ঘাড়ে অসহ্য যন্ত্রণা? দেখুন এর থেকে মুক্তি পাওয়ার দুর্দান্ত ঘরোয়া উপায়
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ঘাড় ব্যথার সমস্যায় ভোগেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। যেকোনও বয়সেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার কারণ, বেশি সময় ধরে মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকা। আবার ঘাড়ের মাংসপেশিতে টান ধরা, শিরদাঁড়ায় হাড়ের অসুখ, আর্থ্রাইটিস, সারভাইকাল স্পন্ডিলসিস, ইত্যাদি অসুখ থেকেও ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে। ঘাড় ব্যথা এতটাই অস্বস্তিকর যে, একবার শুরু হলে গোটা দিনটাই নষ্ট হয়ে যায়। কিছুতেই কাজে মন বসানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই অল্প ব্যথা দেখা দিলেই আমরা ছুটে যাই চিকিৎসকের কাছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাড় ব্যথা চিকিৎসার মূল কৌশল হল ব্যায়াম, ধ্যান এবং সঠিক শারীরিক অঙ্গবিন্যাস। এই সমস্ত বিকল্প ব্যর্থ হলে তারপরই একজন ডাক্তার বিভিন্নভাবে চিকিৎসার কথা ভাবে। তাই, আজ আমরা এই ঘাড় ব্যথা থেকে কীভাবে ঘরোয়া উপায়ে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে উল্লেখ করব। যাদের হালকা ঘাড় ব্যথার সমস্যা থাকে, তারা এই ঘরোয়া টোটকাগুলি প্রয়োগ করতে পারেন।
১) ম্যাসাজ করুন : ঘাড়ের ব্যথা কমাতে ম্যাসাজ একটি চমৎকার ঘরোয়া উপায়। ব্যথা দেখা দিলেই নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে ঘাড় ও কাঁধে মেখে নিন। এবার ম্যাসাজ করুন। এভাবে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ব্যথা থেকে নিমেষের মধ্যে মুক্তি পেতে পারবেন।
২) আইস প্যাক : ঘাড়ে ব্যথা দেখা দিলেই লাগাতে পারেন আইস প্যাক। কারণ শীতল তাপমাত্রা প্রদাহ হ্রাস করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। বরফের টুকরো গ্লাসে বা প্যাকেটে ভরে ব্যথা জায়গায় দিতে পারেন। আবার তোয়ালেতে কিছু বরফের কিউব রাখুন এবং এই বরফ কিউব যুক্ত তোয়ালে ব্যথার জায়গায় ঘষতে থাকুন। এভাবে সারাদিনে দুই থেকে তিন বার করে ১৫ মিনিটের জন্য দিতে থাকুন। এর ফলে আস্তে আস্তে ব্যথা কমবে।
৩) নুন জলে স্নান করুন : মাংসপেশি টান ধরা থেকে যদি ঘাড়ের ব্যথা হয়ে থাকে, তবে গরম জলে ‘এপসম সল্ট’ মিশিয়ে স্নান করতে পারেন। এই ‘এপসম সল্ট’-এ থাকা সালফেট ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশীকে শিথিল করে ফোলা এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও স্ট্রেস কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো করতেও সাহায্য করে।
৪) হাইড্রোথেরাপি হাইড্রোথেরাপি : ঘাড়ের ব্যথার জন্য খুবই কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার। বাথরুমের শাওয়ার বা ট্যাপ কলের তলায় এই পদ্ধতি খুব সহজেই করা যায়। সাওয়ারের হালকা গরম জল দিয়ে ঘাড়ের ব্যথার জায়গায় ৩ থেকে ৪ মিনিটের জন্য দিতে থাকুন। এরপর ৩০-৬০ সেকেন্ড ওই একই জায়গায় ঠান্ডা জল ঢালতে থাকুন। এই পদ্ধতিটি পুনরাবৃত্তি করুন ১৫ মিনিটের জন্য। দেখবেন ধীরে ধীরে ব্যথা কমবে।
৫) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার : অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কাঁধ ও ঘাড়ের ব্যথাসহ শরীরের যেকোনও ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। গরম জলে ভিনেগার মিশিয়ে ব্যথা যুক্ত অঞ্চলে মালিশ করুন অথবা এই ভিনেগারে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে ব্যথার জায়গায় রাখুন। আবার ভিনেগার ও মধু জলে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। দিনে দু’বার পুনরাবৃত্তি করুন। ফল আপনি পাবেনই।
৬) হলুদ : হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনার ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও, হলুদ রক্তসঞ্চালন উন্নত করতেও সহায়তা করে। তাই নারকেল তেলের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে সেই প্রলেপ ব্যথার জায়গায় লাগান। আবার এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে গরম করে নিন এবং অল্প পরিমাণে মধু যোগ করে এই মিশ্রণটি দিনে দু’বার পান করুন। কয়েকদিনের মধ্যেই ফল পাবেন।
৭) ঘাড়ের ব্যায়াম : এমন কিছু ব্যায়াম রয়েছে যা ঘাড়ের ব্যথা হ্রাস করতে সহায়তা করে। ঘাড়ের ব্যায়াম করার আগে মাংসপেশীকে প্রসারিত করতে গরম সেঁক দিয়ে দিন। এরপর আপনার ঘাড়টি বৃত্তাকার গতিতে একবার ক্লক ওয়াইজ এবং আবার অ্যান্টি ক্লক ওয়াইজ ঘোরান। এবার আপনি আপনার ঘাড়টি আস্তে আস্তে পিছনে এবং সামনে, আবার একবার ডান পাশ ও একবার বাম পশে ঘোরান। এভাবে ১৫ মিনিট করে দিনে ৩-৪ বার করুন। ব্যথা কমবে।