September 29, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

পৃথিবীটাকে শূন্য করে দিতে পারে যেসব রোগ

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

যুগে যুগে বহু প্রাণঘাতী রোগের মহামারী সামাল দিয়েছে বিজ্ঞান। কিন্তু রোগের আনাগোনা থামেনি। এমন রোগ এখনো বিরাজ করে যাদের পরাজিত করার কার্যকর উপায় আবিষ্কার করতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে পৃথিবীতে এমন কিছু রোগ আছে যেগুলো বিজ্ঞানীদের কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। তাদের মতে, এই রোগগুলো পৃথিবীটাকে মানবশূন্য করে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট। শুধু মানুষই নয়, বিশ্বটা শূন্য হয়ে যেতে পারে এদের কারণে। এদের সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

এবোলা : ইতিমধ্যে একে নিয়ে বহু আলোচনা ও খবর হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, দফায় দফায় কয়েক বছরের জন্যে এবোলার মহামারী দেখা দেবে পৃথিবীতে। বিশ্বের নির্দিষ্ট কিছু অংশে বার বার দেখা দিচ্ছে এই ভাইরাসের আগ্রাসন। সাধারণত আফ্রিকায় মহামারী আকারে দেখা যায়। কিন্তু ইউরোপসহ আমেরিকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আফ্রিকায় এ রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৯০ শতাংশের মতো। যখন তখন এবোলা আরো ভয়ংকরভাবে আঘাত হানতে পারে।

বাবোনিক প্লেগ : ১৪ শো শতকের দিকে প্লেগ মানবজাতিকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। একে সামাল দেয়া হয়েছে। তার অর্থ এই নয় যে প্লেগ আর দেখা যাবে না। ১৩ শো শতকের দিকে প্লেগে মারা যায় ৭৫ মিলিয়ন মানুষ। বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধীব্যবস্থা দুর্বল তাদের দেহে হানা দেয় প্লেগের জীবাণু। আবার স্বাস্থ্যবান মানুষও বাঁচেনি এর হাত থেকে। প্লেগের আগমন আবারো ঘটতে পারে। লাখো কোটি মানুষের মৃত্যু ঠেকানোর উপায় আছে কি? এ রোগকে পুরোপুরি নির্মুল করা সম্ভব হয়নি।

মারবার্গ ভাইরাস : এবোলে ভাইরাস যে পরিবারের, মারবার্গ একই জায়গার। ব্যাপকভাবে প্রাণঘাতী। আফ্রিকাতে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। জার্মানি এবং যুগোস্লাভিয়াতে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। বাকি দেশগুলোতে ছড়ানো অসম্ভব কিছু না। আক্রান্ত হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে কোনো লক্ষণই প্রকাশ পায় না। আর এ সময়ের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না এই ভাইরাসে মানুষ কেন আক্রান্ত হচ্ছে? নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে মানবজাতি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে।

স্প্যানিশ ফ্লু : ১৯১৮ সালে যখন স্প্যানিশ ফ্লু আগ্রাসন শুরু করে, তখন বিশ্বের ৫০০ মিলিয়ন মানুষ এতে আক্রান্ত হয়। আজ থেকে ১০০ বছর আগে চিকিৎসাপদ্ধতি একেবারে ভিন্ন ছিল। তবে আধুনিক যুগে মনে করা হয়, রোগটি ফিরে এলে কার্যকর চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এ কথা বলা যায় না যে, কতটা ভয়ংকর খুনী হয়ে তা ফিরে আসতে পারে। এর আগমনে নিমিষেই কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে এলে বাঁচার উপায় আছে কিনা কেউ নিশ্চিন্তে বলতে পারেন না।

বার্ড ফ্লু : ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আরেক ধরন এটি। বিরতি দিয়ে এটি ফিরে আসতে পারে বার বার। ২০১rtt৮ সালের এক গবেষণায় বার্ড ফ্লুকে এমন রোগ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে যা কিনা গোটা পৃথিবীতে ছেয়ে পড়তে পারে। এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। সাধারণ মুরগির দেহ থেকে অন্য মুরগির দেহে ছড়ায়। ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত মানুষের দেহে ছড়ায়নি এই ভাইরাস। চীনে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যে কোনভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তেই পারে।

সার্স : সেভার অ্যাকুট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম বা সার্স সত্যিকার অর্থেই একটা অঞ্চলের জনসংখ্যা শূন্যের কোঠায় আনতে পারে। ২০১৩ সালে স্বল্প পরিসরে এটি এক হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। যদি ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় তো সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে। সাধারণ সর্দি যে ভাইরাসের কারণে হয়, সেই পরিবারভুক্ত ভাইরাস এ রোগের কারণ। কিন্তু অনেক ভয়াবহ। কোনো অ্যান্টিবায়োটিক একে তাড়াতে পারে না।

মার্স : মিডল ইস্ট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম বা মার্স। এর আবির্ভাব মধ্যপ্রাচ্যে। ধারণ করা হয়, উট থেকে ছড়িয়েছে মানবদেহে। প্রায় ২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়। এদের এক-তৃতীয়াংশ মারা যান। কাজেই বলা যায়, ভালোমতো আক্রমণ করলে কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে এই ভাইরাস। উটের দেহ থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারলে, মানুষ থেকে মানুষের দেহেও ছড়াতে সক্ষম। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিগত কয়েক বছর ধরে স্বল্প পরিসরে এক প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

অচেনা রোগ : আবার এমন রোগের আক্রমণ ঘটতেই পারে যার অস্তিত্ব হয়তো এখনো নেই। কিন্তু এমন রোগ আসতেই পারে যা প্রাণঘাতী  হয়ে উঠবে। এমনই কোনো রোগকে বলা হচ্ছে ‘ডিজিস এক্স’। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার অসংখ্য স্ট্রেইন এবং এদের ক্রমশ বদলে যাওয়ার প্রবণতার কারণে এদের কোনটা কখন কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে তা বলা যায় না। নতুন কোনো মারাত্মক রোগ হানা দিলে তাকে সামলানো সোজা কথা নয়। আর একে সামলানোর ওষুধ আবিষ্কারের আগেই হয়তো পৃথিবীটা শূন্য হয়ে যেতে পারে।

Related Posts

Leave a Reply