পুষ্টিকর এই ৯ খাবারে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি
কলকাতা টাইমস :
আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো সঠিকভাবে না খেলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি। এ লেখায় তুলে ধরা হলো তেমন কিছু খাবারের কথা। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
১. সবুজ শাকসবজি
লেটুস, পালং শাক, কলি ও অন্যান্য সবুজ সবজিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। কিন্তু এগুলো ভালোভাবে রান্না না করলে প্রায়ই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এর কারণ এসব শাকের ব্যাকটেরিয়া। বিশেষত যেসব স্থানে এ ধরনের শাক জন্মানো ও বড় করা হয় সেখানে কিংবা দোকানে বিক্রেতাদের মাধ্যমে তাতে বেড়ে ওঠা ব্যাকটেরিয়া।
নিরাপদ থাকার উপায়
এ ক্ষেত্রে কিভাবে নিরাপদ রাখবেন শাকসবজি? এ জন্য শাকসবজি বাসায় কিনে আনার পর তা ভালোভাবে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুতে হবে। কাটার পরে নয়, আগেই কিছুক্ষণ পানিতে ডুবিয়ে রেখে ধুয়ে নিন। এরপর তা পর্যাপ্ত তাপে রান্না করতে হবে। ফ্রিজে রাখতে হলে সবজিটি যেন অন্য খাবারের সঙ্গে না লেগে থাকে সে জন্য মনোযোগ দেবেন। ফ্রিজ কিংবা সবজি রাখার আধার নিয়মিত পরিষ্কার রাখবেন। কাঁচা মাংস, ডিম ও অন্যান্য খাবারের থেকে তা আলাদা রাখুন।
২. ডিম
ডিমে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এগুলোর মধ্যে একটি বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়ার নাম স্যালমোনেলা। বহু মুরগি এ ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত। ফলে ব্যাকটেরিয়াটি ডিমেও চলে আসতে পারে।
নিরাপদ থাকার উপায়
ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচার জন্য ডিম খাওয়া বাদ দিতে হবে না। তবে কাঁচা ডিম খাওয়া উচিত নয়। ভালোভাবে সেদ্ধ বা রান্না করলেই ব্যাকটেরিয়া দূর হবে। এ ছাড়া দুই পাশ ভালোভাবে উল্টে ভেজে নিলেও ব্যাকটেরিয়া দূর হবে। আধা সেদ্ধ বা একপাশ না উল্টেই পোচ করে খাওয়া বাদ দিন।
৩. টুনা
এ ধরনের মাছে স্কমব্রোটক্সিন রয়েছে। এগুলো পেটের গণ্ডগোল, মাথাব্যথা ও এ ধরনের কিছু শারীরিক সমস্যার জন্য দায়ী। এ বিষয়টি মূলত হয় বিক্রেতা যদি সঠিকভাবে মাছটি সংরক্ষণ না করে তাহলে।
নিরাপদ থাকার উপায়
মাছটি যেখান-সেখান থেকে কেনা উচিত নয়। যে বিক্রেতারা সঠিকভাবে মাছ সংরক্ষণ করতে পারে, কেবল তাদের কাছ থেকেই কিনুন।
৪. ঝিনুক
দারুণ ডিনার পার্টিতে অনেকেই ওয়েস্টার বা ঝিনুক রাখেন। তবে খাওয়ার জন্য ওয়েস্টার কোন পানিতে বড় হচ্ছে এটাও দেখার বিষয়। প্রায়ই এগুলো নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দিয়ে বোঝাই থাকে।
নিরাপদ থাকার উপায়
কাঁচা ওয়েস্টার কখনোই খাবেন না। কারণ এতে মারাত্মক জীবাণু থাকে।
৫. আলু
আলু মানেই যে নিরাপদ, তা নয়। আলুতে থাকতে পারে বহু ধরনের জীবাণু। এ ক্ষেত্রে সি. বটুলিনাম, ই. কলি ব্যাকটেরিয়া, স্যালমোনেলা ইত্যাদি খুবই বিপজ্জনক।
নিরাপদ থাকার উপায়
তাই আলু সব সময়ই ভালোভাবে ধুয়ে রান্না করে খেতে হবে। অন্যথায় তা খাবারেও থেকে যেতে পারে। এ ছাড়া অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে আলু রান্না বাদ দিন। রান্নার পর বেশিক্ষণ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় না রেখে তা ফ্রিজে রাখুন।
৬. নরম পনির
পাস্তুরিত বা জ্বাল দেওয়া দুধ দিয়ে যে পনির বানানো হয় তা খেতে সমস্যা নেই। কিন্তু যে ধরনের পনির কাঁচা দুধ থেকে তৈরি হয় সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া থেকে যায়। এ কারণে আপনি যদি গর্ভবতী হন তাহলে নরম পনির খাওয়া বাদ দিন। এ ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদেরও এটি ক্ষতি করতে পারে।
৭. আইসক্রিম
আইসক্রিম যদি নিরাপদে সঠিকভাবে মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তৈরি করা হয় তাহলে বড় কোনো সমস্যা নেই। তবে তা সঠিক নিয়ম মেনে না বানালে, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করলে মানুষের জীবনের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
নিরাপদ থাকার উপায়
বাসায় আইসক্রিম বানালে তা ভালোভাবে পাস্তুরিত দুধ ও নিরাপদ রাসায়নিক ব্যবহারে তৈরি করুন। দোকান থেকে কিনে খেতে হলে তা যেন ভালো প্রতিষ্ঠানের হয় সেদিকে নজর দিন।
৮. টমেটো
টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। এ ছাড়া টমেটোর লাইকোপেন স্বাস্থ্যের নানা উপকার করে। তবে এতে থাকতে পারে স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া। এ ব্যাকটেরিয়া এমনকি সম্পূর্ণ টমেটো গাছও আক্রান্ত করতে পারে।
নিরাপদ থাকার উপায়
টমেটো খাওয়া ও রান্নার আগে বেশ কিছুক্ষণ ভালোভাবে বিশুদ্ধ পানিতে ডুবিয়ে ধুয়ে নেবেন। ফ্রিজে রাখতে হলেও তা যেন অন্য খাবারের সঙ্গে না মেশে সে জন্য মনোযোগ দেবেন।
৯. পিনাট বাটার
প্রোটিনযুক্ত এ খাবারটি প্রায়ই স্যালমোনেলা বা এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে থাকে। ২০১৪ সালে এ ধরনের একটি ঘটনায় বহু মানুষ অসুস্থ হয়েছিল।
নিরাপদ থাকার উপায়
বাজার থেকে এটি কেনার সময় সতর্কভাবে তারিখ ও অন্যান্য বিষয় দেখে নিন। ভালো বিক্রেতার কাছ থেকে কিনুন।