দ্রুতই পৃথিবী হবে একটি জ্বলন্ত উনুন আর আপনি পুড়ে ছাই !
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও আগামী কয়েক শতকের মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণতা স্ফুটনাঙ্কের তাপমাত্রা অতিক্রম করবে।
২৩০০ সালের মধ্যেই ঘুর্নিঝড়গুলো এতটাই শক্তিশালি হবে যে তাদের আঘাতে ভেঙ্গে পড়বে উুঁচু দালান। খরা এবং দাবানল হবে নিত্যদিনের ঘটনা। মানুষেরা সব অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা অঞ্চল- দুই মেরুতে গিয়ে বসবাস করবে।
বিশ্বের গড় তাপমাত্রা শিল্পবিপ্লবের আগের সময়ের চেয়ে ৪-৫ ডিগ্রি বেড়ে যাবে। এবং সমুদ্রের উচ্চতা ৩৩-২০০ ফুট বেড়ে যাবে। ফলে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়বে পৃথিবী।
সম্প্রতি গবেষণা করে এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গতকাল (৬ আগস্ট ২০১৮) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স এর জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা এই হুঁশিয়ারি দেন।
এতদিন বিজ্ঞানীরা পরিবেশ রক্ষায় ‘গ্রিনহাউজে’র কথা বললেও, পরিবেশ বিপর্যয়ের এই ধারণার নাম দিয়েছেন ‘হটহাউজ আর্থ’।
তারা বলেন, কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমাতে বিশ্বনেতারা সফল হলেও ‘হটহাউজ আর্থে’র কবলে পড়বে বিশ্ববাসী। এর ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ার পাশাপাশি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশ।
আগামী কয়েক দশকে যে তাপমাত্রা বাড়ার ধারণা করা হচ্ছে তার ফলে প্রাকৃতিক যে বিষয়গুলো এখন আমাদের রক্ষা করছে সেগুলো আমাদের জন্য হুমকি হিসেবে আবির্ভাব হবে বলেও সতর্ক করেন গ্রহবিদরা।
তারা বলেন, প্রতি বছর পৃথিবীর বনাঞ্চল, সাগর ও মাটি ৪৫০ কোটি টন কার্বন শুষে নিলেও তা এক সময় কার্বনের উৎসে পরিণত হবে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা অসহনীয়ভাবে বেড়ে যাবে।
আর এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচতে চাইলে ২০৫০ সালের মধ্যেই কার্বন নিঃসরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। তাতেও যথেষ্ট হবে না। কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করার পাশাপাশি পুরো বিশ্বের সব খাতেই ‘টেকসই’ হয়ে উঠতে হবে। প্রাণ ও প্রকৃতির ধ্বংস সাধন করে যে উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলছে তা বন্ধ করতে হবে।
কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেভাবে ক্রমাগত অতি জাতীয়তাবাদী হয়ে উঠছে তাতে এই লক্ষ্য অর্জন খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদি লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে বের হয়ে পুরো মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। উদাহরণত যেসব গরীব দেশের পক্ষে নিজেদের চলমান উন্নয়র বাধাগ্রস্ত করে কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব নয় তাদের জন্য ধনী দেশগুলো আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন করতে পারে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশ উল্টো প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে গেছে।