৩ লক্ষ টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে হঠাৎই থানায় হাজির নাবালিকা ! এরপর….
নিউজ ডেস্কঃ
কিশোরীর বয়স মাত্র পনের, হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে দিল্লি পুলিশের আমানবিহার থানায় হাজির সে। পুলিশের সেন্ট্রি ছুটে এলো, কি জানি কী আছে ব্যাগে! বোমা নয় তো? কিন্তু ব্যাগ খুলে যা পাওয়া গেল তা দেখে থানার সবার চোখ ছানাবড়া। ব্যাগে বোমা নয়, থরে থরে সাজানো রয়েছে টাকার বান্ডিল- পুরো তিন লাখ!
এত টাকা কোথা থেকে পেল সে ? আর থানাতেই বা কেন এলো ?
প্রশ্নের জবাবে যা বলল তা শুনতে প্রস্তুত ছিল না উপস্থিত থাকা পুলিশ অফিসারেরা। মেয়েটি রুদ্ধ কণ্ঠে যা জানাল তার সারমর্ম হচ্ছে- গত বছর সে একটি গ্যাং রেপের শিকার হয়েছিল। সম্প্রতি এই টাকাগুলো তার পরিবারকে দিয়েছে ধর্ষক-চক্র যাতে মামলা তুলে নেওয়া হয়। পুলিশ সূত্র জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে এক প্রপার্টি ডিলার চার সঙ্গীসহ মেয়েটিকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় পুলিশ দোষীদের গ্রেপ্তার করে। আদালত তাদের জেলে পাঠায়। মামলা চলছে।
অপরদিকে, ধর্ষক-চক্র মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে এক ন্যাক্কারজনক ‘চুক্তি’ করে। নাবালিকার পরিবার ৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা নেয় ধর্ষকদের কাছ থেকে। বিনিময়ে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এরপর মেয়েটির ওপর পরিবারের লোকেরা চাপ দিতে থাকে মামলা প্রত্যাহারের। কিন্তু মেয়েটি বেঁকে বসায় তার ঘরের লোকেরাই তাকে মারধর শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে সে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না- কেন এমন হচ্ছে! একসময়ে সে জানতে পারে যে ধর্ষকদের সঙ্গে ‘সওদা’ করেছে তার বাবা-মা। তখন মানসিকভাবে আরো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সে। মেয়েটি একদিন দেখে যে তাদের বিছানার নিচে অনেক টাকা রাখা আছে। তখনি সে পরিকল্পনা করে ফেলে তার ‘ইজ্জত’ নিয়ে বাবা-মা’র নোংরা ব্যবসা সে ভেস্তে দেবে।
গত ১০ এপ্রিল পরিবারের লোকজন আদালতে যায়, তাকে বাড়িতে রেখে। এই সুযোগে সে বিছানার নিচে থেকে তিন লাখ টাকা পায়। এরপর সবগুলো বান্ডিল একটি ব্যাগে ভরে হাজির হয় থানায়। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সাধারণত একা কোনো নাবালক বা নাবালিকা যখন পুলিশ স্টেশনে আসে তখন পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তারপর পরিবারের অভিযোগের সূত্রে পুলিশ কেস শুরু করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মেয়েটির কথামতে পুলিশ পদক্ষেপ নেয়। গ্রেপ্তার করা হয় মাকে। বাবার খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। পুলিশের মতে, বিবেকের তাড়নায় নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নাবালিকা মেয়েটি অসাধারণ সাহসের পরিচয় দিয়েছে।