২৮ বছর ধরে নদী সাঁতরে স্কুলে যান এ শিক্ষক!
কলকাতা টাইমস :
বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। সড়কপথে যেতে হলে প্রথমে মিনিট দশেক হেঁটে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হয়। এর পর দুবার বাস পাল্টাতে হয়। পরে বাস থেকে নেমে হাঁটতে হয় আরও দুই কিলোমিটার, তবেই স্কুল। তবে নদীপথে পথটি সামান্য।
আর এ কারণেই কেরালা রাজ্যের মাল্লাপুরম জেলার পদিমজাত্তুমুড়ি নামে একটি প্রত্যন্ত গ্রামের আবদুল মালিক ২৮ বছর ধরে নদী সাঁতরে স্কুলে যান।
ওই জেলারই মুসলিম লোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি। স্কুলটির তিন দিকে রয়েছে কাদালুন্দিপুঝা নদী। ১৯৯২ সাল থেকে এ স্কুলে শিক্ষকতার করছেন আবদুল মালিক।
চাকরি নেওয়ার পর থেকে সড়কপথেই স্কুলে যেতেন আবদুল মালিক। যেতে আসতে ৬ ঘণ্টা লেগে যেত। প্রতিদিন মনে হতো এটি এক যুদ্ধ।
পরে স্কুলের অন্য শিক্ষকরা আবদুলকে পরামর্শ দেন, এভাবে কষ্ট করে না এসে আবদুল স্কুলের কাছের নদীটি সাঁতরে আসতে পারেন। তা হলে আর কোনো খরচ হবে না আবার সময়ও কম লাগবে।
পরামর্শটি কাজে লাগান আবদুল মালিক। বাড়ি থেকে স্কুলের পোশাক, বইপত্র, কাগজ কলমসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস প্লাস্টিকের ব্যাগে বেঁধে নিয়ে প্রতিদিন সকালে চলে আসেন নদীর তীরে। তার পর গামছা পরে নদী সাঁতরে বিদ্যালয়ের কাছের পাড়ে এসে পৌঁছান তিনি। কাপড়চোপড় বদলে বিদ্যালয়ে যান। এভাবেই চলছে ১৯ বছর।
৪৫ বছরের আবদুল মালিক স্কুলে অংক শেখান। এত কষ্ট হলেও স্কুলে একদিনও অনুপস্থিত থাকেননি তিনি।
আবদুল মালিক বলেন, স্কুল থেকে যে বেতন দেয় তাতেই আমি সন্তুষ্ট। আমি ভালো আছি। স্কুলে সাঁতরে যেতে কোনো কষ্ট হয় না আমার। অভ্যাস হয়ে গেছে।