November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular খেলা

কোনোদিন ফুটবলে পা না দিয়েই বিখ্যাত ফুটবলার হয়ে উঠেছেন এই ব্রাজিলিয়ান! 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমসঃ

নান্দনিক ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। আর সেই ব্রাজিলেই বেড়ে ওঠা কার্লোস কাইজারের গল্পটা অন্যরকম। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা শুরু।কিন্তু ক্যারিয়ারে একটিবারও মাঠে নামেননি কার্লোস। অথচ তিনিই ফুটবলের ‘কিংবদন্তি’! কাইজারের বিস্ময়কর কিছু নেতিবাচক ‘প্রতিভা’ ছিল। যেমন- ছলচাতুরি, জালিয়াতি ও প্রতারণা ইত্যাদি। সেই জীবনই আকৃষ্ট করেছে বহুজনকে। বিখ্যাত পরিচালক লুইস মাইলস তাকে নিয়ে তৈরি করছেন একটি তথ্যচিত্র। যার নাম দেয়া হয়েছে  ‘কাইজার: দ্য গ্রেটেস্ট ফুটবলার টু নেভার প্লে ফুটবল’। চলতি মাসেই থিয়েটারে আসছে। ফক্স স্পোর্টসের রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে কার্লোস কাইজারের জীবনের আদ্যোপান্ত।

কার্লোস হেনরিক রাপোসো, যিনি কার্লোস ‘কাইজার’ নামেই বেশি পরিচিত। জার্মান কিংবদন্তি ফুটবলার ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ারের সাথে চেহারার মিল থাকায় তার এই নামকরণ। জার্মান ফুটবলে ‘কাইজার’ বা ‘সম্রাট’ নামে পরিচিত ও সম্মানিত বেকেনবাওয়ার। এবার ফিরে আসা যাক কার্লোস কাইজারের আসল গল্পে। নিজেকে কিভাবে বিক্রি করতে হয়, তা অনেক বড় বড় বিপণন কর্মকর্তার চেয়েও ভালো জানতেন তিনি। মিথ্যা, ছলনা, প্রতারণার উপর দাঁড়ানো তার ক্যারিয়ার ২০ বছরেরও বেশি দীর্ঘ।

কথার জাদু ছিল কাইজারের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা। একবার তার সাথে কথা বলা শুরু করলে যে কেউ মন্ত্রমুগ্ধ হত। তার উপস্থাপনা এবং শব্দের জাদুতে প্রভাবিত হত সকলে। যেমনটি হয়েছিলেন কিংবদন্তি ফুটবলার বেবেতো, কার্লোস আলবার্তো এবং জিকো। কিন্তু প্রতিটি ধূর্ত মানুষেরই ভাগ্যের সাহায্য প্রয়োজন হয়। কাইজার এমন যুগে বাস করেছেন যখন কোনো ইন্টারনেট ছিল না। আর এটাই তার মাস্টারপ্ল্যান কার্যকরী করতে সহায়তা করেছে। তিনি এক ক্লাব ছেড়ে অন্য ক্লাবে গেছেন, ছয় মাসের ছোট চুক্তি করেছেন। সেই ক্লাবের পরিচালক, প্রেসিডেন্টকে নিজের বন্ধু করে নিয়েছেন। কিন্তু গণমাধ্যম ছিল তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তাদের জার্সি উপহার দিতেন, সেরা খেলোয়াড়দের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ করে দিতেন। এর বদলে তারা তার যোগ্যতা-দক্ষতা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করত।

কার্লোসের পন্থা ছিল, ম্যাচের জন্য পুরোপুরি ফিট নোই বলে বল ছাড়াই কিছু সময় অনুশীলন করতে চাইতেন তিনি। খেলার জন্য প্রস্তুত হতেই পুরনো অজুহাতটি কাজে লাগাতেন, ‘ভুয়ো ইনজুরি’। কাইজার নিজেই বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন এভাবে- ‘শুরুর দিকে আমি তিন মাসের জন্য ইনজুরিতে ছিলাম। আমি এই ইনজুরির ভান করেছিলাম। কারণ সেই সময়ে তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য কোনো ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স টেকনোলজি ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসি, কিন্তু আমি পেশাদার হওয়াটা পছন্দ করি না। ক্লাবের খেলোয়াড়দের দেখাশোনা করার দায়িত্বটাই আমি ক্লাবে বেশি পালন করেছি। আমি ছিলাম অনেকাংশেই ফুটবলিং ‘ন্যানি’!’

এই কৌশল হয়ত অনেকের কাছে মূল্যহীন মনে হবে, কিন্তু তার জন্য চমৎকারভাবে কাজে লেগে যায়। যখনই তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যেত বা তার সবসময় ইনজুরিতে থাকা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ক্ষুদ্ধ-বিরক্ত হয়ে তাকে ক্লাব থেকে বের করে দিতে চাইতেন, তখন সতীর্থরাই তার বিক্রি ঠেকাতে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করত। নিজের জন্য এক বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন কাইজার। এগুলোই ছিল তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

এখন ব্রাজিলের একটি জিমে মহিলা বডিবিল্ডারদের প্রশিক্ষণ দেন কাইজার। স্বভাবতই সেখানে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু তিনি। সবাই তার সাথে দেখা করতে চান। এমনকি বয়স পঞ্চাশের ঘরে পৌঁছালেও পুরনো সেই আকর্ষণ এখনো ধরে রেখেছেন। পরিচালক লুইস মাইলস বলেন, ‘প্রথমে অন্য সবার মতো আমিও এই গল্প বিশ্বাস করিনি। কিন্তু যখন খোঁজ নিতে শুরু করলাম দেখি এর অধিকাংশই সত্য।

 

Related Posts

Leave a Reply