বর বা কনে নয়, এখানে উপহারী বাল্যবিবাহের একমাত্র এবং মূল আকর্ষণ
সুটকেস বোঝাই কাপড়, জুতো ও মোটা অংকের টাকা যা পেতে অপক্ক বয়েসের সরল মন সহজেই রাজি হয়ে যায় বিয়ের পিঁড়িতে বসতে। আবার সেই বিয়েতে পাওয়া উপহার সোশ্যাল মিডিয়ার ছড়িয়ে লোভ দেখানো হয় অন্য মেয়েদের। এইভাবেই আফ্রিকার নাইজারে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়। দেশটিতে ১৫ বছর হওয়ার আগেই এক তৃতীয়াংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। নানাভাবে প্রচারণা চালিয়েও দেশটিতে বাল্যবিয়ে রুখা সম্ভব হচ্ছে না।
নাইজারের ঐতিহ্য অনুযায়ী বিয়ের সময় বিপুলসংখ্যক উপহারসামগ্রী দেওয়া হয় কনেকে। সুটকেস বোঝাই কাপড়, জুতো ও মোটা অংকের টাকা থাকে উপহারের তালিকায়। এসব উপহার সামগ্রীর ছবি শোভা পায় নতুন বিবাহিতদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন সবাই এসব উপহারসামগ্রী দেখে তারিফ করে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিয়ের বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা হয়। সেসব ক্ষেত্রে বর-কনের সেলফি, বিয়ের আংটি কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের ছবি গুরুত্ব পায়। কিন্তু নাইজারের বিষয়টি ভিন্ন। সেখানে মূল্যবান সামগ্রী যেন মূল বিষয় হিসেবে উঠে আসে।
তরুণীদের অনেকেই এসব উপহার সামগ্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে প্রলুব্ধ হয়। ধনী জামাই আসলে তাদেরও এমন সব সামগ্রী জুটবে, এ লোভ হেলাফেলা করা কঠিন তাদের পক্ষে।
সামাজিক চাপের বিষয়টিও কম নয়। অনেক পরিবারই এমন দারুণ সব উপহার সামগ্রী দেখে তাদের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে উপহারের আশা করতে থাকে। এতে অল্পবয়সেই বিয়ে দেওয়ার চাপ তৈরি হয় তরুণী ও শিশুকন্যাদের ওপর। যদিও অল্পবয়সে বিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে এখনো নাইজার মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। দেশটিতে বিয়ের পর সাধারণত মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া যৌন ও পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে প্রচুর। তবুও রোজ কত না বাল্যবিয়ে হয়েই চলেছে এভাবে।