ভুলেও ডানদিকে ফিরে ঘুমালেই সর্বনাশ অবধারিত
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
কথাটা শুনে ভাবতে পারেন ঘুমনোর সময় আবার ডানদিক-বাঁদিক! সে সময় তো প্রায় সব ইন্দ্রিয়ই ছুটিতে চলে যায়। তাহলে বুঝব কীভাবে কোন দিক ফিরে শুয়েছি! একদম ঠিক কথা। তবে এই সমস্যারও সমাধান আছে।
তবে তার আগে ডান দিকে ফিরে শুলে কী হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। কারণ গবেষণা বলছে এমন ধরনের সামান্য সামান্য় বিষয়েও আমাদের শরীরের উপর মারাত্মত নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে। তাই সাবধান! খুব ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন আমাদের শরীরের অন্দরে প্রতিটি ইঞ্চিতে কোনও কোনও অঙ্গ ফিট করা আছে।
তাই তো কোন দিক ফিরে শোয়া হচ্ছে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে থাকে। কারণ যেদিক ফিরে আমরা শুচ্ছি, সেদিকে থাকা অর্গেনের উপর মারাত্মক চাপ পরে। ফলে কোনও কোনও সময় ভাল হয়, কোন সময় খারাপ। তাই আপনার যদি ডান দিকে ফিরে শোয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে এখনিই বদলান। কেন এমনটা করবেন তাই ভাবছেন তো? তাহলে প্রবন্ধের নিচের অংশে এক্ষুনি চোখ রাখুন। তাহলেই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। ডান দিকে ফিরে শুলে এক্ষেত্রে যে যে শারীরিক সমস্যাগুলি হয়ে থাকে, সেগুলি হল…
গ্যাস-অম্বল: একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে যে রাতের বেশিরভাগ সময় ডান দিক ফিরে ঘুমলে গ্যাস-অম্বলের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকে, যা বাঁদিক ফিরে ঘুমলে একেবারেই হয় না। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি প্রকাশিত এক কেস স্টাডি অনুসারে বাঁদিক ফিরে শুলে বদ-হজমের মতো রোগ সেরে যায়। তাই যারা ঝাল মশলা দেওয়া খাবার খাওয়ার কারণে বেশিরভাগ সময়ই বুক জ্বালা বা পেটে গুরুগুর করার মতো ঝামেলায় পরে থাকেন, তারা আজ রাত থেকেই চেষ্টা করুন বাঁদিক ফিরে ঘুমনোর।
রক্ত প্রবাহ ঠিক মতো হতে পারে: কোনও দিকে না ফিরে শুলে সারা শরীরের যতটা মসৃণভাবে রক্ত প্রবাহ হয়ে থাকে, ডান দিক ফিরে শুলে অতটা ভাল করে হতে পারে না। বিশেষত হাত এবং কাঁধে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত পৌঁছাতে না পারার কারণে অসারতা, যন্ত্রণা সহ নানাবিধ সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়: একেবারেই টিক শুনেছেন! সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে এই মারণ রোগের সঙ্গে আমাদের শোয়ার অভ্যাসের যোগ রয়েছে। কীভাবে? চিকিৎসকেরা লক্ষ করেছেন ডান দিক ফিরে শুলে গ্যাস্ট্রো ইসোফেগাল রিফ্লাক্স বা “জি ই আর ডি” এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর একবার যদি এই রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে তাহলে ইসোফেগাসের উপর মারাত্মক চাপ পরে, যা থেকে শরীরের এই অংশে ক্যান্সার রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
নাক ডাকা বেড়ে যায়: মেডিকেল ডেইলি তে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে ডান দিকে ফিরে শুলে নানা কারণে নাক ডাকার প্রবণতা খুব বেড়ে যায়, যা বাঁদিক ফিরে শুলে হয় না। কিন্তু নাক ডাকা এবং শোয়ার মধ্যে কী যোগ রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। এই বিষয়ে একাধিক দেশে গবেষণা চলছে। আশা করা যেতে পারে আগামী দিনে সম্পর্কটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়: একেবারেই ঠিক শুনেছেন! ডান দিকে ফিরে ঘুমলে হার্টের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। কেন এমনটা হয় জানেন? যখন আমরা ডান দিকে ফিরে শুয়ে থাকি তখন হার্টে ঠিক মতো রক্ত পৌঁছাতে পারে। ফলে হার্ট দুর্বল হতে শুরু করে। অন্যদিকে বাম দিকে ফিরে শুলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে হার্টে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। এবার আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন কোন দিকে ফিরে ঘুমাবেন।
গর্ভাবস্থায় ভুলেও না: ভাবী মায়েরা কখনও ডান দিক ফিরে ঘুমবেন না। এই নিয়মটা না মানলে কিন্তু বেজায় বিপদ! আসলে প্রেগন্যান্সিতে ডান দিকে ফিরে ঘুমলে বাচ্চার শরীরের রক্তের প্রবাহ কমে যায়। ফলে একাধিক জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বাচ্চার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেওয়া, মায়ের লিভারের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো একাধিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সারা রাত ডান দিক না ফেরার জন্য কী করা যেতে পারে? একটা সহজ পদ্ধিতির সাহায্যে এই কাজটি করা কিন্তু সম্ভব। বাঁদিক ফিরে শুয়ে পিঠের কাছে একটা বল রেখে দিন। তাহলেই কেল্লাফতে! কারণ ঘুমতে ঘুমতে যখনই ডান দিকে ফিরতে চাইবেন, বলের কারণ এমনটা করতে পারবেন না। তবে বারে বারে পিঠে বলটা লাগার কারণে হয়তো ঘুম ঠিক মতো হবে না। কিন্তু এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন বাঁদিক ফিরে শোয়ার অভ্যাস হয়ে গেছে।