November 12, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি সফর

যত খুশি ছুটি! তাও আবার বেতনসহ…

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

যদি কোনো কোম্পানি কাউকে কাজের জন্য নিয়োগ দিয়ে বলে, আপনি বছরে যত ছুটি চাইবেন, ততই পাবেন। শুধু তা-ই না, এই ছুটিগুলি আপনি বেতনসহ পাবেন। তাহলে কেমন হয়! নিশ্চয়ই মনে হবে এটা দিবাস্বপ্ন! না, এটা মোটেই দিবাস্বপ্ন নয়। একদম সত্যি।

অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি কোম্পানি কয়েক বছর ধরে তাদের কর্মীদের বেতনসহ সীমাহীন ছুটি দিচ্ছে। আর মজার বিষয় হলো, সব কটি কোম্পানিই দিনে দিনে উন্নতি করছে। একটি কোম্পানিও বন্ধ হয়ে যায়নি।

চাকরিজীবীদের জন্য একটি আতঙ্কের নাম ছুটি চাওয়া। জরুরি প্রয়োজনেও ছুটি চাইতে কর্মীদের বড় কর্তার নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এমনটা প্রায় সব দেশেই হয়। তবে এ ক্ষেত্রে ভিন্ন নজির স্থাপন করছে অস্ট্রেলিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা বছরে যত খুশি তত দিন ছুটি কাটাতে পারেন। তাও আবার বেতনসহ।

আরও পড়ুন : ছুটির সর্বোৎকৃষ্ট সুখ অস্ট্রিয়ায়, জঘন্য নিয়ম মার্কিন মুল্লুকে

নতুন এই সীমাহীন ছুটি-নীতি অনুসরণ করছে ইহারমোনি, হকার ব্রাইটন, স্টুডেন্ট ফ্লাইটসসহ অস্ট্রেলিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠান। এ সময় প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা সরকারের কর্মক্ষেত্র-নীতি কর্তৃক নির্ধারিত অবকাশ যাপন, অসুস্থতা বা নতুন বাবা-মায়েরা বেতনসহ ছুটি ভোগ করেন। পাশাপাশি সীমাহীন ছুটি-নীতি অনুযায়ী, একজন চাকরিজীবী বছরে যত দিন খুশি ছুটি কাটাতে পারেন। এই ছুটির জন্য কর্মীর কোনো বেতন কাটা হয় না।ভাবছেন, এই নীতি ব্যবহার না জানি কত কর্মী সারা বছর ছুটি কাটিয়েছেন?

অস্ট্রেলিয়ার একটি উদ্ভাবন পরামর্শক সংস্থা ইভেনটিয়ামের গবেষণা বলছে, সীমাহীন ছুটি-নীতি চালু করার প্রথম বছরে গড়ে একজন কর্মী ২৪ দিন ছুটি কাটিয়েছেন। তৃতীয় বছরে এই ছুটি গড়পড়তা ২৭ দিনে এসে ঠেকেছে। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা অ্যামেন্ডা ইমবার বলেন, তার মানে কর্মীরা তাঁদের যতটুকু ছুটির প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই ব্যবহার করছেন। অর্থাৎ সীমাহীন ছুটি-নীতির অপব্যবহার হচ্ছে না।

গবেষণায় আরও বলা হয়, এই নীতির বাস্তবায়নকারী কোনো প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না; বরং প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা তাঁদের কাজের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী।

অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম চাকরির বিজ্ঞাপনদাতা ওয়েবসাইট ইনডিড প্রতিষ্ঠান সীমাহীন ছুটি-নীতির অনুসরণ করে। গত দুই বছরে কর্মীদের কাজের অগ্রগতির দরুন প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত নেতৃত্ববিষয়ক সংস্থা বেনডেল্টার সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যাথনি মিশেল বলেন, এই নীতির ফলে ছুটি নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে না কর্মীদের; বরং তাঁরা আরও বেশি উদ্দীপ্ত হয়ে কাজে মনোযোগী হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অতিরিক্ত ছুটি কোম্পানির উন্নতির নিশ্চয়তা না দিলেও কর্মীদের সুখের নিশ্চয়তা দেয়। এটি প্রকারান্তরে কোম্পানিরই কাজে লাগে। বৈশ্বিক ছুটির গড়পড়তার হিসাবে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মীদের কম ছুটি গ্রহণের চর্চা রয়েছে। বেশি ছুটি কাটানোর ফলে প্রতিষ্ঠান অকর্মা ভাবতে পারে—এমন ধারণা তাঁদের অনেকের মধ্যে কাজ করে।

২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় সরকারিভাবে বরাদ্দ ছুটির মধ্যে গড়ে ১৬ দিন ছুটি অব্যবহৃত থেকে যায়। আরেক গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ২৪ লাখ পূর্ণকালীন কর্মী কোনো ছুটি ছাড়াই এক বছর পার করে দেন। এই ফল দেখা পর অস্ট্রেলিয়ার অনেক প্রতিষ্ঠানই সীমাহীন ছুটি-নীতি অনুসরণ করতে শুরু করেছে।

Related Posts

Leave a Reply