এক পাত্র জলেই পালাবে আপনার ওপরে ভর করা যত অশুভ শক্তি
কলকাতা টাইমস :
আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে অতি প্রাচীন কাল থেকেই নেগেটিভ এনার্জি বা অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করার ভাবনা চলিত রয়েছে। শান্তি-স্বস্ত্যয়ন, গ্রহরত্ন ধারণ, ব্রতপালন ইত্যাদি দ্বারা ভারতীয় সমাজ যুগে যুগে রোধ করতে চেয়েছে এদের।
নেগেটিভ এনার্জি-কে অশুভ আত্মা বলে গণ্য করেন না অনেকেই। কিন্তু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনার সঙ্গে পরিচয় রয়েছে যাঁদের তাঁরা জানেন, নেগেটিভ এনার্জি আসলে এক ভিন্ন কাল ও মাত্রার বিষয়। আমাদের জীবনে তার প্রভাব না পড়ারই কথা। কিন্তু সেই শক্তি অনেক সময়েই প্রভাব ফেলে মানুষের জীবনে। ঘটতে থাকে অসংখ্য অঘটন। বিভূতিভূষণ তাঁর অসংখ্য ছোটগল্পে উল্লেখ করেছেন এদের কথা। ‘আরণ্যক’-এর মতো উপন্যাসেও রয়েছে নেগেটিভ এনার্জির প্রসঙ্গ। এদের আত্মা বললে খুব ভুল হবে না বলেই মনে হয়।
আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে অতি প্রাচীন কাল থেকেই নেগেটিভ এনার্জি বা অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করার ভাবনা চলিত রয়েছে। শান্তি-স্বস্ত্যয়ন, গ্রহরত্ন ধারণ, ব্রতপালন ইত্যাদি দ্বারা ভারতীয় সমাজ যুগে যুগে রোধ করতে চেয়েছে এদের। শুধু তা-ই নয়, বিবিধ উপায়েই অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করার কথা বলেছে প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্য। এর মধ্যে একটা বড় অংশ নিহিত রয়েছে জলে।
আর্য সংস্কৃতিতে জল এক বিশেষ সাংস্কৃতিক ভূমিকা পালন করে। নদীস্তোত্র থেকে শুরু করে শুভকাজে পূর্ণঘটের ব্যবহার— জল সর্বদাই গুরুত্ব পায়। জলের বহতা স্বভাবের মধ্যে প্রাচীনরা দেখেছিলেন পবিত্রতাকে, শুদ্ধিকে। বেশ কিছু প্রাচীন শাস্ত্রে তাই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জল ব্যবহারের বিভিন্ন উপায় বর্ণিত রয়েছে। একে একে দেখা যেতে পারে এর কয়েকটিকে।
• একটি পাত্রে জল ভরে তা এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে সূর্যর আলো পৌঁছায়। তার পরে আম্রপল্লব বা অশোকপল্লব দিয়ে সেই জল ছিটিয়ে দিতে হবে বাড়ির চার পাশে। জল ছিটোনোর সময়ে বিষ্ণুমন্ত্র বা সূর্যমন্ত্র উচ্চারণ জরুরি।
• বাড়ির সদর দরজার পাশে একটি জলপূর্ণ পাত্রে সমুদ্রলবণ সারারাত রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এই জল ও লবণ বদলাতে হবে।
• একটি শাঁখে জল ভরে সারা বাড়িতে সিঞ্চন করতে হবে। এবং প্রতি সন্ধ্যায় সেই শাঁখটিকে বাজাতে হবে।
জল সম্পর্কে এই সংস্কারগুলি অতি প্রাচীন। কোনও বৈজ্ঞানিকতা এর পিছনে রয়েছে কি না, তা প্রমাণ করা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। পানিকে ব্যবহারের বিধি রয়েছে। এদেরকে পরম্পরার অঙ্গ হিসেবে দেখাই শ্রেয়।