‘রবিনহুড’ বাবার সিন্দুক ভেঙে ৫৫ লাখ বিলিয়ে দিল গরীব বন্ধুদের! তারপর যা হল …
জীবনে বাদবাকি সব সম্পর্ক আমরা আত্মীয়তা বা রক্তসূত্রে পাই। কিন্তু বন্ধুত্ব এমন এক সম্পর্ক যা মানুষের নিজেদের ইচ্ছায় এবং ঘটনাচক্রে তৈরি হয়। এখানে কোনো রক্ত সম্পর্ক বা আত্মীয়তার সম্পর্কের বাছবিচার করে না কেউ। তবে এই সম্পর্ক ফ্রায়ই রক্ত সম্পর্কের গভীরতাকেও হার মানায়।
দেখা যায়, বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে, প্রতিবেশীর মধ্যে, সহাপাঠী বা সহকর্মীর সঙ্গে। তবে এখানে যে সম্পর্কের ঘটনা খবর হয়েছে তা কয়েকজন কিশোরের মধ্যকার। আর খবর হওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরই এক সহপাঠী বন্ধু।
বন্ধু-সপ্তাহকে স্মরণীয় করে রাখতে ভারতের মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে দশম শ্রেণির এক ছাত্র তার বাবার ৫৫ লাখ টাকা চুরি করে সহপাঠীদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছে। এদের মধ্যে যে বন্ধুটি সবচেয়ে গরীব- দিমজুরী করে যার বাবা সংসার চালায়, তাকে দিয়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণ- ১৫ লাখ। অপর এক বন্ধুকে দিয়েছে তিন লাখ।
ঘটনা আরো আছে। বন্ধু দিবস উদযাপনে বেপরোয়া ছেলেটি তার স্কুল এবং কোচিং ক্লাসের বন্ধুদের ৩৫ জনের প্রত্যেককে দিয়েছে স্মার্টফোন। বেশ কয়েক জনকে রুপোর চেন উপহার দিয়েছে। খবরে প্রকাশে, সম্প্রতি এই আলোচিত ছাত্রের এক বন্ধু মোটরগাড়িও কিনেছে।
এই ঘটনা জানাজানি হয় যখন ওই ছাত্রের বাবা থানায় অভিযোগ করেন যে তার আলমারি থেকে উল্লেখিত পরিমান টাকা খোয়া গেছে। পেশায় বিল্ডার ওই ব্যক্তি আরো জানান, সম্প্রতি একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করে ৬০ লাখ টাকা পান তিনি। টাকাগুলো আলমারিতে নেই বোঝার পর সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় যান। অভিযোগ তদন্তে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে সবকিছু যাচাই করে তদন্তদল প্রথমেই বুঝতে পারে যে এটা চুরির ঘটনা না অর্থাৎ বাইরের কেউ এ কাজ করেনি।
এরপর তদন্তসূত্রে পুলিশ জানতে পারে যে বিল্ডার মহাশয়ের পুত্র বাপের আলমারি থেকে সরিয়ে ওই টাকাগুলো তার বন্ধুবান্ধব এবং অভাবী লোকদের মাঝে বেটে দিয়েছে। ছাত্রের পিতার কাছ থেকে পাওয়া নামের তালিকা অনুযায়ী পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে এখন পর্যন্ত তার বিভিন্ন বন্ধুর কাছ থেকে ১৫ লাখ রুপি উদ্ধার করতে পেরেছে। তবে এক দিনমজুরের ছেলে বড়লোক বন্ধুর কাছ থেকে ১৫ লাখ পাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে।
এছাড়া বেশি পরিমাণ অর্থ যেসব ছাত্র পেয়েছে তাদের বাবা-মাকে ডেকে পুলিশ পাঁচ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে বলেছে।
জবলপুরের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রটি হয়তো বন্ধুত্ব সপ্তাহের পটভূমিতে সরলমনে বা অন্য কোনো কারণে বাবার সিন্দুক লুট করার মতো এমন রবিনহুডীয় ঘটনা ঘটিয়েছে। সমালোচনার সঙ্গে সঙ্গে প্রশংসাও হচ্ছে তার এমন কাজের। এই ঘটনায় নিরাপত্তাগত কারণে সংশ্লিষ্ট ছেলেদের এবং তাদের অভিভাবকদের নাম-পরিচয় গোপন রেখেছে পুলিশ।