September 29, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

চোখের সামনে ভৈরব নদীতে তলিয়ে গেলো আস্ত একটি যাত্রী বোঝাই বাস 

[kodex_post_like_buttons]

নিজস্ব প্রতিবেদন: মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বালিরঘাট ব্রিজ ভেঙে ভৈরব নদীতে তলিয়ে গেল যাত্রীবাহী বাস। আজ ভোরে ডোমকল থেকে বহরমপুর যাচ্ছিল বাসটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন বাসটির গতি অত্যন্ত বেশি ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা ব্রিজের রেলিংয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। তারপরে রেলিং ভেঙে পড়ে যায় নদীতে। তিন থেকে চারজন যাত্রী সাঁতরে পাড়ে ওঠেন। পরে আরও সাত যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাস ও বাকিযাত্রীদের খোঁজ মেলেনি। একটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বাস দুর্ঘটনা ঘিরে অগ্নিগর্ভের চেহারা নেয় এলাকা। ক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিসের গাড়িতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে গুলি চালাতে হয়। ঘটনার ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন ডুবুরি নামানো গেল না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

কুয়াশা মাখা ভোরে তখনও ব্যস্ততা শুরু হয়নি। মুর্শিদাবাদের ভৈরব নদীর ওপর বালিরঘাটের ধারে চায়ের দোকানে তখন গুটি কয়েক লোক। আমচকাই বিকট শব্দ। তখনও স্থানীয়রা বুঝতে পারেননি ঠিক কী ঘটেছে। চোখ সেতুর ধারে পড়তেই হাড় হিম সকলের। সঙ্গে বুক ফাটা আর্তনাদ। রেলিং ভেঙে যাত্রী বাস তখন ডুবে যাচ্ছে ভৈরবের গর্ভে। বাসের জানলা দিয়ে কিছু মানুষ লাফ দিয়ে বেরিয়ে এসেছেন। জলে পড়ে সাঁতরে বাঁচার চেষ্টা করছেন। সেই দৃশ্য এক স্থানীয় বাসিন্দার মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।
প্রথমে দেখে হকচকিয়ে যান স্থানীয়রা। মুহূর্তে জড়ো হয়ে যায় শয়ে শয়ে লোক। তাঁরাই নদীতে ঝাঁপ দিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। কিন্তু সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত না হওয়ায়, কূলকিনারা করতে পারছিলেন না কেউই। তাঁরাই ৭ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় পুলিসে। গ্রামবাসীরাই নৌকা নিয়ে নদীতে নামেন। মাঝিরাও চেষ্টা চালাতে থাকেন যাত্রীদের উদ্ধারে। বাসের অস্তিত্ব মিললেও, তার মধ্যে আটকে পড়া যাত্রীদের বার করতে আনতে বেগ পেতে হয় তাঁদের।

দুর্ঘটনার ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের ভৈরব নদীতে বাস দুর্ঘটনায় কেন ডুবুরি নামানো সম্ভব হল না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। এখনও পর্যন্ত এলাকায় পৌঁছয়নি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। পুলিস,প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই পুলিসের ২ টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে একাধিক গাড়িতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিস। চলে বেপরোয়া লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাসও ছোড়ে পুলিস।  তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিসকে লক্ষ্য করে চলতে থাকে ইটবৃষ্টি। মারমুখী জনতা ভয়ে একসময়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে দেখা যায় পুলিসকে।

ভৈরব নদীর দুপাশে এখন থিকথিক করছে মানুষ। প্রশাসনের ওপর কার্যত আস্থা হারিয়ে এখনও নদীতে নেমে উদ্ধারকাজ শুরু করেছেন গ্রামবাসীরাই। এখনও পর্যন্ত ৭ বাস যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে উদ্ধারকারী দল মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বাস দুর্ঘটনায় কজনের সলিল সমাধী হয়েছে , তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। ৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও, বাকি ৫২ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা এখনও সম্ভব হয়নি।

 

Related Posts

Leave a Reply