সৌদি আরব সবচেয়ে বেশি রোজগার করে ‘হজ’ থেকে !
কলকাতা টাইমসঃ
প্রতি বছর সৌদি আরবের মক্কায় হজের জন্য উপস্থিত হন লাখো মুসলিম। প্রশ্ন জাগতেই পারে হজের মরসুমে সৌদি আরব কত টাকা উপার্জন করে। উত্তরটা অনেক বেশি অবাককরা, তেল বিক্রি করে সৌদি আরব যা রোজগার করে, তার থেকেও বেশি আয় করে হজ থেকে! তবে, তারা চেষ্টা করছে তেল বিক্রি করে তাদের আয় আরও বাড়াতে। বছরে একটা নির্দিষ্ট সময়েই হজ করা যায়। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি দেশ থেকে কত মানুষ হজে আসবেন, তার একটা কোটা নির্ধারণ করে দেয় সৌদি আরব। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, সৌদি আরবের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশও কিন্তু হজে যান।
গত বছর সৌদি আরবের যত বাসিন্দা হজে গিয়েছিলেন, সেই সংখ্যাটা অন্যান্য দেশ থেকে আসা মুসলমানদের সংখ্যার প্রায় অর্ধেক। গত দশ বছর ধরেই মোটামুটিভাবে হাজিদের এক তৃতীয়াংশই সৌদি আরবের বাসিন্দা। এর একটা কারণ মক্কা খুব কাছে। তাই ধর্মীয় কর্তব্য মনে করে বেশ সস্তায় হজ সেরে নেন অনেকে। তবে সৌদির পর বিভিন্ন দেশের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার কোটাই সবচেয়ে বেশি। সেখান থেকে দুই লাখ বিশ হাজার মানুষ প্রতি বছর হজে যান। এটা মোট হজযাত্রী সংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ। এরপরেই রয়েছে পাকিস্তান (১১%), ভারত (১১%) আর বাংলাদেশ (৮%)। নাইজেরিয়া, ইরান, তুর্কি, মিশর -এই দেশগুলোরও কোটা মোটামুটি একই রকম।
হজে একটা নির্দিষ্ট সময়ে যাওয়া গেলেও সারা বছর ধরে উমরাহ করতে যাওয়া যায়। গত বছরই প্রায় ৬০ লাখ মানুষ উমরাহ করতে গিয়েছিলেন। নানা দেশ থেকে যাঁরা সৌদি আরবে গেছেন, তাঁদের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই উমরাহ করতে গেছেন। সাত বছর আগে উমরাহ করতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের কাছাকাছি। গত বছর হজ থেকে সৌদি আরবের সরাসরি রোজগার হয়েছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। সৌদি আরবে যাওয়া তীর্থযাত্রীরা মোট ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন ওখানে গিয়ে।
এই অর্থের একটা বড় অংশ কিন্তু সৌদি অর্থনীতিতেই যোগ হচ্ছে। মক্কার চেম্বার অব কমার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাইরের দেশ থেকে আসা মুসলমানরা মাথাপিছু ব্যয় করেন ৪৬০০ ডলার, আর স্থানীয়রা মাথাপিছু প্রায় ১৫০০ ডলার ব্যয় করেন। তবে একেক দেশ থেকে আসা হজযাত্রীদের জন্য আবার একেক রকম খরচ। যেমন ইরান থেকে আসা মানুষদের মাথাপিছু ৩০০০ ডলার খরচ লাগে। এর মধ্যেযাতায়াত, খাওয়া, কেনাকাটা সব খরচই ধরা হয়। পাকিস্তান, বাংলাদেশের যাত্রীদেরও মোটামুটি একইরকম খরচ হয়।
ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ ধারণা করছে, তেল উৎপাদন কম করার ব্যাপারে ওপেক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার ফলে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার এ বছর শূন্যে নেমে যাবে। সেদেশের সরকার সেই ক্ষতিটা অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। যার মধ্যে একটা বড় ক্ষেত্র হলো ধর্মীয় পর্যটন থেকে আয়।