পরকীয়ার জের, মাঝ রাতে ঘুমন্ত স্বামীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করলো স্ত্রী এবং তার নাবালক প্রেমিক !

কলকাতা টাইমসঃ
চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটলো হুগলি জেলার হিন্দমোটরে। শুক্রবার গভীর রাতে ঘুমিয়ে থাকা নিজের স্বামীকে খুন করালো স্ত্রী। শুধু খুনিকে সঙ্গ দেওয়াই নয়, এরপর দফায় দফায় চললো স্ত্রীর নানান অভিনয়। এতকিছুর পরেও শেষ রক্ষা হলোনা, নাবালক প্রেমিক সহ গ্রেপ্তার করা হলো স্ত্রীকে। শনিবার সকালে এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় হিন্দমোটর জুড়ে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার ভোররাতে। হিন্দমোটরের রবীন্দ্রনগর সংলগ্ন দেবী এপার্টমেন্টের বাসিন্দা সুবোধ হাজরা (৪৫) কে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় তার নিজের ঘর থেকে উদ্ধার করে এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ এসে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। মৃতের দাদা সুকুমার হাজরা জানান, রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ তাকে ফোন করে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর দেয় মৃতের স্ত্রী খনা হাজরা। তাকে বলা হয় সুবোধকে দুষ্কৃতীরা খুন করে গেছে। সুকুমারবাবু জানান, তিনি এসে দেখেন ঘরের দরজা খোলা, সুবোধ এবং খনা মেঝেতে পড়ে রয়েছে। সুবোধের দেহ এলোপাথাড়ি ভাবে কোপানো হয়েছে।
প্রথমটায় মনে হয়েছিল দুজনেই মৃত। সুবোধের শরীর এতটাই ঠান্ডা ছিল যে বোঝাই যাচ্ছিলো অনেক্ষন আগেই মারা গেছে। এরপর সুকুমারবাবু প্রতিবেশীদের বিষয়টা জানান। আবাসনের ঠিক উল্টো দিকেই থাকেন এলাকার কাউন্সিলার পুতুল দত্ত। তিনিই খবর দেন উত্তরপাড়া থানায়। প্রতিবেশীরা ঘরে এসে দেখে মৃতের স্ত্রী দিব্বি বসে কান্নাকাটি করছেন। পুলিশ এবং এলাকার মানুষের প্রথমেই সন্দেহ হয় স্ত্রীর ভূমিকায়।
একটা আবাসনে এতবড়ো একটা খুনের ঘটনা ঘটলো অথচ কেউ কোনো রকম টের পেলো না! স্ত্রীর সামনে স্বামীকে খুন করলেও স্ত্রী বাধা দিলন না বা কোনোরকম চিৎকার চেঁচামেচি করলেন না। পুলিশ ভোররাতেই স্ত্রীকে আটক করে। জেরার মুখে স্ত্রী স্বীকার করে নেয় প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্কের কথা। পুলিশ সকালেই গ্রেফতার করে রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা বিজয় সিং (১৮)’ কে। তার কাছ থেকেই উদ্ধার হয় রক্তমাখা পোশাক এবং অস্ত্র। বিজয় পুলিশকে জানায়, তাকে সাহায্য করেছে তার আরও চারজন বন্ধু।
পুলিশের সন্দেহ, রাতেই খাবারের সঙ্গে সুবোধকে বেশি মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বেহুশ করা হয়। তারপরই নিঃশব্দে কোপানো হয় তাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে শেষে গলার নলি কেটে দেওয়া হয় সুবোধের। রীতিমতন পরিকল্পনা করে নাবালক প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে চিরদিনের মতন সরিয়ে ফেলেন স্ত্রী।