ইঁদুর, মাছ আর মাছিতেই ভরসা মহাকাশে !
লাইকা’ নামের কুকুরটি আজ থেকে ৬০ বছর আগে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল। ওই কুকুরটি ছিল পৃথিবীর প্রথম জীবিত প্রাণী যে কিনা কক্ষপথে ঘুরে আসে। তখন অবশ্য মাত্র মহাকাশে যান যাচ্ছে, নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে মানুষ পাঠানো হয়নি। কিন্তু বিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে। এর পর মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে যথেষ্ট। তবে এর জন্যে যে প্রাণীদের পাঠানো বন্ধ হয়েছে তা নয়। এই আধুনিক যুগেও মহাকাশের যাত্রী হয় ইঁদুর, মাছ কিংবা মাছি!
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন প্রগ্রামের প্রধান বিজ্ঞানী জুলি রবিনসন জানিয়েছেন কী কারণে এখনও কক্ষপথে প্রাণীদের পাঠানো হয়।
জুলি জানান, যখন এদের মহাশূন্যে পাঠানো হতো, তখন মানুষের মনে ভয় ছিল যে সেখানে গেলে অক্সিজেন বা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকার কারণে মৃত্যু ঘটবে। তখন বোঝা যায়নি যে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ছাড়া মানুষ সেখানে কীভাবে বাঁচবে?
কিন্তু গবেষণায় অনেক তথ্য মিলেছে। এখন বড় আকারের প্রাণীর পরিবর্তে ছোট আকারের অনেকগুলো প্রাণী পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। মূলত বিস্তৃত পরিসরে বায়োমেডিক্যাল গবেষণার কাজটি সম্পন্ন করার জন্যেই এ কাজটি করা হয়।
এই পৃথিবীতে কোনো কিছু নিয়ে গবেষণার সময় সাধারণত ইঁদুর প্রজাতির বড় আকারের রোডেন্ট, মাছি, মাছ এবং অন্যান্য ছোট ছোট প্রাণী পাঠানো হয়। এমনকি শামুক নিয়েও চলছে গবেষণা। জুলি বলেন, মহাকাশে যেকোনো গবেষণার কাজে মহাকাশচারীদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। কাজেই প্রাণীগুলোর বিষয়েও একই বিষয় প্রযোজ্য। তবে পৃথিবীর ছাড়ার বিষয়টি মানুষ এবং কুকুর বা এ ধরনের প্রাণীদের জন্যে মানসিক চাপের কারণ হয়। তাই ইঁদুর বা মাছ বা মাছিতে কোনো সমস্যা হয় না। তা ছাড়া এরা মহাকাশে গিয়ে বেশ ভালোই মানিয়ে নেয়।
পৃথিবীতে ইঁদুর দিয়ে গবেষণায় যে কাজ হয়, একই কাজ হয় মহাকাশে। সাধারণত স্বাস্থ্যগত গবেষণা এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে গবেষণায় ইঁদুর সবচেয়ে কাজের। পৃথিবীতে মানুষ যেভাবে বিচরণ করে, এই ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো মহাকাশে তেমনি স্বাবলীলভাবে চলাফেরা করতে পারে। মাছ বা মাছিও যথেষ্ট ভালো ফলাফল দিচ্ছে। কাজেই এদের ব্যবহার করেই আগামীতে আরো বড় বড় তথ্য হাসিলে চেষ্টা চলছে বলে জানান জুলি।