ট্যাটু লাভাররা তাদের শখের কি ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর পরিনাম জানেন !
কলকাতা টাইমস :
শুরু হয়ে গেছে বাঙালীর সর্বশ্রেষ্ট উৎসব দুর্গাপুজো। এই সময় ট্যাটু করানোর হিড়িক পড়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। অন্তত পরিসংখ্যান তো তাই বলছে। একটি সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে দুর্গা পুজোর কয়েক মাস বা কয়েকদিন আগে থেকে জিম জয়েন করার এবং ট্যাটু করার প্রবণতা গত কয়েক বছরে বেশ বেড়েছে, যা বেজায় ভয়ঙ্কর বিষয়! কেন ভয়ঙ্কর কেন?
একটি গবেষণায় দেখা গেছে ট্যাটু করার সময় যে রং ব্যবহার করা হয়, তাতে এমন কিছু কেমিক্যাল থাকে, যা রক্তে বেশি মাত্রা মিশে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে ছোট-বড় যে কোনও রোগই বড় আকার ধারণ করার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, আরও নানাভাবে শরীরের ভীষণ ক্ষতি হয়। সব থেকে ভয়ের বিষয় কি জানেন, বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারেননি ট্যাটুর রঙে কী এমন আছে যা এতটা ক্ষতি করে থাকে। তবে একটা বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে এই রঙে উপস্থিত নিকেল, ক্রোমিয়াম, কোবাল্ট এবং টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইডের মতো উপাদান শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক।
তাই তো এই উপাদানগুলির মধ্যে কোনওটা যদি ভুলেও রক্তে মিশে যায়, তাহলে ভয়ঙ্কর কিছু ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। শুধু তাই নয়, টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড ত্বকের সংস্পর্শে আশার পরে চুলকানি এবং প্রদাহজনিত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম হল হাজারো কোষ এবং টিস্যুর একটি নেটওয়ার্ক, যা একসঙ্গে মিলে একটা শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এই প্রতিরোধ সিস্টেমটি ছোট-বড় নানা রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। তাই তো রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে বেজায় বিপদ!
এক্ষেত্রে যে কোনও সময় খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই তো এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যা থেকে এই ধরনের কিছু ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এখন প্রশ্ন হল, ট্যাটু করার পর বুঝবেন কীভাবে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পরেছে? এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পেতে পারে, সেগুলি হল- মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ডিহাইড্রেশন, মারাত্মক ক্লান্ত লাগা, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়া, লিম্ব গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া এবং শরীর ভাঙতে শুরু করতে পারে। এমন সময় যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সেই সঙ্গে এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি যদি খেতে পারেন, তাহলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে পুনরায় চাঙ্গা করে তুলতে কোনও সমস্যাই হবে না।
কী কী খাবার এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে?
১. হলুদ: শতাব্দি প্রাচীন এই মশলাটি যদি প্রতিদিন নানাভাবে খাওয়া যায়, তাহলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। আসলে এতে উপস্থিত কার্কিউমিন নামক এক ধরনের অক্সিডেন্ট বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: পেয়ারা, লেবু, জাম, চেরি সহ একাধিক সবজি এবং ফলে রয়েছে ভিটামিন সি। এই ভিটামিনটি শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ব্য়বস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৩. আদা এবং রসুন: দুটিতেই রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, সেই সঙ্গে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল প্রপাটিজও, যা ভেঙে পরা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে পুনরায় শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে। তাই তো এই পুজোয় যদি ট্যাটু করার প্ল্যান করে থাকেন, তাহলে আগে থেকে বাড়িতে পরিমাণ মতো আদা এবং রসুন মজুক করে রাখতে ভুলবেন না যেন!
৪. অশ্বোগন্ধা: এই প্রকৃতিক উপাদানটি এক সঙ্গে একাধিক উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন প্রতিদিন নিয়ম করে যদি অশ্বগন্ধা খাওয়া যায়, তাহলে একদিকে যেমন এনার্জির ঘাটতি দূর হয়, তেমনি রোগ প্রতিরোগ ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৫. বিটরুট: রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করে তুলতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে নিয়মিত যদি বিটরুটের রস খাওয়া যায় তাহলে শরীরে ফাইটোকেমিকাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা প্রতিনিয়ত ইউমিউন সিস্টেমের দেখভাল করতে কাজে লাগে।