November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

সিকল সেল ডিজিজ কী? জেনে নিন লক্ষণ, চিকিৎসা

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
সিকল সেল ডিজিজ হল থ্যালাসেমিয়া ও হিমোফিলিয়ার মতোই আরেকটি জিন বাহিত অসুখ। সিকল সেল ডিজিজ, সিকল সেল অ্যানিমিয়া নামেও পরিচিত। বিজ্ঞানীদের মতে, এই জিন বাহিত রোগে মানুষের রক্ত কণিকার গঠন ঠিকমতো হয় না। যার ফলে রোগীর রক্তে অক্সিজেন বহন ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পায়। বর্তমান দিনে এই ধরনের অসুখ ভারতবর্ষের মানুষের মধ্যে বেশি দেখা দিচ্ছে। তবে শুধু ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষের মধ্যেই নয়, আফ্রিকান ও আরবিয়ান বংশোদ্ভূত মানুষের মধ্যেও এই ব্যাধিটি দেখা দিচ্ছে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই সিকল সেল অ্যানিমিয়া রোগটি আসলে কী এবং এর লক্ষণ, প্রকার, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে।
সিকল সেল ডিজিজ কী? 
বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকদের একাংশের মতে, এটি একটি জিন ঘটিত রোগ। বাবা-মা তথা পূর্বপুরুষের কারোর মধ্যে এই রোগ থাকলে, সন্তানের ক্ষেত্রে এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এটি এমন এক ধরনের ব্যাধি, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনকে নষ্ট করে দেয় এবং লাল রক্ত কণিকার বিকৃতি ঘটায় ও ভেঙ্গে যায়। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকার ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। যার ফলে দেখা দেয় সিকল সেল ডিজিজ বা সিকল সেল অ্যানিমিয়া। এই জিন ঘটিত রোগটি শৈশব থেকেই শরীরে উপস্থিত থাকে। তবে, সাধারণত ছয় থেকে সাত মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে এই রোগের উপসর্গ দেখা যায় না। ৮-৯ মাস বা ১ বছরের পর থেকে এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৪ মাস বয়সের শিশুদের মধ্যেও দেখা দেয় এই রোগ। বাবা বা মায়ের মধ্যে যেকোনও একজনের শরীরে এই রোগ থাকলে তার সন্তানেরও রোগের আশঙ্কা থেকে যায়। আগে থেকে রক্ত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এই রোগের আশঙ্কাকে নির্মূল করা সম্ভব হয়ে ওঠে।
রোগের লক্ষণগুলি কী কী? 
১) বুকে, পেটে এবং বিভিন্ন জয়েন্ট ব্যথার সৃষ্টি হয়। এই ব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
২) চোখে ফ্যাকাসে ভাব ও চোখের নানাবিধ সমস্যা।
৩) শিশুদের দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
৪) শরীরে অত্যধিক ক্লান্তিভাব ও বিরক্তি বোধ।
৫) হাত, পা ফুলে যাওয়া।
৬) প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে ঘন ঘন বিভিন্ন রোগে সংক্রমিত হওয়া।
৭) কিডনির সমস্যা ও ত্বকে হলদে ভাব দেখা দেওয়া।
প্রকারভেদ এই রোগ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে –
১) হিমোগ্লোবিন এসএস ডিজিজ।
২) হিমোগ্লোবিন এসসি ডিজিজ।
৩) হিমোগ্লোবিন SB+ (বিটা) থ্যালাসেমিয়া।
৪) হিমোগ্লোবিন SB 0 (বিটা-জিরো) থ্যালাসেমিয়া।
৫) হিমোগ্লোবিন SD, হিমোগ্লোবিন SE, হিমোগ্লোবিন SO ৬) সিকল সেল ট্রেট ( Sickle Cell trait)। রোগ নির্ণয় শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে সিকল সেল ডিজিজ নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। মূলত, রক্তে হিমোগ্লোবিন এস – এর উপস্থিতি যাচাই করে এবং রোগের লক্ষণ দেখেই এই রোগ নির্ণয় করা হয়। পাশাপাশি রুটিন রক্ত পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে ডায়াগনোসিস করা হয়।
চিকিৎসা ১) 
স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়।
২) ব্লাড ট্রান্সফিউশনের মাধ্যমে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়িয়ে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়।
৩) বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
৪) নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে, যেমন – সঠিক খাদ্যাভাস, প্রচুর বিশ্রাম নেওয়া, স্ট্রেস এড়ানো, শরীরচর্চা ইত্যাদি। তবে এই রোগ থেকে সাময়িকভাবে সুস্থ হতে বাড়িতেই এই সকল পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করতে পারেন-
১) ব্যথা উপশমের জন্য হিটিং প্যাড ব্যবহার করুন।
২) ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করুন। ৩) পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি এবং গোটা গমের শস্য খান। এগুলি আপনার শরীরে বেশি RBC তৈরি করতে সাহায্য করবে।
৪) প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
৫) স্ট্রেস থেকে দূরে থাকুন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
৬) কোনরকম জটিল সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Related Posts

Leave a Reply