আর নয় ছায়া, এবার এরজন্য সশরীরে হাজির হতেই হবে রেলের কর্মীদের
কলকাতা টাইমস :
সম্প্রতি বাহানাগা বাজারের ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে তৈরী হল রেল। সুরক্ষার ক্ষেত্রে যাবতীয় ফাঁকফোকর রুখতে বিশেষ তৎপরতা শুরু হয়েছে। এবার ‘ভূতুড়ে কর্মী’ তাড়াতে রেলের সব জায়গায় ‘আধার এনাবেল বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম’ চালুর নির্দেশ দিল রেল বোর্ড। নির্দেশে একেবারে সরাসরি ‘ভূতুড়ে’ কর্মী ও সই ‘নকল’ বিষয় রুখতেই এই সিস্টেম চালুর নির্দেশ বলে জানানো হয়েছে। সংঘবদ্ধ ক্ষেত্র যেমন ওয়ার্কশপ, বিভিন্ন দফতর ছাড়াও স্টেশন, বিভিন্ন কেন্দ্র, সব জায়াগায় এই বায়োমেট্রিক অ্যাটেনড্যান্স চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এমনিতেই রেলে শূন্যপদের সংখ্যা ৩,১১,৪৩৮। যার মধ্যে পূর্ব রেলে ৩০,৩২৭টি ও দক্ষিণ পূর্ব রেলে ১৭,৬৬১টি। এর মধ্যেই বাড়তি সংযোজন অনুপস্থিতির হার।
রেলের তরফে একাধিক তদন্তে দেখা গিয়েছে বহু জায়গায় কর্মীদের অনুপস্থিতিতে সুরক্ষার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অনেক জায়গায়, কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের নির্ধারিত কোনওরকম সময় জ্ঞান নেই। ‘আসি যাই, মাইনে পাই’ এমন মানসিকতা কাজ করছে বহু জায়গাতেই। এই অব্যবস্থা রুখতে একমাত্র ভরসা এই বায়োমেট্রিক সিস্টেম। এবং তা আধার যুক্ত। কোনওরকম ‘ভূতের’ অবির্ভাব যাতে না হতে পারে তা দেখতেই এই সিস্টেম বলে মনে করেছেন পূর্ব রেলের পার্সোনেল বিভাগের আধিকারিকরা। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষার কাজে নিযুক্ত গ্যাংম্যানদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যহার করেন বিভাগীয় আধিকারিকরা। পূর্ব রেলে এমন ৫০০ কর্মী রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, যঁাদের দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করানো হয় বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে একাধিক কর্মী সংগঠনের তরফে। ফলে লাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য ২০ জনের গ্যাংয়ের জায়গায় ১০ বা তারও কম সংখ্যক কর্মীর গ্যাং দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ফলে কাজের গতি হ্রাসের পাশাপাশি গাফিলতি থেকে যায় বলে অভিযোগ। দক্ষিণ পূর্ব রেলের ডিজেল শেড ও ওয়ার্কশপে এমন অনেক কর্মী রয়েছেন, যাঁরা অন্য কাজের সঙ্গে জড়িত। কাজের যথাসময়ের অনেক আগেই বেরিয়ে যান ‘নিজস্ব’ কাজ দেখতে। বহু স্টেশনে বুকিং ক্লার্করা অনুপস্থিতি থাকার ফলে হাজিরা খাতায় ‘সিএল’ লিখে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও ওভাররাইট করে ‘স্বাক্ষর’ করে হাজিরাও দেখিয়ে দেন কর্মীরা। ভিজিল্যান্স বিভাগ সূত্রে এই কারচুপির খবরও জানা গিয়েছে।