অম্বল কমানোর সহজ ৭টি উপায়
[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :
নানা কারণে অনেকেরই অম্বলের সমস্যা হয়ে থাকে। আর সেই সংখ্য়াটা প্রতিদিন বাড়ছে। আজব বিষয় হল এই রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই অম্বলকে অতটা গুরুত্ব দিতে চান না, তা সে যতই কষ্ট হোক না কেন! কিন্তু বাস্তবটা বড়ই কঠিন। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ঠিক সময়ে যদি অম্বলের চিকিৎসা শুরু না হয়, তার এর থেকে অ্যানিমিয়া, অপুষ্টি, এমনকি অ্যাসোফেগাল ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অনেকেরই এমন ধারণা আছে যে স্টমাকে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে অম্বল এবং বুক জ্বালার মতো সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু এই ধারণার মধ্য়ে কোনও সত্য়তা নেই।
আসলে স্টমাকের মধ্য়েকার অ্যাসিড যাতে বাইরে বেরিয়ে না আসে তার জন্য় একটা ভালব আছে। সেটি যদি ঠিক সময়ে বন্ধ না হয়, তাহলে স্টমাক থেকে অ্যাসিডগুলি বেরিয়ে আসে। ফলে বুকে জ্বালা হতে শুরু করে, দেয় দেয় অম্বলের সমস্যা। অম্বল কেন হয়? স্টমাকের ভিতরে যে অ্যাসিড থাকে, তার মূলত দুটি কাজ। একটা হল, আমরা যে খাবার খাই সেই খাবারকে ভেঙে তরলে পরিণত করা, যাতে সেই খাবার শরীর শোষণ করতে পারে। আর দ্বিতীয় কাজটি হল খাবারের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করা ক্ষতিকর পেথোজেনসদের মেরে ফেলা।
অনেকেই স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ কমাতে নানা ওষুধ খেয়ে থাকেন। এই ওষুধগুলি খেলে অ্যাসিডের উৎপাদন অনেকটাই কমে যায়। ফলে দেখা দেয় আরেক ধরনের সমস্যা। যেমনটা আগেও বলেছি স্টমাকের অ্যাসিড খাবার হজম করতে সাহায্য় করে। ফলে এমন অ্যাসিডের ক্ষরণ যদি কমে যায়, তাহলে খাবার ঠিক মতো হজম হতে চায় না। এমন হলে পেটের ভিতরে থাকা গ্য়াস্টিক ভাল্বের কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে আম্বলের সমস্যা আরো বাড়তে থাকে।
অম্বল কেন হয় এবং তার লক্ষণ সম্পর্কে তো জানা গেল। এবার আসল প্রশ্নে আসা যাক। কী এমন পদ্ধতি আছে যার দ্বারা অম্বলের প্রকোপকে কমানো যায়? এর উত্তর জানতে পড়ে ফেলুন বাকি প্রবন্ধটা।
১. অল্প অল্প করে বারে বারে খান: একবারে আনেকটা খাবার খেলে স্টমাকে অ্যাসিডের উৎপাদন বেরে যায়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত খাবার সেই অ্যাসিডকে গলার দিকে ঠেলতে শুরু করে। ফলে অম্বলের লক্ষণগুলির ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরু করে। তাই একেবারে অনেকটা খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারে বারে খান। দেখবেন সমস্যা অনেকটাই কমতে শুরু করে দেবে।
২. পর্যাপ্ত পরিমাণ জলপান জরুরি: জল দুভাবে কাজ করে থাকে। এক তো অম্বল হওয়ার আশঙ্কা কমায়। আর অম্বল হয়ে গেল অনেক পরিমাণে জলপান করলে অ্যাসিডগুলির প্রকোপ কমে যায়। ফলে সমস্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
৩.তুলসি পাতা: অম্বলের সমস্যা কমাতে তুলসির কোনও বিকল্প নেই। তাই তো এমন অসুবিধা দেখা দিলে কয়েকটা তুলসি পাতা নিয়ে চিবতে শুরু করুন। দেখবেন কয়েক মিনিটের মধ্য়ে কষ্ট কমে যাবে।
৪. মাথাটা একটু উঁচু করে শোবেন: শোয়ার সময় শরীরের সমান্তরাল অবস্থানে বালিশটা না রেখে একটু উঁচু করে শুন। দেখবেন অম্বলের অসুবিধা আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে না।
৫. স্ট্রেস: একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেস অম্বল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। তাই মানসিক চাপ কমাতে যেগাসন এবং শরীরচর্চা করা একান্ত প্রেয়াজন। প্রসঙ্গত, যখনই দেখবেন স্ট্রেস বাড়ছে, তখনই জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করবেন। এমনটা করলে দেখবেন মনটা অনেকটা হালকা হয়ে যাবে।
৬. চুইংগাম: শুনতে আবাক লাগলেও একথা প্রমাণিত হয়েছে যে আম্বলের লক্ষণ কমাতে চুইংগাম দারুন কাজে আসে। আসলে চুইংগাম খাওয়ার সময় সেলাইভার উৎপাদন বেড়ে যায়, যা স্টমাক অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিতে সাহায্য় করে।
৭. যে যে খাবার খেলে অম্বল হয় তা এড়িয়ে চলুন: সাধারণত কফি, চিনি, বাজাভুজি, চকোলেট এবং মাত্রাতিরিক্ত ঝাল মশলা দেওয়া খাবার প্রভৃতি অম্বল হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে। তাই এইসব খাবার যতটা পারবেন এড়িয়ে চলবেন। নাহলে কিন্তু বুক জ্বালাকে সঙ্গী করে কষ্টের মধ্য়েই সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে হবে। আর সেটা যে শরীরের জন্য ভালো নয়, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।