November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

‘থুতুর’ দেওয়াল ভাঙা ব্যাকটেরিয়ার সাধ্য নয়  !

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 
“এবাবা কাটলো কী করে! যা যা শীঘ্র একটু থুতু লাগিয়ে নে। দেখবি সেরে যাবে।” ছোট বেলায় হাত-পা কেটে গেলেই দাদুর মুখে এই একটা কথা প্রায়ই শোনা যেত। বিশ্বাস হতো না ঠিকই। তবু কয়েকবার গবেষণাটা চালিয়েছিলাম বটে! ফল পেয়েছি কিনা খেয়াল নেই। কিন্তু প্রশ্নটা মনে থেকেই গিয়েছিল। সত্যিই কি থুতুর মধ্যে এমন কোনও উপাদান আছে যা ক্ষত সারাতে পারে? এই প্রশ্নের সন্ধানে গবেষণা কম হয়নি। তবে সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী বেজায় আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে থুতুর উপর একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে থুতু বা স্য়ালাইভার মধ্যে বিশেষ এক ধরনের কম্পাউন্ড রয়েছে, যা ক্ষত স্থানের সংস্পর্শে এলেই সেই অংশে ব্লাড ভেসেলের ফরমেশান বাড়িয়ে দেয়। ফলে শীঘ্র ক্ষত সারতে শুরু করে।
এই বিশেষ উপাদানটি কীভাবে কাজ করে? গবেষকরা পরীক্ষাটি চলাকালীন লক্ষ করেছিলেন থুতুকে উপস্থিত এই বিশেষ উপাদানটি, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় স্যালিভারি পেপটাইড হিস্টেমিন-১ নামে ডাকা হয়ে হয়ে থাকে, সেটি ব্লাড ভেসেলের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্ষতস্থানে চামড়ার মধ্যে যে ফাঁক তৈরি হয়, তা দ্রুত বুঝতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ ব্লাড ভেসেলের চিকিৎসাও শুরু করে দেয় এই উপাদানটি। প্রসঙ্গত, এই প্রক্রিয়াটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে “অ্যানজিওজেনেসিস” নামে ডাকা হয়ে থাকে।
যাত্রা সবে শুরু বন্ধু! এমন একটা যুগান্তকারি আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা আর থেমে থাকতে চান না। কারণ বাস্তবিকই বিষয়টা বেশ চমকপ্রদ। শরীর নিজেই নিজের চোট সারাচ্ছে, এই ভাবনাকে আরও কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে সেই নিয়ে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের গবেষণা। আশা করা যেতে পরে আগামী দিনে হয়তো হিউমেন স্যালাইভাকে কাজে লাগিয়ে এমন ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হবে, যা নিমেষে যে কোনও ধরনের ক্ষতকে সারিয়ে তুলতে সক্ষম হবে।
স্যালাইভার গুণাগুণ: চোট-আঘাত সারানোর পাশাপাশি থুতু আরও আনেক উপকারে লাগে। যেমন ২০০৮ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন আটকাতে থুতুর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
কীভাবে এমনটা সম্ভব হয়?
একথা তো নিশ্চয় কারও অজানা নেই যে শরীরে কোথাও কোনও চোট লাগলে সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুরা শরীরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। আর একবার যদি তারা একাজে সফল হয়ে যায়, তাহলে সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। কিন্তু যদি চোট লাগার সঙ্গে সঙ্গে যদি সেখানে অল্প করে থুতু লাগিয়ে দেওয়া যায়। তাহলেই কেল্লাফতে! কারণ থুতুর দেওয়ালকে ভেঙে ব্য়াকটেরিয়াদের পক্ষে শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা আর সম্ভব হয় না। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা হ্রাস পেতে শুরু করে।
এখানেই শেষ নয়, থুতুতে উপস্থিত হিস্টেটিন নামক একটি উপাদান মুখগহ্বরের একাধিক রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ২০০৪ সালে জার্নাল অব ফার্মেসি অ্যান্ডি ফার্মাকোলজিতে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে হিস্টেটিন নামক উপাদানটি জিঞ্জিভাইটিসের মতো রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে।

Related Posts

Leave a Reply