November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

‘মারাঠা’ মুখ আনতে শরদকে মন্ত্রিত্বের টোপ, চিন্তায় বহু নেতা

[kodex_post_like_buttons]

মুম্বই, ১৬ আগস্ট– কাকা-ভাইপোর গোপন বৈঠকে উত্তাল মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। পুণেতে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সপ্তাহখানেক আগে গোপনে বৈঠক করেন শরদ-অজিত। যদিও সেই বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার পর থেকে অজিত পাওয়ার মুখে কুলুপ এঁটেছেন। অন্যদিকে, শরদ সাফাই দিয়ে একে নিছকই পারিবারিক বৈঠক বলে চালাতে চেয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, অজিত আমার ভাইপো। সে আমার সঙ্গে দেখা করতেই পারে। জল্পনায় জল ঢালতে চেয়ে আরও বলেন, ‘আমি মহা বিকাশ আগারিতে আছি, ছিলাম, থাকব। অজিত নিতান্তই একটি পারিবারিক বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছিল।’

শরদ পাওয়ার পারিবারিক বলে চালালেও তাতে মন গলেনি বিরোধী জোট মহা বিকাশ আগারির অপর দুই শরিক কংগ্রেস ও শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র নেতাদের। বরং বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়ে বারে বারেই প্রশ্ন তুলেছে শিবসেনা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলেও বৈঠক নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেও প্রকাশ্যে কড়া প্রতিক্রিয়া দেননি। কংগ্রেস হাইকমান্ড তাঁকে বলেছে পাওয়াদের বিষয়টি সরাসরি শীর্ষ নেতৃত্ব দেখবে। প্রয়োজনে রাহুল গান্ধি তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন।

এতো গেল রবিবার পর্যন্ত কিন্তু এরপর মঙ্গলবার রাত থেকে সেই বৈঠক নিয়ে নতুন করে জল গড়িয়েছে। পুণের ব্যবসায়ীর বাড়ির বৈঠকে শরদের সঙ্গে এনসিপির মহারাষ্ট্রের সভাপতি নানা পাটোলেও উপস্থিতি প্রমান করেছে যে মোটেই পারিবারিক ছিল না।
জানা যাচ্ছে, সেখানে শরদকে ভাইপো অজিত প্রস্তাব দেন, গোটা এনসিপি বিজেপির হাত ধরলে ২০২৪-এ নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদ দেওয়া হবে। জানা যাচ্ছে, অজিতের সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের সময় অমিত শাহ তাঁকে এই প্রস্তাব কাকার কাছে পেশ করার পরামর্শ দেন। দিল্লিতে অজিত-অমিতের সেই বৈঠকে তৃতীয় কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, মোদি সরকার এর আগে শরদ পাওয়াকে পদ্মবিভূষণ সম্মান দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই এই মারাঠা নেতাকে তাঁর পরম বন্ধু বলে থাকেন। সেই সঙ্গে শরদ সম্পর্কে বলেন, ওঁর প্রধানমন্ত্রী হতে না পারা দেশের জন্য মস্ত বড় ক্ষতি। স্রেফ গান্ধি পরিবারের বাধায় তিনি দেশের সর্বোচ্চ পদে বসতে পারেননি।

মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলের খবর, অজিতের প্রস্তাব নিয়ে শরদ যেমন ‘রাজি আছি’ বলেননি । আবার খারিজও করেননি। তিনি সময় চেয়েছেন। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব অপেক্ষায় নারাজ। ৩১ অগাস্ট-১ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে বসতে চলেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র পরবর্তী বৈঠক। সেখানে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কথা হবে। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস-এনসিপি-শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র বোঝাপড়া শেষ পর্যায়ে। বিজেপি নেতত্ব চাইছে ইন্ডিয়া জোটের মুম্বই বৈঠকের আগেই পাওয়ার সিদ্ধান্ত নিন।

শরদকে বোঝানো হয়েছে, বিজেপির সঙ্গে থাকলে সরকারে থাকার সুবাদে তাঁর দল মহারাষ্ট্রে প্রভাব বাড়াতে পারবে। বস্তুত এই যুক্তি দিয়েই শিবসেনা ভেঙে বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়েছেন একনাথ শিন্ডে। অজিত পাওয়ারের সেই সরকারে যোগদানের কারণ হিসাবেও উন্নয়নের কথাই বলেন।

এদিকে, পাওয়ার-সহ গোটা এনসিপি জোটকে শাসক শিবিরে যুক্ত করার ভাবনা জানাজানি হতে সব দলেই কম-বেশি চিন্তায় পড়েছে। সবচেয়ে বিরক্ত শাসক জোটের একনাথ শিন্ডের শিবির। তারা মনে করছে শরদের মতো ওজনদার নেতা শাসক জোটে এলে তাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব কমে যাবে। আরও বেশি ক্ষমতাশালী হয়ে উঠবেন অজিত।

চিন্তায় মহারাষ্ট্র বিজেপিও। পদ্ম শিবিরের নেতারাও মনে করছেন শরদের নেতৃত্বে এনসিপি শাসক জোটে এলে রাজ্য-রাজনীতিতে তাঁরা ব্রাত্য হয়ে যেতে পারেন। পাওয়ারের নেতৃত্বে এনসিপির ধার-ভার বেড়ে যাবে। বস্তুত, উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে চালু কথাই ছিল তিনি পাওয়ারের কথায় ওঠাবসা করেন।

কিন্তু যদি বিজেপির কথা ধরা হয়, তাহলে মারাঠা স্ট্রংম্যানকে যদি বিজেপিতে আনা যায় তাহলে মহারাষ্ট্র বিজেপিতে ‘মারাঠা’ সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় মুখ পেয়ে যাবে। এটিই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের অঙ্ক। অন্যদিকে, পাওয়ার ওবিসি ভুক্ত এই সম্প্রদায়ের সবচেয়ে শক্তিশালী মুখ। ফলে তাঁকে জোটে টেনে আনা গেলে মারাঠা ভোটের সিংহভাগ শাসক জোটের ঝুলিতে টেনে আনা যাবে।

Related Posts

Leave a Reply