সমুদ্রের ধারে হাঁটতে-হাঁটতে চলে যাওয়া যায় ফরাসী জমানার ফ্ল্যাশব্যাকে
শ্রীঅরবিন্দের আশ্রম–কে ঘিরেই আজকের পন্ডিচেরির পরিচিতি। অতীতে এই অঞ্চলের নাম ছিল ভেদাপুরী। পরবর্তীকালে ফরাসীদের অধিকারে আসার পর ১৭৩৯ সালে ফরাসি স্থাপত্যবিদ ফ্র্যান্সিস মার্টিনের পরিকল্পনায় তৈরি হয় পন্ডিচেরি শহর। বর্তমানে আবারও নাম বদলে পুডুচেরী। মাহে, বারিয়াল এবং ইয়ানামা নিয়ে গড়ে উঠেছে পন্ডিচেরি। শহরের আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো। অধিকাংশ বাড়িই সাদা বা ছাইরঙা। এরমধ্যে অনেকগুলিই আশ্রমের। সমুদ্রের পাড় বাঁধানো। গা দিয়ে সুন্দর পরিচ্ছন্ন রাস্তা। রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া। সমুদ্রের পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে চলে যাওয়া যায় ফরাসী জমানার ফ্ল্যাশব্যাকে। বিশাল গান্ধিজির মূর্তি পেরিয়ে গভর্নর দ্যুপ্লের মূর্তি। একটু এগিয়ে ২৯ মিটার উঁচু লাইটহাউস। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের ওয়ার মেমোরিয়াল।
বাঙালি বীর বিপ্লবী শ্রীঅরবিন্দ আলিপুর বোমা-মামলায় অব্যাহতি পেয়ে চলে আসেন পন্ডিচেরি। প্রতিষ্ঠা করেন আধ্যাত্মবাদ এবং যোগশিক্ষার আশ্রম। ১৯৫০ সালে শ্রীঅরবিন্দ অমরলোকে যাত্রা করেন। তাঁকে সমাহিত করা হয় তাঁরই বাসভবনে। আশ্রমের ভার তুলে নেন মাদাম মীরা অর্থাৎ শ্রীমা। ১৯৭৩ সালে শ্রীমাও মারা যান। তাঁকে সমাহিত করা হয় শ্রীঅরবিন্দর সমাধির ওপরে। আশ্রম ও সমাধিভূমির পরিবেশ শান্ত-স্নিগ্ধ।
পন্ডিচেরির ১৩কিমি দূরে ১২৬ দেশের সহযোগিতায় ঋষি অরবিন্দের মানবমৈত্রী ও ঐক্যের আদর্শে গড়ে উঠেছে অরোভিলা। যার কেন্দ্রে রয়েছে পৃথিবীর ন্যায় আকৃতিবিশিষ্ট মাতৃমন্দির।
অন্যান্য দ্রষ্টব্যের মধ্যে রয়েছে মানাকুলা বিনায়ক মন্দির, ভারাদারাজ মন্দির, ভেদাপুরিশওয়ারা মন্দির, তিরুকামেশ্বর মন্দির, বোটানিক্যাল গার্ডেন, মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম, অ্যাংলো ফ্রেঞ্চ টেক্সটাইল শোরুম প্রভৃতি। সরকারি পর্যটন দপ্তরের নানান ট্যুর প্ল্যানে পন্ডিচেরি বেড়িয়ে নেওয়া যায়।
যাওয়া– মামল্লাপুরম থেকে পন্ডিচেরি যেতে হাইওয়ের উপর অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ১০ মিনিট অন্তর বাস ছাড়ছে। দূরত্ব ১০৫ কিলোমিটার। সময় লাগবে দুঘন্টা। চেন্নাই থেকেও বাস আসছে পন্ডিচেরিতে।
থাকা-রাজ্য পর্যটনের ট্যুরিস্ট হোম ও গেস্ট হাউস আছে। এছাড়া শহর জুড়ে অজস্র গেস্ট হাউস ও হোটেল রয়েছে। পন্ডিচেরির এস টি ডি কোডঃ ০৪১৩।