোভাবে তা ফাঁস হয়েই পড়ে। তবে কুয়েতে যেভাবে একটি পরকীয়ার গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে, সেটি অবাক করার মতোই।
এক্ষেত্রে এক কুয়েতির গোপন পরকীয়ার তথ্য তার স্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছে তারই পোষা তোতা পাখিটি। পারিবারিক তোতা পাখির জন্য ওই ব্যক্তিকে এখন বিচারের মুখোমুখি অথবা জেলেও যেতে হতে পারে। তোতা পাখিটি ঘটনাক্রমে গৃহকর্মীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলে। পরে মেয়েটির সঙ্গে তার প্রেমালাপ তার স্ত্রীর সামনে বারবার উচ্চারণ করতে থাকে।
স্বামী ও গৃহকর্মীর চুটিয়ে চালানো এ পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়ে বেচারি স্ত্রী ঘুণাক্ষরেও জানতেন না। তবে তার দাবি, কয়েকদিন ধরে সন্দেহ করে আসছিলেন তিনি। তোতার বারবার বলা বাক্যাংশ বিশ্লেষণ ও পরে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি বুঝে ফেলেন। সবশেষে একদিন ছুটির আগেই অফিস থেকে বাড়িতে ফিরে নিশ্চিত হন।
ক্ষুব্ধ স্ত্রীটি এরই মধ্যে কুয়েতের হাওয়ালি থানায় গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রমাণ হিসেবে সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন তোতা পাখিটিকে। পুলিশ কর্মকর্তাদেরও তিনি জানান, কিছুদিন আগে থেকেই তার সন্দেহ হচ্ছিল।
কুয়েতি দৈনিক Al Shahed জানিয়েছে, স্ত্রীর অবর্তমানে স্বামীটি গৃহকর্মীর সঙ্গে যেসব প্রেমালাপ করতেন, তোতা পাখিটি একদিন ওই ব্যক্তির স্ত্রী সামনে তার সবই বারংবার আওড়াতে থাকে। তোতার মুখে এসব শুনে স্ত্রীটি প্রথমে ভেবেছিলেন, তোতাটি বোধহয় টিভিতে শোনা কোনো নাটকের সংলাপ শুনে তা মুখস্থ আওড়াচ্ছে। কিন্তু তোতাটি একইভাবে বারংবার চটুল প্রেমালাপ আওড়ে যেতে থাকায় স্ত্রীটির মনে সন্দেহ দানা বাঁধে।
থানায় গিয়ে স্ত্রী বলেন, ঘটনাটি নিশ্চিত হতে যখন তিনি সময়ের আগেই অফিস থেকে বাড়িতে ফিরে এলেন, তার স্বামী তাকে দেখে বিস্মিত হলেন এবং টেনশনে পড়ে গেলেন। এরপর দুয়ে-দুয়ে চার মেলাতে আর অসুবিধা হয়নি তার। তিনি দিব্যি বুঝে যান যে, স্বামী তার অবর্তমানে গৃহকর্মীর সঙ্গে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছেন।
তবে প্রসিকিউশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনে করেন, বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের অভাবে এটি অপরাধ হিসাবে গণ্য নাও হতে পারে। যদি এটা প্রমাণিত না হয় যে, পাখিটি টিভি বা রেডিওতে কথোপকথন শুনে তা আওড়ায়নি, তাহলে মামলাটি আদালতেও উঠবে না।
পোষা তোতা পাখিটির এ অনাকাঙ্খিত আচরণে স্বামী প্রবরটি পড়ে গেছেন ভীষণ গাড্ডায়। একদিকে স্ত্রীর রোষানল, অন্যদিকে আইনের খাঁড়া—এই দুই শাঁখের করাতে স্বামীটির অবস্থা এখন রীতিমতো দফারফা।
কারণ, পরকীয়া ও ব্যাভিচার উপসাগরীয় দেশটিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামিকে কারাদণ্ড বা কঠোর পরিশ্রমের দণ্ড ভোগ করতে হয়।