এক সন্তানের মা হয়েও মিস ইউনিভার্স, ভাবা যায়
ভারতের স্বাধীনতার পাঁচ বছর পরের কথা। সেই জমানায় মহিলাদের পোশাক-আশাক, চাল-চলন, আচার-নিয়ম সবই ছিল অন্যরকম। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের স্বাধীনতা বদ্ধ থাকত চার দেওয়ালের মধ্যেই। সেই যুগে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ইন্দ্রাণী রহমান। শুধু অংশই নেননি, প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে মিস ইউনিভার্সের মুকুটও মাথায় উঠেছিল তাঁর। কিন্তু মজার বিষয় হল, ব্রহ্মাণ্ডসুন্দরী হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এমনকী এক সন্তানের মাও হয়ে গিয়েছিলেন ইন্দ্রাণী!
১৯৫২ সালে ২২ বছরের ইন্দ্রাণী ভারতীয় নারীদের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন। সে বছরই প্রথমবার মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল। অভিষেক মঞ্চেই বাজিমাত করেছিলেন ভারতীয় সুন্দরী। তাঁকেই আদর্শ করে পরবর্তীকালে সেরার শিরোপা জিতেছেন সুস্মিতা সেন, যুক্তামুখীরা।
মডেল হিসেবে সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতা। আর প্রতিযোগীকে সুইমিং কস্টিউম পরতে হবে না, তাও কি সম্ভব? অনেকেই মনে করেছিলেন, উন্নত দেশের সুন্দরী মডেলদের সঙ্গে হয়তো পাল্লা দিতে পারবেন না ইন্দ্রাণী। কিন্তু বাস্তবে হল উল্টো। সবার মধ্যে আলাদাভাবে নজর কেড়েছিলেন তিনি। সুইমিং কস্টিউমের সঙ্গে গোল টিপ আর খোঁপায় ফুলের মালা! এমন স্টাইল স্টেটমেন্ট ছিল এক্কেবারে ‘হটকে’!
১৫ বছর বয়সে নাম করা স্থাপত্যবিদ হাবিব রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। মিস ইউনিভার্স হওয়ার আগেই এক সন্তানের মা হয়ে যান তিনি। পরে আরও একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন।
মডেলিংয়ের পাশাপাশি নাচেও তাঁর দারুণ আগ্রহ ছিল। ৯ বছর বয়স থেকে নাচ শিখতেন তিনি। তাঁর ভরতনাট্টম মন ছুঁয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন কেরি ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুরও। সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। ১৯৭৬ থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মার্কিন মুলুকেই ছিলেন ইন্দ্রাণী।