বারে বারে জল ফুটিয়ে এই মারাত্মক রোগ ডেকে আনছেন !
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং আর্সেনিকের হাত থেকে বাঁচাতে জল ফুটিয়ে খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। কিন্তু তাও জলের কারণে রোগের প্রকোপ বাড়ছে। কেন জানেন?
উত্তরটা শুনে আপনি হয়তো আবাক হয়ে যেতে পারেন! জলে ফুটিয়ে খাওয়া ভাল। তাতে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু বারে বারে যদি জল ফোটানো হয় তাহলে তাতে আর্সেনিক, নাইট্রেটস এবং ফ্লরোইডের মতো ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকে, যা ধীরে ধীরে শরীরকে ভিতর থেকে ঝাঁঝরা করে দেয়। ফলে আয়ু তো কমেই, সেই সঙ্গে বেঁচে থাকাটাই দুর্বিসহ হয়ে ওঠে।
জল গরম করার সময় তার চরিত্র বদলে থেতে থাকে। সেই সঙ্গে তাতে দ্রবিভূত হাজারো ক্ষতিকর উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। সেই কারণেই তো শরীরকে সুস্থ রাখতে বাচ্চা এবং বয়স্কদের ফোটানো জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু যখনই একবার ফিটিয়ে নেওয়া জল পুনরায় আঁচে চাপানো হয়, তখনই বিপদটা হয়ে থাকে। দ্বিতীয়বার জল গরম করার সময় তাতে নানা কারণে ক্ষতিকর কেমিকেলের মাত্রা বাড়তে থাকে। আর এই শরীরে এইসব কেমিকেলের মাত্রা বেড়ে গেলে একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যেতে শুরু করে। ফলে যা হওয়ার তাই হয়!
প্রসঙ্গত, জলে অনেক খনিজও দ্রবিভূত থাকে, যা আমাদের শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু বারে বারে যদি জল ফোটান হয়, তাহলে এক সময়ে গিয়ে উপকারি উপাদানেরাই ক্ষতিকর কম্পাউন্ডে বদলে গিয়ে শরীরের ক্ষতি করে থাকে।
যেমন, ক্যালসিয়ামের কথাই ধরুন না। জলকে একাধিকবার ফোটালে ক্যালসিয়ামের চরিত্র বদলে যায়, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র গল ব্লাডার এবং কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এখানেই শেষ নয়, বহু বার ফোটানো জলের কারণে শরীরের আরও বেশ কিছু ক্ষতি হয়ে থাকে। যেমন…
১. শরীরে আর্সেনিকের মাত্রা বৃদ্ধি পায়: ধরা যাক আপনি যে জলটা খাচ্ছেন তাতে যে পরিমাণ আর্সেনিক আছে, তা স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যেই আছে। ফলে এই পরিমাণ আর্সেনিক শরীরে প্রবেশ করলে কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু সেই জলটা যদি বারে বারে গরম করা হয়, তাহলে আর্সেনিকের পরিমাণ আর স্বাভাবিক থাকে না, বাড়তে শুরু করে। আর অধিক মাত্রায় এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করলে আর্সেনিক টক্সিসিটি, পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, পেটের সমস্যা, স্কিন ডিজজ, রেনাল ফলিওর, হার্টের অসুখ এবং ক্যান্সারের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
২. নাইট্রেটস: জল, মাটি এবং বাতাসে ভেসে বেরাচ্ছে এই উপাদানটি। কিন্তু তবু আমাদের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। কেন জানেন? কারণ এই নাইট্রেটস যতক্ষণ না উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসছে, ততক্ষণ কোনও ক্ষতিসাধনই করে না। তাই তো জলকে বারে বারে ফোটাতে মানা করেন চিকিৎসকরা। কারণ এমনটা করলে জলে উপস্থিত নাইট্রেটস তার চরিত্র বদলে নাইট্রোএমিনিস নামে একটি উপাদানে রূপান্তরিত হয়, যা কার্সিনোজেনিক। অর্থাৎ এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়াও লিউকেমিয়া এবং নন-হচকিন লিম্ফোমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
৩. ফ্লরোইড: একাধিক গবেষণার পর একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে জলে উপস্থিত এই উপাদানটি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। প্রায় ২২ বছর ধরে চলা এক গবেষণার পর জানা গেছে জলকে বারে বারে ফুটিয়ে পান করলে তাতে দ্রবিভূত ফ্লরোইড ব্রেনের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমিয়ে দেয়। ফলে বুদ্ধি, মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি সবই কমতে শুরু করে। এবার বুঝলেন তো ফোটান জল ভাল, কিন্তু বেশি ফোটালে জল খাওয়া মানে মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানানো। তাই সাবধান!