November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ভয়াবহ : ফিরে আসছে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের আগের যুগ! শঙ্কায় বিজ্ঞানীরা

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবেন। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। কারণ এই অ্যান্টিবায়োটি দেহের কিছু জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধ করবে। এসব সংক্রমণে অন্যান্য ওষুধের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।

মাইক্রোবায়োলজি সোসাইটি কাউন্সিলের সদস্য ড. পল হসকিসন সবাইকে সাবধান করে বলেন, হয়ত আগামী ১০ বছরের মধ্যে জীবাণুর সংক্রমণ এমন হবে যে একে দূর করা যাবে না। এর অর্থ ভয়াবহ। তখন প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনসহ বিভিন্ন সার্জারির সময় সামান্য আঁচড় বা সংক্রমণ প্রাণঘাতী হয়ে দেখা দিতে পারে।

বর্তমানে জাপানে জি-৭ সামিটে উপস্থিত আছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছেন ড. পল। অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল ব্যবহার প্রতিরোধের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে নতুন ধরনের ওষুধ প্রস্তুতের কথাও বলেন।

আমেরিকান গবেষকরা এক ব্যক্তির দেহে বিশেষ প্রজাতির ই. কোলি ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন যা অ্যান্টিবায়োটিক অব লাস্ট রিসোর্ট, কলিস্টিনের কার্যক্ষমতা প্রতিরোধ করে দেয়।

সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনরে পরিচালক টম ফ্রিডেন ইতিমধ্য হুঁশিয়ার করে বলেছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা শেষ হতে আর বেশিদিন বাকি নেই। চীন এবং আফ্রিকাতেও কলিস্টিনের ব্যর্থতা দেখা গেছে।

স্ট্রাথক্লাইড ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. হসকিসন জানান, বিজ্ঞানীরা খুব সহজ উৎস থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক প্রস্তুত করে থাকেন। নতুন কোনো উৎস খুঁজে বের করাও খুব কঠিন কিছু হবে না। তিনি সেই সময়ের কথা বলেন যখন দেহে নগন্য কাঁটাছেড়ায় মৃত্যু ঘটতে পারে। সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটবে যা প্রতিরোধ করতে পারবে না কোনো ওষুধ। অথচ এখন অ্যান্টিবায়োটিকই একমাত্র ভরসা হয়ে রয়েছে। হাসপাতালে অ্যাবডোমিনার সার্জারির প্রয়োজন হলে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় সংক্রমণের প্রতিষেধক হিসাবে। আর এমনটা ঘটা মানেই যেকোনো সার্জারি বা প্রতিস্থাপনের ইতি ঘটা। অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের আগের যুগে যদি আবারো ফিরে যেতে হয়, তবে কি অবস্থা হবে তা ভাবাই যায় না।

বড় সমস্যা হলো, ওষুধ নির্মাতারা নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির জন্যে যে গবেষণা প্রয়োজন, তার পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢালতে আগ্রহী নয়। ওই আমেরিকানের দেহে যে ‘সুপারবাগ’ ধরা পড়েছে তা এমন সময়ের ইঙ্গিত করছে যখন লাখ লাখ মানুষ বেঘোরে মারা পড়বে যেকোনো সংক্রমণে।

তাই যেকোনো বিরূপ পরিস্থিতির মোকাবিলায় কার্যকর ওষুধের মজুদ থাকতে হবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাছে। যদিও এসব ওষুধের বৈচিত্র্য শেষের পথে বলেই মনে করেন ড. হসকিসন। আরো বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আরো ব্যাপক উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে। তবে সংক্রমণ প্রতিরোধে যে অ্যান্টিবায়োটিক কাজে লাগবে, তা ব্যবহার করতেই হবে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মেনে নিতে হবে।

নতুন ওষুধ প্রস্তুত এবং এর কার্যকারিতা পরীক্ষার পর বাজারজাতকরণের গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে আবারো নতুন করে চিন্তা করতে হবে।

কলিস্টিনের শক্তিমত্তা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। এর পর আমেরিকার কমার্শিয়াল সেক্রেটারি অব দ্য ট্রেজারি লর্ড ও’নিল জানান, মানুষের দেহে সুপারবাগ আবিষ্কারের পর ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই ভাববার সময় হয়ে গেছে। এ বিষয়ে কিছু প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। পৃথকভাবে জি২০ এবং জাতিসংঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের চুক্তিনামা অনুষ্ঠিত হতে পারে।

ডেভিড ক্যামেরন এ সমস্যার মোকাবিলায় তার শক্ত অবস্থানের জানান দিয়েছেন টোকিওতে। অন্যান্য নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠান শিগগিরই এ বিষয়ে এগিয়ে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন হাসপাতাল ও কৃষিখাতে অ্যান্টিবায়োটিকের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তর্জাতিক কমিউটিকে আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্লোবাল ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির তাগাদা দেওয়া হয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

Related Posts

Leave a Reply