এদের মধ্যে একটা লক্ষণ দেখা দিলেও বুঝবেন ডায়াবেটিস ধেয়ে এলো বলে
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
প্রি-ডায়াবেটিস বা বর্ডার লাইন ডায়াবেটিস বলতে কী বোঝায় জানা আছে? এটি হল এমন একটি পরিস্থিতি, যখন আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক নেই, তবু আপনাকে ডায়াবেটিক হিসেবে বিবেচিত করা হয় না। অর্থাৎ সহজ কথায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার একেবারে আগের স্টেজ হল বর্ডার লাইন ডায়াবেটিস। এই সময় যদি সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক লেভেলে নিয়ে আসা না যায়, তাহলে আগামী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। যতক্ষণ মা রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে, ততক্ষণ কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব হয় না কোনও ব্যক্তি পি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিনা। কারণ এক্ষেত্রে তেমন কোনও লক্ষণের বহিঃপ্রকাশই ঘটে না। তবে খুব মনোযোগ দিয়ে লক্ষ করলে বর্ডার লাইন ডায়াবেটিসের কিছু লক্ষণ চোখে ধরা পরে। নতুবা কারও পক্ষেই এটা বোঝা সম্ভবই হয় না যে তার শরীরে শর্করার মাত্র প্রতি নিয়ত বৃ্দ্ধি পাচ্ছে। তাই তো আপনাদের সচেতন করতে এই প্রবন্ধে প্রি-ডায়াবেটিস বা বর্ডার লাইন ডায়াবেটিসের কিছু লক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
প্রসঙ্গত, খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা যদি ১০০-১২৫ এম জি/ডি এল এর মধ্যে থাকে, তাহলে বুঝবেন আপনি প্রি-ডায়াবেটিক। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করা একান্ত প্রয়োজন, না হলে কিন্তু আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই তো আপনার পরিবারে যদি ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে প্রতি মাসে রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া উচিত শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে কিনা। আর যদি নিচে আলোচিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে থাকে, তাহলে সময় নষ্ট না করে যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসা শুরু করত হবে। কারণ ঠিক সময়ে ট্রিটমেন্ট শুরু না হলে প্রি-ডায়াবেটিস থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিস সহ হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, এমনকী কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। তাই তো আপনার আগামী দিনকে আরও সরক্ষিত করতে প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, সেগুলি হয়…
১. জল তেষ্টা বেড়ে যাবে: রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকলে জল তেষ্টাও খুব বেড়ে যায়। তাই এদিকটায় খেয়াল রাখাটা জরুরি। তাই যদি লক্ষ করেন, দিনে স্বাভাবিকের থেকে বেশি মাত্রায় জল খাচ্ছেন, তাহলে সময় নষ্ট শরীরে না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এমনটা করলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমবে।
২. বারংবার প্রস্রাব চাপা: অনেক কারণে এমনটা হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেরে গেলে এমন সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। শুধু তাই নয় এক্ষেত্রে প্রস্রাবের পরিমাণও বেড়ে যায়।
৩. দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া: বেশ কয়েক মাস ধরে কি ঝাপসা দেখছেন? মনে হচ্ছে দৃষ্টিশক্তি যেন কেমন কমে আসছে। তাহলে সাবধান হন। কারণ বর্ডার লাইন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অনেক সময়ই চোখের ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। আর যদি ঠিক সময়ে সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা না যায়, তাহলে এক সময়ে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি একেবারে কমে যওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
৪. মুখ গহ্বরে সংক্রমণ: প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। ফলে মুখের ভিতরে ঘর বেঁধে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফলতে অনেক সমই শরীর সক্ষম হয় না। ফলে এই সব ব্যাকটেরিয়ার কারণে বারংবার মুখ গহ্বরে সংক্রণম দেখা দেয়। আপনারও যদি বারে বারে এমন রোগ হতে থাকে, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ধীরে ধীরে বাসা বাঁধতে শুরু করেছে ডায়াবেটিস।
৫. ত্বকের রোগ: অনেক সময়ই প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ হিসেবে নানা ধরনের ত্বকের রোগের প্রকোপ খুব বেড়ে যায়। যেমন বেশিরবাগ ক্ষেত্রেই এমন রোগীদের শরীরের একাধিক জায়গায়, বিশেষত গলা, কুনুই, হাঁটু এবং গোড়ালিতে কালো চোপ দেখা দিতে শুরু করে।
৬. ওজন কমে যায়: প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে শরীরে মজুত চর্বি ভেঙে গিয়ে এনার্জি তৈরি হতে শুরু করে। ফলে দ্রুত ওজন কমতে থাকে। তাই যদি দেখেন মাত্রাতিরিক্ত হারে ওজন কমে যাচ্ছে, তাহলে সাবধান হন। কারণ এটাই সঠিক সময় চিকিৎসা শুরু করার। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
৭. ক্ষত শুকতে চায় না: রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে নানা কারণে রক্ত চলাচল কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ক্ষত সহজে শুকতে চায় না। প্রসঙ্গত, এটি হল প্রি-ডায়াবেটিসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। তাই এমন সমস্যা দেখা দিলে যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৮. ক্লান্তি বেড়ে যাবে: প্রি-ডায়াবেটিকদের শরীরে ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। ফলে শরীরে উপস্থিত শর্করা এনার্জিতে রূপান্তরিত হওয়ার কোনও সুযোগই পায় না। ফলে এনার্জির ঘাটতি দেখা দেওয়ার কারণে ক্লান্তি বোধ ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে যায়।