সামনেই গরম, ভাইরাস জ্বর থেকে বাঁচতে কিভাবে
কলকাতা টাইমস :
গরমের সময় এলেই অন্যান্য অসুখের পাশাপাশি আরেকটি অসুখের ভয় থাকে। সেটি হলো ভাইরাস জ্বর। সাধারণত আর্দ্র আবহাওয়ায় এর প্রকোপ বেড়ে যায়। ভাইরাস আক্রমণের দুই থেকে সাত দিন পর জ্বর হয়। শীত শীত ভাব, মাথাব্যথা, শরীর ও জয়েন্টে ব্যথা, খাবারে অরুচি, কান্তি, দুর্বলতা, নাক-চোখ দিয়ে জল পড়া, চোখ লাল হওয়া, চুলকানি, কাশি, অস্থিরতা ও ঘুম কম হওয়া প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। শিশুদের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা, বমি ও ডায়রিয়া হতে পারে। কারও হয়তো তিন দিনেই জ্বর ভালো হয়ে যায়। কারও আবার ৭ থেকে ১৪ দিনও লাগতে পারে।
ভাইরাস জ্বরের প্রথম লক্ষণ স্বাভাবিক জ্বরের মতোই। এই জ্বরে সাধারণত প্রথমেই জ্বর অনেক বেশি আসে। জ্বরের মাত্রা থাকে অনেক। প্রায় ১০৩/১০৪-এ উঠে যায়। অনেক সময় দেখা যায় জ্বর তিন দিনেও কমে না। রোগীর স্বাভাবিক অবস্থারও অবনতি হতে থাকে। এই জ্বর বাতাসের মাধ্যমে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি থেকে ছড়ায়। অনেকের ক্ষেত্রে ঠান্ডা লেগে কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে এই জ্বর হয়।
ভাইরাস জ্বর থেকে বাঁচতে যা করবেন
ভাইরাস জ্বর থেকে দূরে থাকতে আগে থেকেই সাবধান হওয়া দরকার। সাধারণ একটি উপায়েই সম্ভব এর থেকে দূরে থাকা। দরকার মাত্র দুই কোয়া রসুন আর একটু আদা। রোজ সকালে খালি পেটে দুই কোয়া কাঁচা রসুন আর কাঁচা আদা চিবিয়ে খান। রোজ এই টোটকা খেলে সহজেই এড়াতে পারবেন সর্দিকাশি, পেটের সমস্যা ও ভাইরাস জ্বর।
রসুনে অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল ও অ্যান্টি ফাংগাল উপাদান থাকে। এ ছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে রসুন। আদা রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়ায় ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। আদা-রসুন একসঙ্গে খেলে তাই, শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ে। ফলে এড়ানো যায় ভাইরাল ফিভার।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। সর্দিকাশি বা জ্বরের রোগীর সঙ্গে হাত মেলালে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
না ধুয়ে চোখে, নাকে বা মুখে হাত দেবেন না। এতে জীবাণু ছড়ায়।
যেহেতু ভাইরাস জ্বরের অন্যতম কারণ হল ডিহাইড্রেশন তাই অবশ্যই বেশি করে পানি পান করুন। মদ্যপান বা ধূমপান করবেন না।
আপনার খাবারের সামনে হাঁচি বা কাশি দেওয়া থেকে বিরত রাখুন অন্যদের।
সব সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
ভাইরাস জ্বর হলে করণীয়
ভাইরাস জ্বর অবশ্য তেমন কোনো ভয়াবহ রোগ নয়। কোনো অ্যান্টিবায়েটিকেরও প্রয়োজন হয় না। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্যারাসিটামল খেলেই হয়। তবে জ্বর থাকা অবস্থায় প্রচুর জল পান করতে হবে। সেই সাথে বিশ্রামেরও প্রয়োজন।
খাবারের মধ্যে ভিটামিন সি ও জিঙ্কযুক্ত খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে। তরল জাতীয় খাবার যেমন স্যুপ, ফলের বা লেবুর শরবত, স্যালাইন, ডাবের জল খেতে হবে। খাবারের তালিকায় মওসুমি ফল খুবই উপকারী।
গলাব্যথা থাকলে লবণ মিশ্রিত কুসুম গরম জল দিয়ে গারগল করতে হবে। যথারীতি গোসল করতে হবে। তবে খুব ছোট শিশুর ক্ষেত্রে শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দেয়াই ভালো। দরজা, জানালা খোলা রেখে ঘরের ফ্যান হালকা গতিতে ছেড়ে রাখতে হবে।
সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই এই জ্বর ভালো হয়ে যায়। কিন্তু শরীরে যে কান্তি ও অবসাদ নেমে আসে, তা দুই-তিন সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।