সুখ, সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সাফল্য পেতে নিয়মিত পাঠ করুন এই দেবীর মন্ত্র!
কলকাতা টাইমস :
আজকের দিনে সবাই আমরা স্ট্রেসের শিকার। কারও মনেই শান্তি নেই। সবাই যেন দুঃখের পাহাড় বয়ে বেরাচ্ছেন। কিন্তু প্রস্ন হল এমন পরিস্থিতির পিছনে দায়ি কে? শাস্ত্র মতে লোভের থেকে মুক্তি মিললে তবেই প্রকৃত সুখের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু লোভ-লালসার খপ্পর থেকে বাঁচার উপায় সিংহভাগেরই যে জানা নেই। তাই তো এই প্রবন্ধে এমন কিছু মন্ত্রের সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা নিয়মিত পাঠ করলে হাজারো কষ্টের মাঝেও সুখের মশাল জ্বলতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য তো আসেই, তার পাশাপাশি সুখ,শান্তি এবং সমৃদ্ধিও রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে।
প্রসঙ্গত, হিন্দু শাস্ত্রের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন “কালী” কথার অর্থ হল কাল, অর্থাৎ সময়। যে সময়ের গ্রাসে একদিন সবাইকেই তলিয়ে যেতে হবে। শুধু তাই নয়, যা সৃষ্টি হয়েছে তা একদিন ধ্বংস হবেই কালের নিয়মে। তাই তো মা কালীর নিয়মিত পুজো করলে আমাদের মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা খারাপ শক্তির বিনাশ ঘটতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে মা আমাদের চরিত্রের সব থেকে অন্ধকার দিক, যা “ইগো” নামে পরিচিত, তাকেও ধ্বংস করে। ফলে ভাল মানুষ হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
এখন প্রশ্ন হল কী কী মন্ত্র জপ করাতে হবে মা কালির পুজো করার সময় এবং এমনটা করলে কেমন ফল মিলবে?
১. কালী বেজ মন্ত্র:
শাস্ত্র মতে নিয়মিত এই শক্তিশালী মন্ত্রটি জপ করার মধ্যে দিয়ে যদি মায়ের আরাধনা করা যায়, তাহলে খারাপ শক্তির প্রকোপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কালো যাদুর প্রভাব থেকেও দূরে থাকা সম্ভব হয়। প্রসঙ্গত, আজকের দিনে মানুষ যত শিক্ষিত হচ্ছে, তত মনের অন্দরে অন্যের প্রতি হিংসা এবং ঈর্ষা বাড়ছে। আর এমন অন্ধকার মন কারও ভাল চায় কীভাবে বলুন! তাই তো আশপাশে থাকা মানুষদের খারাপ দৃষ্টির থেকে যদি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত কালী বেজ মন্ত্র পাঠ করতে ভুলবেন না যেন! মন্ত্রটি হল-“ওম ক্রিম কালীকায়ে নমহঃ”।
২. মহা কালী মন্ত্র:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত এই মন্ত্রটি পাঠ করলে মনের জোড় বাড়তে শুরু করে। ফলে কঠিন পরিস্থিতিতে ভেঙে পরার আশঙ্কা যায় কমে। প্রসঙ্গত, একটু খেয়াল করে দেখুন কম-বেশি আমরা সবাই কর্মক্ষেত্রে “ডেড লাইন” এর শিকার। অর্থাৎ কম সময়ে হাজারো চাপের মধ্যে কাজ করতে হয় আমাদের। এমন পরিস্থিতিতে মনকে ঠান্ডা রাখতে এবং চাপকে হারিয়ে ফিনিশিং লাইনে পৌঁছাতে মনকে শক্ত রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে মহা কালি মন্ত্র। তাই ডেড লাইনের চক্করে “ডেড” হতে যদি না চান, তাহলে পাঠ করা শুরু করুন, “ওম শ্রী মহা কালীকায়ে নমহঃ”, এই মন্ত্রটি। দেখবেন উপকার মিলবে একেবারে হাতেনাতে।
৩. কালীকা মন্ত্র:
আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়ে কর্মক্ষেত্রে একের পর এক শৃঙ্গজয় যদি করতে চান, তাহলে প্রতিদিন সকালে স্নান সরে মা কালীর ছবি বা মূর্তির সামনে বসে এই মন্ত্রটি পাঠ করতে হবে। এমনটা করলে গৃহস্থের অন্দরে শুভ শক্তির প্রভাব বাড়তে শুরু করবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গুডলাক রোজের সঙ্গী হবে। আর এমনটা হলে সাফল্য যে বেশি দিন দূরে থাকতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য! প্রসঙ্গত, আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতি মনকে আকৃষ্ঠ করে খারাপ চিন্তা থেকে মুক্তি দিতেও এই মন্ত্রটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। মন্ত্রটি হল- “ওম হ্রিম শ্রীম ক্লিম আদায়া কালীকা পরম এশ্বওয়ারি সোয়াহা।”
৪. শক্তি মন্ত্র:
বিখ্যাত চাইনিজ ফিলোজফার এবং যুদ্ধবিশারদ সানজু বলতেন কোনও মানুষের মনে যখন ভয়ের লেশমাত্র থাকে না, তখন সেই ব্যক্তি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন। কারণ ভয় হল সেই শক্তি, যা মহান কাজ করার থেকে আমাদের প্রতি মুহূর্তে বিরত রাখে। তাই একবার যদি ভয়কে হারাতে পারেন, তাহলে চরম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বাদ পেতে আপনাকে কেউ আটকাতে পারবে না। এখন প্রশ্ন হল, ভয়ের থেকে মুক্তি মিলবে কীভাবে? এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্যে করতে পারে এই মন্ত্রটি। শাস্ত্র মতে মহা কালীর এই মন্ত্রটি নিয়মিত পাঠ করলে মনের অন্দরে ঘাপটি মেরে থাকা ভয় দূরে পালায়। সেই সঙ্গে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল…”ক্রিং ক্রিং ক্রিং হিং ক্রিং দক্ষিনা কালীকে ক্রিং ক্রিং ব্রিং হ্রিং হাং হাং সোয়াহা।”
৫. গায়েত্রী কালী মন্ত্র:
শাস্ত্র এমনটা লেখা আছে যে নিয়মিত এই মন্ত্রটি জপ করলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে হাজারো বাঁধার মাঝেও সফলার স্বাদ পেতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, এই মন্ত্রবলে মা কালীর আশীর্বাদ সব সময় তাঁর ভক্তের উপর থাকে। ফলে খারাপ শক্তি ধারে কাছেও ঘেঁষারও সুযোগ পায় না। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল-“ওম মহা কালীকায়ে ভিদমাহে সমশান বাসিনায়া ধিমাহে, তানো কালি প্রাচোদায়াত।”