মায়ের কর্তব্য পালন করতে বাড়িতে রাজীবের খুনি
কলকাতা টাইমস :
সাময়িক মুক্তি পেলেন রাজীব গান্ধী হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণ। মাতৃত্বের অন্যতম দায়িত্ব মেয়ের বিয়েতে উপস্থিত থাকার জন্য এক মাসের জন্য মুক্তি পেয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর ভেলোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি পেয়ে নিজের বাড়িতে গেছেন নলিনী।
নলিনীর মেয়ে মেগারা ব্রিটেনে ডাক্তারি পড়েছেন, আগামী সপ্তাহেই দেশে ফিরে আসবেন তিনি। তবে মেয়ের বিয়ের জন্যে কিছুদিনের জন্য জেল থেকে মুক্তি পেলেও তার ওপর রয়েছে কয়েকটি কড়া নিষেধাজ্ঞা। ভেলোরের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না নলিনী এবং এই সাময়িক মুক্তির সময় কোনও রাজনৈতিক নেতা বা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা বলতে পারবেন না তিনি।
গত মাসেই নলিনীকে একমাসের ছুটি মঞ্জুর করে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। আদালতে শুনানি চলাকালীন তিনি সাময়িক সময়ের জন্য ছুটি চেয়ে আবেদন জানান। গত ২৮ বছরে এই প্রথমবার জেলের বাইরের আলো বাতাস দেখার সুযোগ মিলছে রাজীব গান্ধী হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণের।
এর আগে গত বছর তার বাবার শেষকৃত্যে যোগদানের জন্য মাত্র একদিন প্যারোলে মুক্তি মেলে নলিনী শ্রীহরণের। তার স্বামী মুরুগানও ওই একই জেলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন। প্রাথমিকভাবে রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে নলিনীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে পরে রাজীব গান্ধীর স্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধির হস্তক্ষেপে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা বদলে যাবজ্জীবন করা হয় এবং জেলে থাকা অবস্থাতেই তার এই মেয়ের জন্ম হয়।
পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট রাজীব গান্ধী হত্যায় দোষী বাকি ৬ জনেরও মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন সাজার বিধান দেয়। ৭ জন সাজাপ্রাপ্তই গত ২৮ বছর ধরে জেলে আছেন।
তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে ওই সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির ব্যাপারে তদ্বির করা হলেও এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি ওই রাজ্যের রাজ্যপাল। এর আগে ৬ মাসের মুক্তির আবেদন জানান নলিনী শ্রীহরণ। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, রাজীব গান্ধী হত্যায় তাকে ভুলভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে।
আদালতের কাছে সাময়িক মুক্তি চেয়ে তিনি এক আবেগপূর্ণ বক্তব্য দেন। সেখানে বলা হয়, আমি আমার মেয়ের প্রতি কোনও দায়িত্বই পালন করতে পারছি না। এমনকি মাতৃত্বের দায়িত্বটুকুও পালন করতে পারিনি। এরপরেই তাকে একমাসের জন্য মুক্তিদানের সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। তবে বিচারকের মধ্যে অন্যতম এমএম সুন্দরেশ তাকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়ার আগে তাকে ব্যাখ্যা করে বলেন যে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাকে একমাসের বেশি মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়।