হারিয়ে যাওয়ার আগেই দেখে নিন
তবে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে ক্রমেই বিবর্ণ হতে চলেছে আমাদের একমাত্র বাসযোগ্য এই গ্রহটি। হারিয়ে যেতে বসেছে এর সৌন্দর্য। পৃথিবীর বেশ কিছু অপরূপ স্থান এরইমধ্যে হারিয়েও গেছে। অপেক্ষমান তালিকাও কম দীর্ঘ নয়!
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর এমন অনেক স্থানই রয়েছে যা জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে আগামী ১শ’ বছরের মধ্যে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে। এসব স্থান তথন আর বাস্তবে নয়, স্থান পারে ইতিহাসের পাতায়! আবার কিছু স্থান আছে যা হারিয়ে যেতে এরচাইতেও সময় লাগবে। তেমনই কিছু স্থান নিয়ে এবারের আয়োজন।
১. সেশেলঃ আফ্রিকা মহাদেশের দ্বীপরাষ্ট্র সেশেল। ভারত মহাসাগরের মাদাগাস্কার উপকূলের কাছে অবস্থিত দ্বীপটি তার রূপের জন্য বিখ্যাত। নবদম্পতিদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত সেশেল। পর্যটকেরা সময় ও সুযোগ পেলেই ছুটে যান সেখানে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির উপর। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা আগামী ৫০ থেকে ১শ’ বছরের মধ্যে সাগরে মিলিয়ে যাবে সেশেল।
২. কিলিমানজারো পর্বত, তানজানিয়াঃ কিলিমানজারো… সোয়াহিলি ভাষায় যার অর্থ “উজ্জ্বল পর্বত”। এটি উত্তর-পূর্ব তানজানিয়াতে কেনিয়া সীমান্তে অবস্থিত। এটি একটি মৃত আগ্নেয়গিরি। এর দুইটি শৃঙ্গ ১১ কিমি দূরত্বে অবস্থিত এবং একটি খাড়া ঢালের মাধ্যমে যুক্ত। কিলিমানজারোর খাড়া ঢালে বেশ কয়েকটি বিচিত্র প্রজাতির উদ্ভিদের দেখা মেলে। এই পর্বতের শৃঙ্গ দেখা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা। বরাবরই কিলিমানজারো’র শৃঙ্গে বরফের আচ্ছাদন দেখতে পাওয়া যায়। তবে খুব বেশিদিন এই চিত্র আর দেখা সম্ভব হবে না। জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে গত ১শ’ বছরে এর ৮৫ ভাগ বরফ পানি হয়ে গেছে।
৩. মিরাদোর উপত্যকা, গুয়েতেমালাঃ হারানো মায়া সভ্যতার জন্যই শুধু নয়, এর প্রাকৃতিক বৈচিত্রের জন্য পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এই স্থানটি। এমনই অপর স্থান টিকাল ন্যাশনাল পার্ক। তবে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবের জেরে হারিয়ে যেতে বসেছে এর বৈচিত্র। হারিয়ে যাচ্ছে মায়া সভ্যতার ঐতিহাসিক নিদর্শনও।
৪. সুন্দরবন, বাংলাদেশ ও ভারতঃ বিশ্বের বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনটিও জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবের কবলে পড়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় অনেক এলাকাই ধিরে ধিরে তলিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যেতে বসেছে বনের বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। হারিয়ে যাচ্ছে বনের জীব বৈচিত্র।
৫. পেরিতো মোরেনো হিমবাহ, আর্জেন্টিনাঃ পর্যটকদের চোখে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত এটি। সান্তা ক্রুজ প্রদেশে অবস্থিত এই হিমবাহকে বিশ্বের ৩য় বিশুদ্ধ পানির ভাণ্ডার হিসেবেও বলা হয়ে থাকে। তবে অনাবৃষ্টি এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এটিও গলতে শুরু করেছে।
৬. মাদাগাস্কার বনঃ বিশেষজ্ঞদের মতে মাদাগাস্কারের এই বনাঞ্চলও আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে। অতিরিক্ত দাবানল এবং অবাধে গাছ কাটাই যার আসল কারণ।
৭. গ্লেসিয়ার ন্যাশনাল পার্ক, মন্টানাঃ যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানায় অবস্থিত এই হিমবাহ সমৃদ্ধ পর্বতাঞ্চলও বর্তমানে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে ধুঁকছে।
৮. ভেনিস, ইতালিঃ ঐতিহাসিক নানা কারণে বিখ্যাত ইতালির এই শহরটি। শুধু কী তাই, এর অপরূপ সৌন্দর্যও মোহিত করে পর্যটকদের। তবে এই শহরের পরিণতিও আসছে ভালো হবে না! সমুদ্রের উচ্চতা ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় তলিয়ে যাবে এই শহরও।