‘উদাস চাহনি’ তাতেই দাম ৮৭৬ কোটি!
কলকাতা টাইমস :
জানালার পাশে বসে আছে একটি মেয়ে। চোখেমুখে উদাস চাহনি। কিউবিজমের শাস্ত্র মেনে সাদা ক্যানভাসে এমনই অবয়ব ফুটিয়ে তুলেছিলেন শিল্পী পাবলো পিকাসো। ছবির নন্দন যতটা না জটিল, তার চেয়েও গভীর পটে আঁকা মেয়েটির রহস্য।
মেরি টেরেসা ওয়ালটার তখন বছর সতেরোর কিশোরী। সেই সময় তাঁরই প্রেমে পড়েছিলেন সাতচল্লিশের পিকাসো। মেরিকে কোনো দিন বিয়ে করেননি। দেননি সামাজিক স্বীকৃতিও। তবু রক্ষণশীল সমাজের বাধাবিপত্তি এড়িয়ে পাবলোকেই আজীবন ভালোবেসেছিলেন তিনি। সহধর্মিণীর মর্যাদা না দিলেও শিল্পী পিকাসোর রংতুলির জগতের অনেকখানি জুড়ে ছিলেন মেরি ওয়ালটার। ক্যানভাসে চলেছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অবশেষে প্রেমিকার পছন্দের ভঙ্গিমাটুকু বেছে এঁকে ফেলেছেন ক্লাসিক ছবি। নাম— ‘উওম্যান সিটিং নিয়ার আ উইন্ডো’।
১৯৩২ সালে তৈরি এই ছবিটি এতদিন অবিক্রীত ছিল। অবশেষে একে নিলামে তোলে নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত নিলাম সংস্থা ‘ক্রিস্টিজ’। বৃহস্পতিবার তাদের সব অনুমানকে ভুল প্রমাণ করে এক শ তিন দশমিক চার মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে ছবিটি।
এই বোহেমিয়ান চিত্রকরের আঁকা কোনো ছবি কখনো নিলামদারদের ফাঁকা হাতে ফেরায়নি। এ নিয়ে পরপর পাঁচবার পিকাসোর কোনো আঁকা নিলামে ৭০০ কোটির গণ্ডি পেরোল। এমন সাফল্য দুনিয়ার আর কোনো তাবড় শিল্পীর নেই।
এবারও দাম চড়বে, আশা করেছিল ক্রিস্টিজ। কিন্তু কভিডের জেরে চারদিকে মন্দার ধাক্কা। তাই অপ্রত্যাশিত ‘মিরাকেল’ কিছু হবে না বুঝে সম্ভাব্য দাম ৫৫ মিলিয়ন ডলার ধরেছিল। কিন্তু দর হাঁকা শুরু হতেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। মাত্র ১৯ মিনিটের ঝোড়ো নিলাম। তাতেই প্রায় ৮৭৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় (১০ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার) বিক্রি হয় এই ছবি।