February 23, 2025     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

১২ হাজার মানুষ মারা ‘কিলার ফগের’ রহস্য ফাঁস !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

ঘোলাটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য রীতিমতো নামকরা এক স্থান লন্ডন। কিন্তু সেখানকার ১৯৫২ সালেই সেই কুয়াশার কথা কেউ কখনো ভুলতে পারবেন না। রীতিমতো সেই প্রাণঘাতী কুয়াশার কারণ সম্পর্কে এখনো কেউ জানেন না। ওটা কেন হয়েছিল?

১৯৫২ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫ দিন ঘন কুয়াশা ঢেকে ফেলে লন্ডনকে। যখন এই রহস্যময় কুয়াশা সরে গেলো, তখন এর প্রভাবে দেড় লাখ মানুষ হাসপাতারে ভর্তি। আর ৪ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। গবেষকদের মতে, ওই কুয়াশার প্রভাবে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। হাজার হাজার পশু মারা যায়। এটা ‘কিলার ফগ’ নামে পরিচিত। প্রকৃতির এই অতি গোপন ঘটনা এখন পর্যন্ত রহস্য হয়েই ছিল। তবে কারণ তো কিছু না কিছু ছিলই। তা বের করার প্রয়াস চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

কিলার ফগ নিয়ে অনেক মাথা ঘামিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের ধারণা, ঘন কুয়াশার সঙ্গে পোড়া কয়লার ধোঁয়া মিশে একে প্রাণঘাতী করে দেয়। কিন্তু তাই বলে কুয়াশা মানুষের মরণ ডেকে আনবে? এটা মানতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। চীন, আমেরিকা এবং ব্রিটেনের গবেষকরা একযোগে সেই কারণ বের করার পেছনে লিখেছেন। তারা চীনের দুটো ঘনবসতিপূর্ণ শহর বেইজিং এবং জিয়ানের আবহাওয়ার নিয়ে গবেষণাও চালান। তারা নিজেদের গবেষণাগারে সেই কুয়াশা সৃষ্টি করেন।

টেক্সাসের এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির অ্যাটমোস্ফিরিক বিজ্ঞানী এবং প্রধান গবেষক রেনি ঝ্যাং বলেন, লন্ডন কুয়াশার অন্যতম উপাদান ছিল সালফেট। সালফিউরিক এসিডের উপাদান সৃষ্টি করতো সালফার ডাইঅক্সাইড। এটি নির্গত হয় পুড়তে থাকা কয়লা থেকে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, কয়লা পোড়ার সময় আরেকটি উপাদান নির্গত হয় যার নাম নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড। এটা প্রাকৃতিক কুয়াশায় মিশে যেতে পারে। আবার সালফার ডাইঅক্সাইড থেকে সালফেট কুয়াশাকে প্রাণঘাতী করতে আরো বেশি কাজ করেছে। লন্ডন কুয়াশায় আরো অনেক ধরনের উপাদান ছিল। কিছু এসিডিক উপাদান ছড়িয়ে পড়ে।

১৯৫২ সালের কিলার কুয়াশার কারণেই তৈরি হয় ক্লিন এয়ার অ্যাক্ট। ১৯৫৬ সালে এটা পাস করে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। এই কুয়াশাকে ইউরোপের ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক বায়ু দূষণের ঘটনা বলে প্রকাশ করা হয়।

চীনের অনেক শহরের বায়ু মারাত্মক দূষিত থাকে। এই বায়ু অনেকটা লন্ডনের কিলার ফগের মতোই ছিল। তবে চীনের কুয়াশা আর কিলার ফগের কুয়াশার পার্থক্য হলো, চীনের কুয়াশায় বিরাজ করে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপাদান। এ ছাড়া এর সালফেটে থাকে কেবলমাত্রা অ্যামোনিয়া। চীনে মূলত সালফার ডাইঅক্সাইড নির্গত হয় পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে। নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয় পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং অটোমোবাইল থেকে। অ্যামোনিয়া আসে সারের ব্যবহার ও অটোমোবাইল থেকে।

ঝ্যাং জানান, আমারা অবশেষে ১৯৫২ সালের লন্ডনের সেই ভয়াল খুনে কুয়াশার রহস্য ভেদ করতে পেরেছি। পাশাপাশি বায়ু দূষণ রোধের কিছু পন্থাও বের হয়ে এসেছে। এগুলো চীনের জন্য প্রযোজ্য হবে। নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং অ্যামোনিয়ার নিঃসরন কমিয়ে আনার মাধ্যমে সালফেট গঠন হ্রাস করা সম্ভব।

Related Posts

Leave a Reply