November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

নারকীয় বন্দিদশা, খিদের জ্বালায় সাপ, ব্যাঙ যাওয়া মানুষগুলিই জৈব সার এ দেশে 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

বিশ্বজুড়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যেই এমন দেশ আছে যে এখনও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। চলছে সামরিক মহড়াও। আর সমানতালে চলছে রাজনৈতিক বন্দিদের উপর অমানবিক অত্যাচার। দেশটার নাম উত্তর কোরিয়া।

মানবাধিকার! সে সব নাকি এ দেশের মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো। শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না, সরকারবিরোধী মতামতও পোষণ করা যাবে না।

সূত্র বলছে, পিয়ংইয়ং থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে কায়েচং কনসেনট্রেশন ক্যাম্প। এই ক্যাম্পেই আটকে রাখা হয়েছে কয়েক হাজার বন্দিকে। যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীর পারফরম্যান্স ভাল নয়, দেশের যে সমস্ত মানুষ প্রশাসনের বিপক্ষে কথা বলেন তাদের এবং তাদের সন্তানদেরও নাকি এই ক্যাম্পে ঠাঁই হয়। কেউ সরকারবিরোধী কোনও কাজ করলেও তাকে এই ক্যাম্পে রাখা হয়। এরাই রাজনৈতিক বন্দি। আর এই সমস্ত বন্দিদের উপর আমানবিক নির্যাতন চালানো হয় এখানে।

সম্প্রতি এই ক্যাম্প থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে আসা এক বন্দির কাছ থেকে সেই অভিজ্ঞতার কথা জেনে শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাগ্যক্রমে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা ওই বন্দি উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার কমিশনকে জানিয়েছিলেন, ওই ক্যাম্পে অন্তত ছয় হাজার বন্দি রয়েছে। তাদের উপর দিনভর চরম অত্যাচার চালানো হয়। এমনকি মৃত্যুর পরও তাদের নিস্তার নেই। সেই সব মৃতদেহকে নাকি জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই সব মৃতদেহের উপর সব্জি ফলিয়ে সেই সমস্ত শাক-সব্জি নাকি পরিবারের সঙ্গে আয়েস করে খান নিরাপত্তারক্ষীরা।

সেই বন্দির দাবি অনুযায়ী, ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত টানা কাজ করে যেতে হয় বন্দিদের। কয়লা খনি, বস্ত্র কারখানা, রাবার কারখানা, জুতা কারখানা, সিমেন্ট কারখানা বা চাষাবাদে লাগানো হয় এই সমস্ত বন্দিদের। এমনকি বাচ্চাদেরও একইভাবে কাজে লাগানো হয়। কাজে সামান্য কিছু ভুলচুক হলেই বন্দিদের মারধর শুরু করে ক্যাম্পের নিরাপত্তারক্ষীরা।

দিনভর এত খাটুনির পরও ভাল কোনও খাবার জোটে না। বেশির ভাগ দিনই বাঁধাকপি আর নুন ছড়ানো ভুট্টা খেয়ে জীবন চালাতে হয় তাদের। অপুষ্টি আটকাতে প্রোটিনের প্রয়োজন। বন্দিরা তাই কাজ করার সময় ব্যাঙ, ইঁদুর, সাপ এমন সব প্রাণী দেখতে পেলেই খেতে চান। কিন্তু মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ানো এই সব প্রাণীদেরও অত সহজে খেতে পারেন না বন্দিরা। তার জন্যও প্রথমে নিরাপত্তারক্ষীদের অনুমতি প্রয়োজন। নিরাপত্তারক্ষীরা অনুমতি দিলে তবেই সেগুলো তাঁরা খেতে পারেন। রান্নার কোনও ব্যবস্থা নেই যদিও। ব্যাঙ, ইঁদুর, সাপ মেরে নাকি তাদের কাঁচা চিবিয়ে খেতে হয় বন্দিদের।

নানা রোগ এবং অপুষ্টির শিকার হয়ে মৃত্যু হয় বন্দিদের। আর মৃত্যুর পর সমস্ত মৃতদেহগুলোকে ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ি জমিতে ফেলে দিয়ে আসা হয়। পাহাড়ি অনুর্বর জমিতে জৈব সারের কাজ করে এই মৃতদেহগুলো। সেই জমিতেই সব্জি ফলিয়ে ক্যাম্পের নিরাপত্তারক্ষীরা খেয়ে থাকেন বলে দাবি করেছেন ওই বন্দি।

Related Posts

Leave a Reply