November 12, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ডিম নাকি বিষ কি খাচ্ছেন দেখে তো নিন ?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
ম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা গেছে ভারতে তো বটেই, সেই সঙ্গে ব্রিটেন এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশেও পোলট্রি ফার্মে ডিমের সঙ্গে মিশছে হাজারো বিষাক্ত উপাদান, যা ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছে আমাদের শরীরকে। যে খাবারের দৌলতে অর্ধেক দুনিয়া পুষ্টির ঘাটতি মেটাচ্ছে, সেই খাবারটিই যদি এইভাবে বিষে পরিণত হয়, তাহলে তো ভয়ের বিষয়। আর সবথেকে চিন্তার বিষয় হল, কোন ডিমের অন্দের বিষাক্ত উপাদান রয়েছে, আর কোনটির মধ্যে নেই, তা খালি চোখে দেখে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব নয়।
কিন্তু কিভাবে ডিমে মিশছে বিষ: একাধিক কেস স্টাডির পর জানা গেছে সারা দুনিয়াজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠে পোলট্রি ফার্মগুলিতে মুরগিদের যে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে তার মান একেবারেই ঠিক নেই। গবেষণা বলছে, বেশিরভাগ ফার্মেই দূষিত খাবার পেটে যাচ্ছে হাঁস-মুরগিদের। ফলে ডিমের অন্দরেও সেই বিষ ছড়িয়ে পড়ছে। এখানেই শেষ নয়, সমস্যাটা আরও বড়। যেখানে খারাপ খাবারের ব্যবহার হচ্ছে না, সেখানে ডিমের বিষাক্ত হয়ে যাওয়ার কারণ একাবারে ভিন্ন। মুরগি বা হাঁসেদের কি ধরনের খাবার খাওয়ালে তাদের শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে, সে বিষয়ে ঠিক মতো জ্ঞান না থাকার কারণে যে কোনও ধরনের খাবার, যে কোনও মাত্রায় এই সব প্রাণীদের খাওয়া হচ্ছে। যে কারণেও কিন্তু ডিমের মানে ফারাক দেখা দিচ্ছে।
তবে দোষটা শুধু পোলট্রি ফার্মের নয়: ডিমের মান খারাপ হয়ে যাওয়ার দায়টা যতটা পোলট্রি ফার্মের উপর বর্তায়, ততটাই দায় হোল সেলার এবং খুচরো ব্যবসায়ীদেরও। কারণ পোলট্রি ফার্ম হাজারো হাত ঘুরে ক্রেতার ফ্রিজে এসে পৌঁছানোর আগে ডিমের শরীরে বিষ মিশে যায়। এক্ষেত্রে বিক্রেতাদের “আনহাইজেনিক” পদ্ধতিতে ডিমের সংরক্ষণকে আনেকাংশেই দায়ি করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
দেখে নিন এক্ষেত্রে কী করণীয়? প্রথমেই ডিমকে স্টেরালাইজ করতে হবে। এমনটা করলে ডিমের খোসায় উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানগুলি ধুয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে উপাদানটি সবথেকে বেশি মাত্রায় ক্ষতি করে থাকে, সেটি হল স্যালমোনেলা এন্টারাইটিস। এই উপাদানটি নানাভাবে ডিমের খোসায় এবং অন্দের প্রবেশ করার কারণে বিষের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এমন বিষাক্ত ডিম খেলে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, মাথা যন্ত্রণা, পেটে যন্ত্রণা এবং দুর্বলতার মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে হজমের সমস্যাও দেখা দেয়।
তাহলে উপায়? এক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে, না হলে ভারতীয়দের শারীরিক অবনতি তো ঘটবেই, সেই সঙ্গে দেশের অর্থ ব্যবস্থাও ভাঙতে শুরু করবে। আসলে ভারত থেকে প্রতি বছর প্রচুর মাত্রায় ডিম বিশ্ব বাজারে পৌঁছে যায়, যা বৈদেশিক মুদ্রার জোগান ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। এখন যদি পশ্চিমী দেশ আমাদের দেশ থেকে ডিম আমদানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে কী হতে পারে, তা নিশ্চয় কারওই অজানা নয়। অন্যদিকে ভারতীয়দের শারীরিক অবস্থারও যাতে কোনও ভাবে অবনতি না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখার দায়িত্ব তো সরকারেরই, তাই না!
প্রসঙ্গত, গত কয়ক মাস ধরে ভারতের ছোট-বড় নানা বাজার থেকে সংগ্রহ করা ডিমের নমুনা পরীক্ষা করে গবেষকরা দেখেছেন বেশিরভাগ ডিমেই স্যালমোনেলা এন্টারাইটিস ভাইরাসটি রয়েছে, যা থেকে মারাত্মক ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এবার থেকে ডিম কেনার আগে কয়েকটি বিষয় নজরে রাখবেন। এফ এস এস এ আই-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী বাজারে বিক্রি হওয়া ডিমের খোসায় যেন লাল লাল ছোপ না থাকে। সেই সঙ্গে কোনও ডিমের খোসায় যেন চির দেখা না দেয়। যে ডিমের খোসায় চির রয়েছে, সেই ডিম কেনা একেবারেই উচিত নয়।
এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হল, ডিমে হাত দেওয়ার পর অথবা কাঁচা ডিম ফাটানোর পর মনে করে হাতটা ধুয়ে নেবেন। কারণ এমনটা না করলে ডিমের গায়ে লেগে থাকা ক্ষতিকর উপাদান হাত মারফত মুখে এবং তারপর শরীরে অন্দরে চলে যেতে পারে। আর একবার এমনটা হলে শরীরের অবস্থা যে আর ঠিক থাকবে না, তা বলাই বাহুল্য! আরও কিছু নিয়ম আছে: ডিমের কারণে যাতে কোনওভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পারে, সে বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করতে ভারত সরকারের ফুড সেফটি ডিপার্টমেন্ট কতগুলি নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।
সেই নিয়মগুলি হল-
১. যে পাত্রে ডিম ধোয়া হবে, সেটি যেন রান্না করা খাবারের সংস্পর্শে না আসে।
২.ফ্রিজে বা বাজারের ব্যাগে ডিমের সঙ্গে অন্য খাবার রাখবেন না।
৩. ফ্রিজে ডিম রাখলে মনে করে রেফ্রিজারেটর তাপমাত্রা ৩৩-৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন।
৪. ফ্রিজ থেকে ডিম বার করে যদি টানা ২ ঘন্টা বাইরে রেখে দেওয়া হয়, তাহলে সেই ডিম ভুলেও আর খাওয়া চলবে না।
৫. বাজার থেকে ডিম কিনে আনার পর ভাল করে ধুয়ে নিয়ে তারপর ফ্রিজে রাখবেন, তার আগে নয়!
৬. ডিম কেনার পর ২ সপ্তাহের মধ্যে সেটি খেয়ে ফেলবেন। তার থেকে বেশি সময় রেখে দেবেন না যেন!
৭. খুব প্রয়োজন না পরলে কাঁচা ডিম খাওয়ার ভুল কাজটি করবেন না।

Related Posts

Leave a Reply