এখানে ট্যাটুই হল অপরাধীদের চেনার অস্ত্র
কলকাতা টাইমস :
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েদিদের সঠিকভাবে চিনতে ও চিহ্নিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেন জেল কর্তৃপক্ষ। মাঝে মধ্যে বিশেষ কয়েদিদের ওপর সহজে নজরদারি করতে বিশেষ ট্যাটু এঁকে দেওয়া হয়। এখানে দেখে নিন এমনই ১৫টি ট্যাটু। জেলের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা এসব ট্যাটুর গোপন অর্থ সম্পর্কে সচেতন।
১. ১৪৮৮ : এই সংখ্যা ব্যবহৃত হতো নাৎসি কয়েদিদের দেহে। অনেকের দেহে ১৪ কিংবা ৮৮ সংখ্যা আলাদাভাবে ব্যবহৃত হতো। ১৪ সংখ্যা দ্বারা ১৪টি শব্দ বোঝানো হয়েছে। এটা নাৎসি নেতা ডেভিড লেনের একটি বাক্য নির্দেশ বোঝায়। সেখানে তিনি বলে, ‘উই মাস্ট সিকিউর দ্য এক্সিসটেন্স অব আওয়ার পিপল অ্যান্ড আ ফিউচার ফর হোয়াইট চিলড্রেন’। এদিকে ৮৮ সংখ্যা দ্বারা ইংরেজি বর্ণের ৮ম অক্ষর অর্থাৎ ‘এইচ’ নির্দেশ করা হয়। দুটো এইচ দ্বারা ‘হেইল হিটলার’ অর্থ বোঝানো হয়েছে।
২. মাকড়সার জাল : সাধারণত কনুইয়ে আঁকানো হয় মাকড়সার জাল। দীর্ঘমেয়াদে শাস্তিপ্রাপ্ত যে সকল অপরাধী তাদের চিহ্নিত করতে এই জাল আঁকানো হয়। জেলে এটা কেবলমাত্র কালো কালিতে আঁকানো হয়।
৩. অশ্রু : চোখের নিচে এঁকে দেওয়া হয় অশ্রু। একেক জেলে এর অর্থের ভিন্নতা রয়েছে। দীর্ঘদিন সাজাপ্রাপ্তদের চিনতে এটি আঁকানো হয়। আবার অনেক দেশে খুনের আসামী চিনতে এটি আঁকানো হয়। আবার অনেক জেলে এও বোঝানো হয়, জেলের মধ্যে এদের কোনো পরিচিত অপরাধী খুন হয়েছেন এবং তারা প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজছেন। এই ট্যাটু সম্প্রতি র্যাপার এবং সেলিব্রিটের দ্বারা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
৪. পাঁচ পয়েন্টের রাজমুকুট : ল্যাটিন কিংস গ্যাং-এর সদস্যদের প্রতীক এটি। শিকাগোর বাইরে এই অপরাধী চক্রটি আমেরিকার সবচেয়ে বড় ল্যাটিন অপরাধী চক্র। এদের প্রায়ই এএলকেএন (অলমাইটি ল্যাটিন কিংস নেশন) অক্ষর দ্বারা নির্দেশ করা হয়। এই রাজমুকুটের বিভিন্ন রংয়ের রত্ন ও নকশার অনেক গোপন অর্থ রয়েছে বলে মনে করা হয়।
৫. তিনটি ডট : ‘মি ভিদা লোকা’ বা ‘আমার পাগলাটে জীবন’ বোঝানো হয় তিনটি ডটের মাধ্যমে। এটা কোনো বিশেষ দলের চিহ্ন নয়। বরং পাগলাটেদের জীবনযাপনের চিহ্ন। সাধারণত চোখে বা হাতে এই ট্যাটু আঁকানো হয়।
৬. পাঁচটি ডট : এই ট্যাটু দ্বারা জেলের সময় এবং অবস্থান বোঝানো হয়। চারপাশের চারটি ডট বলতে চারটি দেয়াল এবং মাঝখানের ডট দ্বারা বন্দিকে বোঝানো হয়েছে।আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান জেলে সাধারণত হাতেই আঁকানো হয় এটি।
৭. হাতবিহীন ঘড়ি : যারা দীর্ঘমেয়াদি শাস্তি পেয়েছেন তাদের কব্জিতে এটা আঁকানো হয়। এর দ্বারা বহু সময় নির্দেশ করা হয়।
৮. আরিয়ান ব্রাদারহুড : আমেরিকার জেলগুলোতে এই দলের সদস্য সবচেয়ে বেশি। এরা এক শতাংশ জুড়ে রয়েছেন। এদের চিহ্নিত করতে ‘এবি’ অক্ষর লেখা হয়। আবার অনেক সময় নাৎসিদের চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়।
৯. নোর্টেনো : এর দ্বারা নুয়েস্ট্রা ফ্যামিলিয়া গ্যাংকে বোঝানো হয়। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ল্যাটিন চক্র এটি। বড় আকারের ট্যাটুতে আছে নোর্টেনো ও নুয়েস্ট্রা ফ্যামিলিয়া শব্দগুলো। আরো আছে ‘এন’ অক্ষর, ১৪ সংখ্যা। ইংরেজি বর্ণমালার ১৪তম বর্ণ এন বোঝানো হয়।
১০. লা এমে : ম্যাক্সিকান মাফিয়াদের চিহ্নিত করতে ‘লা এমে’ বা ‘দ্য এম’ বোঝানো হয়। এরা আমেরিকার সবচেয়ে বড় এবং বর্বর বন্দির দল।
১১. এমএস ১৩ : এল সাভাডোরের মারা সালভাট্রুচা গ্যাংয়ের সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়। সাধারণত দেহের যেকোনো অংশে এটি আঁকানো হয়। লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসকারী এল সালভাডোরের অধিবাসীদের গ্যাং এটি।
১২. তাস : জুয়াড়ি আসামিদের চিহ্নিত করতে তাসের ছবি এঁকে দেওয়া হয়। আবার এমন আসামিদেরও বোঝানো হয় যারা জীবনটাকে জুয়া হিসাবে নিয়েছেন। রাশিয়ার জেলগুলোতে ট্যাটুটি দারুণ জনপ্রিয়। একেক তাস একেক ধরনের অপরাধী চিহ্নিত করে। যেমন- স্পেডের কার্ড দ্বারা চোর, ক্লাবসের কার্ড দ্বারা সহজাত অপরাধীদের বোঝানো হয়। ডায়মন্ডের কার্ড পুলিশের গুপ্তচর এবং হার্টসের কার্ড দ্বারা এমন কাউকে বোঝানো হয় যিনি জেলের মধ্যে রোমান্টিক সঙ্গী খুঁজছেন।
১৩. ইডাব্লিউএমএন : চারটি অক্ষরে বোঝায় ইভিল, উইকড, মিন এবং ন্যাস্টি। বিশেষ কোনো অপরাধী দলকে বোঝায় না। সাধারণ অপরাধীদেরও এই ট্যাটু দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
১৪. বুকে ক্রস : রাশিয়ার জেলে এই ট্যাটুটি বেশি দেখা যায়। এর দ্বারা ‘প্রিন্স অব থিভস’ বোঝানো হয়। ভয়ংকর অপরাধীদের শীর্ষস্থানীয়দের বোঝাতে এই ট্যাটু ব্যবহৃত হয়।
১৫. এ.সি.এ.বি : এই আদ্যক্ষর ব্রিটিশ বন্দিদের দেহে দেখা যায়। পূর্ণাঙ্গ অর্থ ‘অল কপস আর বাস্টার্ডস’। আবার অনেকের মতে, এর অর্থ অলওয়েজ ক্যারি আ বাইবেল।