যত দৌড়-ঝাঁপ তত বুদ্ধি, কমবে রোগ ভোগের আশঙ্কা!
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
আজ এমন একটা সিক্রেট আপনাদের সামনে আনবো, যা ৮-৮০ কে প্রদোষ মিত্র এবং শ্রীমান ব্যোমকেশ বক্সির মতো বুদ্ধিমান করে তুলবে। আর আজকের দুনিয়ায় মগজাস্ত্র না চললে যে জীবন বেহাল, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না! সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরকে সচল রাখলে, অর্থাৎ নিয়ম করে একটু জগিং বা শরীরচর্চা করা যায়, তাহলে আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে থাকা গ্রে ম্যাটারের পরিমাণ এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে বুদ্ধির ধার ধারালো থেকে ধারালোতর হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে কোনও কিছু শেখার ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পাপায়, তেমনি মোটর স্কিলেরও ব্যাপক উন্নতি ঘটে।
প্রসঙ্গত, নিউরোইমেজ নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুসারে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ব্রেনের স্ট্রাকচারে পরিবর্তন অসতে শুরু করে। সেই কারণেই এই সুফল পাওয়া যায়। তবে ভাববেন শরীরচর্চা বা নিয়মনিত জগিং করলে শুধু মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে মেলে একাধিক শারিরিক উপকারও। যেমন…
১. হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অল্প-বিস্তর শরীরচর্চা করলে হার্টের পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই না, উল্টে হার্ট এত মাত্রায় সুস্থ হয়ে ওঠে যে হার্ট অ্যাটাক সহ নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। প্রসঙ্গত, শরীরকে সচল রাখলে আরেকটি উপকার পাওয়া যায়। কী সেই উপকার? এমনটা করলে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহে উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিরা-উপশিরা সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
২. রক্তচাপ বাড়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না: গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে কম বয়সিদের মধ্যে যে হারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বেড়েছে, তাতে নিয়মিত শরীরচর্চা করার প্রয়োজন বেড়েছে আরেও বেশি করে। কারণ নিয়মিত এক্সারসাইজ করার অভ্যাস করলে সারা শরীরে রক্তের প্রভাব বেড়ে যায়, সেই সঙ্গে শিরা-উপশিরার দেওয়ালে রক্তের চাপও কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে চলে আসে।
৩. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে: এ যুবসমাজ তোমরা কি ৪০-এর কোটা পেরতে না পেরতেই জীবনের সব রং হারিয়ে ফেলতে চান? উত্তরটা না হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাহলে তো বন্ধুরা প্রতিদিন একটু শরীরচর্চা করতেই হবে! কারণ একাধিক কেস স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ডায়াবেটিসের রোগের সঙ্গে লড়াইয়ে জিততে সাহায্য করতে পারে একমাত্র শরীরচর্চা। তাই নিয়মিত একটু এক্সারসাইজ মাস্ট! আর যদি এমনটা না করেন, তাহেল আমাদের যা জীবনযাত্রা, তাতে রক্তে সুগারের মাত্র বেড়ে যাওয়াটা আজকের দিনে বড়ই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যেমনটা আপনারা সবাই জানেন যে ডায়াবেটিস হল সাইলেন্ট কিলার, যা আমাদের আগচরে শরীরের এত মাত্রায় ক্ষতি করে যে জীবনের পরিধি কমতে শুরু করে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে: ওবেসিটি মানে কী জানেন? কী আবার দেহের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া। অর্ধেক ঠিক বলেছেন! কারণ ওবেসিটি মানে শুধুই ওজন বৃদ্ধি নয়, আরও অনেক কিছু! আসলে শরীরে যখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেদ জমতে শুরু করে, তখন যে শুধু কোমরের মাপই বদলে যায়, এমন নয়, সেই সঙ্গে শরীরে একে একে ঘর বাঁধতে শুরু করে একের পর এক মারণ রোগ। তাই সুস্থভাবে জীবন কাটাতে মধ্যে প্রদেশকে বাড়তে দেওয়া চলবে না, আর এই কাজটি যদি সফলভাবে করতে চান, তাহলে শরীরচর্চার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে।
৫. পিঠের ব্যথা কমে যায়: সারা দিন ধরে কম্পিউটার স্ক্রিনের সঙ্গে লেগে থাকতে থাকতে আমাদের পিঠের হাল বেজায় বেহাল হয়ে যায়। আসলে একই পসচারে বসে থাকতে থাকতে পিঠে যন্ত্রণা এবং কোমড়ে ব্যথার মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে কষ্ট কমাতে পারে একমাত্র ফিজিকাল অ্যাকটিভিটি। কারণ শরীর যত সচল থাকবে, তত পেশীর ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়বে, সেই সঙ্গে বাড়বে মাসলদের শক্তিও। ফলে শুধু ব্যাক পেন নয়, যে কোনও ধরনের পেশী সংক্রান্ত কষ্ট কমতে সময় লাগবে না।
৬. স্ট্রেস কমে: আজকের দিনে ডায়াবেটিসকে যেমন সাইলেন্ট কিলারের তকমা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা, তেমনি স্ট্রেসকেও তার দোসর বলে বিবেচিত করেছেন বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ দুটি রোগই চুপিসারে আমাদের শেষ করে দেয়। তাই স্ট্রেস বা মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা জরুরি। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, যেহারে কাজের চাপ বাড়ছে তাতে স্ট্রেস তো রোজের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। তাই একে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা কি আদৌ সম্ভব? উত্তর হল একেবারেই সম্ভব! কিভাবে? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে মস্তিষ্কের অন্দরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস লেভেল কমতে সময় লাগে না।