বলুন তো কারা বেশি বোকা : মেয়েরা না ছেলেরা?
কলকাতা টাইমস :
অসীম বাবু একবার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দুইজন ব্যাক্তিকে নমস্কার জানিয়ে পাশ কাটিয়ে গেলেন তিনি। কিছু দূর যাওয়ার পর ফিরে দেখলেন লোক দুজন মারামারি করছে। অসীমবাবু তাদের জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা মারামারি করছেন কেনো? লোক দুজন জানালো, আপনি কাকে নমস্কার বললেন তা নিয়ে আমরা মারামারি করছি। অসীমবাবু হেসে বললেন, আপনাদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বোকা আমি আসলে তাকে নমস্কার করেছি।
যেন হোজ্জার সেই গল্পের মত, আমাদের সমাজে মেয়ে ও ছেলেদের মধ্যে কারা সবচেয়ে বেশি বোকা এই নিয়ে চলে এক ধরণের যুদ্ধ। ছেলেদের মতে মেয়েরা বোকা। আবার মেয়েদের মতে ছেলেরা। আসুন জেনে নেই কারা বেশি বোকা।
নিজে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা যাচাই করা : কোনো সম্পর্কের শুরুতে ছেলে ও মেয়ে একে অপরের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু মেয়ে আছে যারা এ বিষয়ে মোটেই আগ্রহ দেখায় না। এর মানে সে আপনার ভালোবাসায় হাবুডুবু খাচ্ছে এমনটি নাও হতে পারে। মেয়েটি তার প্রতি আপনি কতটা গুরুত্ব দেন তাও পরীক্ষা করতে পারে। তার ধারণা সে যদি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হন তাহলে আপনি নিজে থেকেই তাকে সব বলবেন। তাই তার এই উদাসীনতা মানে ভেতরে ভেতরে তার আগ্রহেরও প্রকাশ হতে পারে।
নিজেকে আকাশের তারা করে তোলা : মেয়েরা অনেক সময় আকাশের তারা হয়ে যায়। প্রেমিকের সাথে সপ্তাহে কিংবা মাসে একবার দেখা করেন বা কথা বলেন। এর মানে মেয়েটি সুযোগের অভাবে আপনার সাথে দেখা করতে পারছে না এমনটি নাও হতে পারে। কিছু মেয়ে আছেন যারা নিজেকে আকাশের তারা ভাবতেই ভালোবাসেন। খুব সহজে দেখা করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রেমিক পুরুষটিকে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে তারপর দেখা দেন। এতে করে তারা জানতে চায় আপনি আসলে তার প্রতি কতটা ব্যাকুল। এটিকে তারা অহংকারের বিষয় হিসেবে ভেবে থাকে।
দ্বিতীয় কোনো পুরুষ সম্পর্কে ঈর্ষান্বিত করে তোলা :কোনো প্রেমিক পুরুষ যখন তার প্রেমিকার সাথে খারাপ ব্যবহার বা তাকে অবহেলা করেন ঠিক সেই সময়ে মেয়েরা দ্বিতীয় কোনো পুরুষের প্রতি মনোযোগী হয়। এই অস্ত্রটির মাধ্যমে অনেক প্রেমিকাই তার প্রেমিক পুরুষটিকে ঘায়েল করে থাকে। এতে বাস্তব কোনো পুরুষ কিংবা মনগড়া কোনো পুরুষের গল্প শুনিয়ে প্রেমিক পুরুষের মনে ঈর্ষা সৃষ্টি করেন। নিজের প্রেমিকা অন্য কারো হয়ে যাচ্ছে এই ভয় থেকে প্রেমিক পুরুষ ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রেমিকার প্রতি আবার মনোযোগী হয়।
কথার মারপ্যাচে ফেলে দেওয়া : একটি কাজ মেয়েরা হরহামেশাই করে থাকেন আর তা হলো, কোন বিশেষ পোশাকে কিংবা মেকআপে তাকে কেমন দেখাচ্ছে তা সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করা। এটা আরেকটি প্যাঁচালো মাইন্ড গেম। কারণ সঙ্গী ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক যাই উত্তর দিক না কেন, মেয়েরা নিজেদের মনে দুইটি উত্তরের জন্যই জবাব তৈরি করে রাখে। যেমন, যদি সঙ্গী বলেন ভালো দেখাচ্ছে না, তাহলে কী হবে সেটা বলে দেয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি বলেন ভালো দেখাচ্ছে, সঙ্গিনী তখন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেশ করবেন যে- কোনটা ভালো দেখাচ্ছে? এতদিন কি তবে ভালো দেখাত না? ভালো না লাগলে আগে বলেনি কেন? ইত্যাদি আরও নানান কথার মারপ্যাঁচ। সুতরাং এই মাইন্ড গেমে পুরুষ যাই বলুন না কেন, বিপদে পড়া এক প্রকার অনিবার্য। ছেলেদের জন্য বলছি মিষ্টি হেসে সোজা করে উত্তর দিন-”তোমাকে সব কিছুতেই ভালো লাগে”, কেননা নারী এই জবাবটিই শুনতে চান। নিশ্চিত হতে চান যে আপনার চোখে তিনিই সেরা সুন্দরী।
দেখে মনে হবে ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না : আগেই বলেছি ছেলেরা ভাবে মেয়েরা খুব বোকা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবে তার উল্টোটি হয়। মেয়েরা অনেক সময় প্রেমিক পুরুষের কাছে এমনই ভাব দেখায় যে সে কিছু বুঝে না। কিন্তু আপনার অগোচরে সে বাজারে বিক্রি করছে আবার কিনছে। এরকম আচরণে মাধ্যমে তারা সম্পর্কটিকে তাদের নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখে। সামাজিকতার সুক্ষ্ম চালগুলো মেয়েরা অনেক বেশি ভালো বোঝে – এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। অনেক মারকুটে মেয়েও প্রেমিকের সামনে একেবারে পরনির্ভরশীল মানুষে পরিণত হয়। মেয়েরা সম্পর্ককে আরও বেশি পোক্ত করার জন্যই এই নাটক করে।
সাইকোলজিক্যাল বিশেষজ্ঞদের মতে, এর জন্য ছেলেদের বোকামিই দায়ী। কেননা বেশিরভাগ ছেলেরই বোকা মেয়েদের পছন্দ। তারা চান না তার প্রেমিকা তার থেকে বেশি বুদ্ধিমান হোক, তার চেয়ে বেশি স্মার্ট হোক, কিংবা আত্মনির্ভরশীল হোক। পুরুষের মনের এই গোপন কথা চালাক মেয়েরা খুব সহজেই বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী তাদের সাথে খেলে এই ‘মাইন্ড গেম’। একজন পুরুষ তাকে সারাক্ষণ দেখেশুনে রাখছেন কিংবা তার সমস্ত খুঁটিনাটি ভালোমন্দের দিকে খেয়াল দিচ্ছেন-এই ব্যাপারটি নারীরা রীতিমত উপভোগ করেন ও এটাই কামনা করেন সম্পর্কে।
অপেক্ষার তিক্ত অভিজ্ঞতা : প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার তিক্ত অভিজ্ঞতা অনেকেরই রয়েছে। দেখা যাচ্ছে সারাক্ষণ আপনাকে তাড়া দিয়ে দিচ্ছে এখনও বের হওনি কেনো? আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারবো না ইত্যাদি। কিন্তু প্রেমিক পুরুষটি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছার পর শোনা যায় প্রেমিকা এখনো বাসা থেকে বেরই হননি। এরকমটি একদিন দুদিন হলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এটি যখন সব সময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে তখনই বুঝতে হবে প্রেমিকা মহাশয়ী প্রেমিক মহাশয়ের সাথে সূক্ষ্ম একটি গেম খেলছে। মেয়েরা এই বিষয়টিতে খুব মজা পান। সাইকোলজিক্যাল বিশেষজ্ঞদের মতে, মেয়েরা মনস্তাত্ত্বিক কারনে এই কাজটি করে থাকেন। তারা বলেন এই কাজটির মাধ্যমে মেয়েরা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ বলে ভাবতে পারেন। এবং সম্পর্কে তার নিজের একটি ভালো অবস্থান গড়ে নেয়ার জন্য এই কাজটি মেয়েরা করেন।
অপেক্ষা করানো : অপেক্ষা করানো নারীদের স্বভাব-এ কথা সহজেই স্বীকার করে নেবেন বেশিরভাগ পুরুষ। তবে জেনে রাখুন,এটা নারীর সভাব নয়, বরং তার মাইন্ড গেমের সূক্ষ্ম একটা চাল। খুব সাধারণ একটি উদাহরণ দেই- ডেটিং এর ক্ষেত্রে বেশির সময় ছেলেটিকেই অপেক্ষা করতে হয়। দেখা গেল প্রেমিক নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর পর প্রেমিকা বাসা থেকে বের হচ্ছে। এসব ছাড়াও প্রেমের প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলতে দেরি করা সহ নানান বিষয়ে নারীরা প্রেমিককে অপেক্ষা করান।