কেউ চিতাভস্ম তো কেউ কাঁচের গ্লাস, এদের অদ্ভুত নেশা মাথা ঘুরিয়ে দেবে
কলকাতা টাইমস :
নেশা তো অনেকেরই আছে। কারও সেটা অ্যালকোহলের, কারও আবার বই পড়ার, কেউ বা তাস খেলায়। কিন্তু এদের নেশাগুলো ভারি অদ্ভুত। নিচে দেওয়া হলো সেইসব অদ্ভুত নেশার কথা।
১. স্বামীর ছাই : ২৬ বছর বয়েসে বিধাবা হন কাসি নামের এক মহিলা। হঠাৎ একদিন শরীর খারাপ থেকে মারা যান কাসির স্বামী। নিয়ম মেনে কাসির স্বামী সোয়ানের মৃতদেহ দাহ করা হয়। কাসিকে দেওয়া হয় তার স্বামীর মরদেহের ছাই। স্বামীর কথা মনে পড়লেই সেই মহিলা ছাইয়ের গন্ধ শুকতো। সেই থেকে স্বামীর মরদেহের ছাই খাওয়া শুরু করে। সেটা নেশায় পরিণত হয় তার। এখন সেই মহিলা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি।
২. সোফার গদি : অ্যাডিলে নামের ফ্লোরিডার এক মহিলা গোটা বিশ্বের নজরে আসে এক অদ্ভুত নেশার জন্য। অ্যাডিলে সোফার কভার খুলে সেখান থেকে গদি, ছোপরা বের করে খেয়ে নেয়। ১০ বছর বয়স থেকে ওর এই নেশা শুরু হয়েছে। এখন ওর বয়স ৩০ বছর। সোফা দেখলেই ওর জিভ থেকে জল পরে।
৩. টয়লেট পেপার : ২৫ বছরের জাডে সেলভেস্টার গত বছর খবরের শিরোনামে আসে অদ্ভুত এক কারণে। জাডে টয়লেট পেপার না খেয়ে থাকতে পারে না। পাঁচ সন্তানের মা এই মহিলা তার সবচেয়ে ছোট সন্তানের দুই মাসের গর্ভাবস্থায় প্রথমবার টয়লেট পেপার খাওয়ার নেশা করেন। সারাদিনে টয়লেট পেপারের একটা গোটা রোল শেষ হয়ে যায় তার। ডাক্তাররা এই নেশাকে মানসিক সমস্যা হিসেবে বলেছেন।
৪. নেলপলিশ খাওয়া : গোটা বিশ্বের মানুষ যখন স্টাইলের জন্য নেলপলিশ আঙুলে লাগায় তখন ২৩ বছরের বার্থা নামের এক মহিলা সেই নেলপলিশ খাওয়ার নেশা করেন। বিভিন্ন রঙের নেলপলিশ খাওয়াটা বার্থার প্রায় রোজের নেশা। বার্থা এমনও বলেছেন গ্লিটার আর নীল রংয়ের নেলপলিশ খেতে ওর সবচেয়ে ভালো লাগে। নেলপলিশের নেশাটা ওর এতটাই তীব্র যে কেউ গিফট করলে সেটা না পরে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলে। ৫ বছর বয়স থেকে ও নেলপলিশ খাচ্ছে। আজ পর্যন্ত প্রায় ৩৬ গ্যালন নেলপলিশ সে খেয়ে ফেলেছে।
৫. কাচের গ্লাস : মদ খাওয়াটা তো অনেকের নেশা। কিন্তু মদের গ্লাস! হ্যাঁ, জোস নামের এক ব্যক্তির গত পাঁচ বছরের নেশা কাঁচের গ্লাস খাওয়া। বারে গিয়ে সবাই যখন মদ খায়, তখন জোস কাচ ভেঙে খায় গ্লাস। একবার বই খেয়ে নেওয়ার পর ওর মাথায় উদ্ভট নেশা আসে, কাচের কোনো পাত্র খাওয়ার। জোস বলেন কাচের গ্লাস বিশেষ করে শ্যাম্পেন রাখার আর লাইট বাল্ব খেতে ওর দারুণ লাগে। ওর জ্বালায় ঘরের লোকরা বাড়িতে বাল্ব লাগাতে পারে না। ও হোল্ডার থেকে বাল্ব খুলে ভেঙে খেয়ে নেয়। এই নেশা করার পর থেকে ও অন্তত আড়াই শ’টা লাইট বাল্ব আর শতাধিক গ্লাস ভেঙে খেয়ে ফেলেছে।
৬. বেবি পাউডার : হাউস্টনের ডে নামের ২৮ বছরের এক মহিলা বেবি পাউডার খান। ১৩ বছর বয়স থেকে বেবি পাউডার খেতে তার এত ভালো লেগে যায় যে মাসে অন্তত তিন কৌটো পাউডার সে কেনে শুধু খেতে। সে অন্তত হাফ টন বেবি পাউডার খেয়েছে (অনেকে বলেন শুঁকেছে)।
৭. প্রস্রাব পান : নিজের প্রস্রাব খাওয়াটা ক্যারির নেশা। চার বছর ধরে নিজের প্রস্রাব খান ক্যারি। প্রতিদিন নিয়ম করে নিজের ৮০ আউন্স প্রস্রাব পান করেন ক্যারি। মাঝে মাঝে নাকে ইনহেলার মতো করে প্রস্রাবও নেন। গত বছর ডিসেম্বরে রবার্ট ওয়েলস নামের এক ব্যক্তি বলেন খুব ছোটবেলা থেকে তিনি লুকিয়ে প্রস্রাব খান।
৮. শ্মশান বন্ধু : ব্রাজিলের বাসিন্দা লুইস স্কুয়ারিসি ২২ বছর বয়েসে তার বাবাকে হারায়। বাবার মৃতদেহ নিয়ে সে শ্মশানে যায়। তারপর থেকে সে শ্মশানকে এত ভালোবেসে যে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বা কারও কাছে মৃত্যুর খবর শুনলেই ছুটে যায় শ্মশান বা গোরস্থানে। মৃতদেহকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ওর চোখ থেকে জল বেরিয়ে আসে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে সে একদিনের জন্য শ্মশানে যাওয়া ছাড়েনি। এর জন্য সে লোভনীয় চাকরিটা পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছে। সবাই তাকে ডাকে শ্মশান বন্ধু নামে। শ্মশানে আর কেউ না থাকুক ও থাকবেই।
৯. ব্লিচ স্নান : তখন গ্লোরিয়ার বয়স ২১। সন্তানের মা হবে হবে করছে। সেই সময় সে একদিন ব্লিচ স্নান করে। সেই শুরু তারপর থেকে গ্লোরিয়া শুধু জলে নয় কেমিক্যাল মেশানো ব্লিচ দিয়ে স্নান করে। প্রতিবছর প্রায় ৩০০ গ্যালন ব্লিচে স্নান করাটা ওর নেশা।
১০. রক্ত নেশা : ভ্যাম্পায়ার বলে কিছু বাস্তবে নেই ঠিকই কিন্তু রক্ত পান করে বেঁচে থাকা মানুষের কথা শুনুন। ওর নাম জুলিয়া ক্যাপলেস। ৪৫ বছরের এই মহিলা জলের চেয়েও বেশি পান করতে ভালোবাসে রক্ত। ঘণ্টায় ঘণ্টায় তার তাজা রক্ত খাওয়া চাই। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পেনসিলভিনিয়ার বাসিন্দা সেই মহিলা রক্ত খেয়ে বেঁচে আছে। পার্টিতে গেলে মদ নয় সে রক্ত খেতেই বেশি পছন্দ করে। জুলিয়ার রক্ত নেশার জন্য অনেকে রক্তদানও করেছেন। সারাদিনে ২ লিটার রক্ত না খেলে তার চলে না।