এবার অন্দরের খবর পেতে ‘ট্যাটু’, তবে …
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
সত্যি একেই বলে বিজ্ঞানের শক্তি। না হলে যার কাজ ছিল ক্ষতি করার, সেই নাকি হয়ে গেল রক্ষক! এতদিন পর্যন্ত হওয়া হাজারো গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা একটা বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে সৌন্দর্য বাড়ালেও ট্যাটু শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। কারণ এর থেকে হতে পারে নানান বিপদ! কেমন বিপদ?
সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু আজ যে খবরটা দিতে চলেছে তা সুনে চোখ কপালে উঠে যাবে দেখবেন! সম্প্রতি হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক আবিষ্কার করেছেন অত্যাধুনিক স্মার্ট ট্যাটু। এই বিশেষ ধরনের ট্যাটুটা আর পাঁচটা সাধারণ ট্যাটুর মতো সৌন্দর্য তো বাড়াবেই, সেই সঙ্গে শরীরের খেয়ালও রাখবে। মানে! এমনটা কিভাবে সম্ভব হবে?
গবেষকদের মতে, স্মার্ট ট্যাটু করা হবে বিশেষ ভাবে বানানো এক ধরনের রং দিয়ে। এই রং ত্বকের সংস্পর্শে আসার পর শরীরে কী কী রোগ বাসা বেঁধেছে তা চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে নিজের প্রকৃত রং বদলে ফলবে। এই বদলে যাওয়া রঙ দেখে খুব সহজেই চিকিৎসকেরা বুঝে যাবে শরীরের অন্দরে কী খেল চলছে। যেমন ধরুন দেহে যদি শর্করার ভারসাম্য বিগড়ে যায়, তাহলে ট্যাটুর রং সবুজ থেকে খয়েরি হয়ে যাবে। একই ভাবে এই স্মার্ট ট্যাটু ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার এবং কিডনি ফাংশেনর বিষয়েও খোঁজ দেবে।
তাই এই ট্যাটু করালে আয়ু যে বাড়বেই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কথায় আছে না বিজ্ঞানের চাকা কখনও থেমে থাকে না। কথাটা যে সব দিক থেকে ঠিক, তা হাওয়ার্ড ইউনির্ভাসিটির এই গবেষকরা আরেকবার প্রমাণ করতে চলেছেন। কারণ তারা স্মার্ট ট্যাটু আবিষ্কার করার পর আরও একধাপ এগিয়ে এবার এমন এক ধরনের রং আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন, যা খালি চোখে দেখতে পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ যারা ট্যাটু করাতে চান না, তারাও এই “ইনভিসিবেল কালার”এর সাহায্যে নিজেদের শরীরের ভেতরের নানা অজানা কিছু সম্পর্কে জানতেও পারবেন, এদিকে কেউ সে রং দেখতেও পারবে না। স্মার্ট ট্যাটু একাধিক মারণ রোগকে সময়ের আগে ধরে ফেলে রোগমুক্তির পথকে প্রশস্ত করলেও সাধারণ ট্যাটু কিন্তু সে কাজ করে না। বরং অনেক ক্ষেত্রে নানা ক্ষতি করে থাকে। যেমন…
১. অ্যালার্জি: বেশ কিছু কেস স্টাডিতে ধরা পরেছে সাধারণ ট্যাটু বানাতে ব্যবহার করা লাল, সবুজ, হলুদ এবং নীল রং নানা কারণে ত্বকের সংস্পর্শে আসার পর অ্যালার্জির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। কিছু ক্ষেত্রে তো পরিস্থিতি এমন হয়ে যায় যে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকে না।
২. সংক্রমণ: ট্যাটু করার কারণে ত্বকের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সবারই যে এমনটা হবে, তা নয়। কিন্তু একবার যদি সংক্রমণ শরীরে এসে বাসা বাঁধে এবং ঠিক সময়ে যদি তার চিকিৎসা করা না যায়, তাহলে কিন্তু মারাত্মক বিপদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৩. সারা শরীরে বিষ ছড়িয়ে যেতে পার: গবেষণায় দেখা গেছে ট্যাটুর রং যদি ভুলবশত রক্তে মিশে যায়, তাহলে মারাত্মক বিপদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, ছুঁচের মাধ্যমে একজনের রক্ত আরেক জনের শরীরে মিশে গিয়েও নানা বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই ট্যাটু করার সময় নতুন ছুঁচ ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজর রাখাটা একান্ত প্রয়োজন।
৪. ক্যান্সার রোগ থাবা বসাতে পারে: ইউরোপিয়ান কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের করা একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে বেশিরভাগ দেশে ট্যাটু করার জন্য যে রঙের ব্যবহার হয়ে থাকে, তাতে লেদ, নিকেল সহ এমন কিছু উপাদান থাকে, যা কার্সিনোজেনিক। অর্থাৎ এই রং শরীরের অন্দরে প্রবেশ করে গেলে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই ট্যাটু করার আগে একটু ভেবে নিন, স্টাইল করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন না তো?