November 25, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

অ্যালার্ম বাজার পরই সারা রাজ্যের ঘুম ? কী হতে পারে জানেন?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
সলে প্রতিদিন সকালে অ্যালার্ম ক্লক বাজার পরেই যেন সারা রাজ্যের ঘুম এসে জড়ো হয় চোখের কোণে। আর এই নিদ্রা জালকে যে ছিঁড়ে বেরোবে, তা আমার দ্বারা সম্ভব হয় না। ফলে অবধারিত দেরি হয়ে যায়! এক সময় প্রেয়ারের পর স্কুলে ঢোকার কারণে ছিল হ্যাড স্যারের ভ্রূকুটি, এখন সে জায়গা নিয়েছে সুন্দরী বসের উষ্ণ চাউনি। বাকিটা সব যেন একই থেকে গেছে! কিন্তু এমন অভ্যাসের কারণে যে আমার শরীরের উপকার হচ্ছে, সে খবর এতদিন ছিল না বৈকি! মানে! দেরি করে ওঠার সঙ্গে শরীরে ভাল-মন্দের কী সম্পর্ক? সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে প্রতিদিন যদি কম করে এক ঘন্টা ঘুমানো যায়, তাহলে চিনি খাওয়ার ইচ্ছা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে উপকারি খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বাড়তে থাকে। ফলে শরীরের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও থাকে না। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশিয়ানে প্রকাশিত এই গবেষণা পত্রে আরও বলা হয়েছে যে নিয়মিত ঠিক মতো ঘুমলে শরীরের নানাবিধ উপকার তো হয়ই, সেই সঙ্গে হার্ট এবং মস্তিষ্কের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। এখানেই শেষ নয়, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর কারণে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমতে থাকে। আর যেমনটা সবারই জানা আছে যে রক্তে শর্করার পরিমাণ যত নিয়ন্ত্রণে থাকে, তত শরীরের ভাল হয়। প্রসঙ্গত, অন্যান্য নানা গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ৮ ঘন্টা ঘুমতে শুরু করলে আরও সব শারীরিক উপকার মেলে। যেমন ধরুন…
১. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমানোর সময় আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে ব্রেন পাওয়ার তো বাড়েই, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে। শুধু তাই নয়, কোনও কিছু শেখার ক্ষমতাও ক্রমাগত বাড়তে শুরু করে। এই কারণেই তো সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছাত্র-ছাত্রীদের পড়তে বসার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
২. আয়ু বৃদ্ধি পায়: ২০১০ সালে হওয়া একটি গবেষণা দেখা গেছে যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান, তাদের আয়ু বাড়তে শুরু করে। যেখানে ৫ ঘন্টার কম ঘুমলে ঘটে একেবারে উল্টো ঘটনা। তাই তো ভুলেও কম পরিমাণে ঘুমাবেন না যেন! বরং ঘুমানোর সময় ১-২ ঘন্টা বাড়ালে বেশি উপকার পাবেন। আসলে ঠিক মতো ঘুম হলে শরীরের প্রতি অঙ্গ ঠিক মতো বিশ্রাম নেওয়ার সময় পায়, সেই সঙ্গে দেহের অন্দরের প্রতিটা কাজ ঠিক মতো হতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আর রোগ দূরে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই যে আয়ু বৃদ্ধি পায়, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
৩. ইনফ্লেমেশনের মাত্রা কমে: ঘুমের পরিমাণ কমতে থাকলে শরীরের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। বিশেষত জেয়েন্ট। ফলে জয়েন্টে পেন হওয়ার মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে শরীরের আরও নানাবিধ ক্ষতি হয়। তাই ভুলেও ৮ ঘন্টার কম ঘুমাবেন না যেন! প্রসঙ্গত, শরীরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ বাড়তে থাকলে হার্টের মারাত্মক ক্ষতি হয়, সেই সঙ্গে স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস এবং শরীরের বয়স বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলিও ঘটে থাকে। তাই সাবধান!
৪. ক্রিয়েটিভিটি বাড়ে: আপনি লেখক বা শিল্পী কি? তাহলে বন্ধু ঘুমের কোটা কখনও কমাবেন না। কারণ গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ঠিক মতো ঘুমালে ব্রেনের বিশেষ একটি অংশের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে ক্রিয়েটিভিটি বাড়তে শুরু করে। আসলে ঘুমানোর সময় আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়তে থাকে, যার প্রভাবে শৈল্পিক মনের বিকাশ ঘঠতে সময় লাগে না।
৫. শরীরের সার্বিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে দৈনিক ৮-৯ ঘন্টা ঘুমালে দেহের অন্দরের ক্ষমতা এতটা বাড়ে যে শরীরের সার্বিক সচলতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ক্লান্তি দূর হওয়ার কারণে কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এই কারণেই তো অ্যাথেলিটদের প্রতিদিন কম করে ১০ ঘন্টা ঘুমানের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৬. মনযোগ বৃদ্ধি পায়: ঘুমের পরিমাণ কমতে থাকলে ব্রেনের অন্দরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে মন মেজাজ এতটা খিটকিটে হয়ে যায় যে কিছুই ভাল লাগে না। সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ার কমে যাওয়ার কারণে মনযোগও কমতে শুরু করে। তাই তো ঘুমকে কখনও হলকা চালে নেওয়া উচিত নয়। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে জার্নাল পেডিয়াট্রিক্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে ৭-৯ বছর বয়সি বাচ্চারা যদি প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমায়, তাহলে তাদের শরীরের এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এবার বুঝেছেন তো শরীরকে চাঙ্গা রাখতে ঘুম কতটা জরুরি!

Related Posts

Leave a Reply