কীটনাশকেই আপনার ডায়াবেটিস, কাজেই সাবধান!
ভারতের দক্ষিণের গ্রামে-গঞ্জে মাদুরাই কামারাজ ইউনিভার্সিটি বিজ্ঞানীরা বিস্তর গবেষণা পরিচালিত করেন। তাতে দেখা যায়, ওপি (অর্গানোফসফেট) কীটনাশকের প্রভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই চাষাবাদে এই কীটনাশক ব্যবহারের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
গবেষণায় আরো বলা হয়, মেলাথিওন এবং ক্লোরফাইরিফস এর মতো অর্গানোফসফেট কীটনাশক ব্যাপক হারে কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়। আর এই কীটনাশকের প্রভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। শহরাঞ্চলেও মশা ও উইপোকা দমনে ম্যালাথিওনের ব্যবহার ব্যাপক।
বিজ্ঞানীরা জানান, এ অঞ্চলের কৃষিকাজে অর্গানোফসফেটের ব্যাপক ব্যবহার ঘটছে অনেক আগে থেকেই। যারা এ কীটনাশক প্রয়োগ করেন এবং এর সংম্পর্শে যারা থাকেন, তাদের সবারই ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টরেলের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার ফলাফর প্রকাশ করেছেন ‘জেনোম বায়োলজি’ জার্নালে। এক দফা পরীক্ষা করেছেন ইঁদুরের ওপর। তাদের দেহে এই কীটনাশক প্রয়োগ করে দেখা গেছে, ইঁদুরের মাইক্রো-ফ্লোরা ও অন্ত্রে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ডায়াবেটিস দেখা দেয়। ১০টি ইঁদুরকে অর্গানোফসফেট কীটনাশক মিশ্রিত পানি খাওয়ানো হয় ১৮০ দিন ধরে। এটা মানুষের ১২-১৫ বছর জীবনের সমান। দেখাক গেছে, ১৮০ দিন পর ইঁদুরগুলোর রক্তে ধীরে ধীরে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে থাকে।
ভারতকে ডায়াবেটিসের রাজধানী হিসাবে মনে করা হয়। বাংলাদেশেও প্রায় ১ কোটি মানুষ এ রোগে ভুগছেন। কাজেই গোটা পৃথিবীর যেখানেই এ ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হবে, তাদের ডায়াবেটিসের কথা মাথায় রেখে সাবধান হতে হবে। চীনেও ১০২ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
গুরুগ্রামের মেডিসিটি হসপিটালের এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটিস বিভাগের প্রধান ড. অ্যাম্ব্রিশ মিথাল জানান, এই গবেষণা পরিষ্কারভাবে কিছু প্রমাণ করছে না। তবে ডায়াবেটিসের গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। তবে অর্গানোফসফেট ব্যবহারে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।
এমনিতেও অর্গানোফসফেট কীটনাশক স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এগুলো বিষণ্নতা, মাথাব্যথা এবং কথা বলায় সমস্যা সৃষ্টি করে। আমেরিকার একদল বিশেষজ্ঞ জানান, শিশুদের বিকাশেও সমস্যা করে কীটনাশক।