দয়ালু মানুষদের সুখ তাড়াতাড়ি নষ্ট, কেন জানেন ?
এক অনন্য গুণ দয়াশীলতা। এর চর্চা মানুষকে অনাবিল আনন্দ ও তৃপ্তি দেয়। আমাদের চারপাশে দয়ালু মানুষগুলোই সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত সঙ্গ হয়ে ওঠে। এরা সাধারণত বিনয়ী, ভদ্র এবং হাসিমুখের মানুষ হয়ে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, দয়ালু মানুষগুলোও কিন্তু অসুখী হতে পারেন। অন্যদের নিঃশর্তে উপকার করলেও অনেক দুশ্চিন্তা তাদের ওপর ভর করে ঠিকই। কাজেই অন্যকে খুশি করার কাজটি আপনি করলেও নিজে সুখী হতে নাও পারেন। এর পেছনের কারণগুলো তুলে ধরা হলো।
তারা বেশি চিন্তা করেন
দয়ালুরা সাধারণ বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন। আর এ ধরনের মানুষগুলো বিষণ্নতার ঝুঁকিতে থাকেন। হতে পারে তারা সবসময় কিছু সমস্যার কথা ভাবেন যেগুলো ঠিক করা দরকার। তারা ওই সব মানুষদের নিয়েই চিন্তা করেন যারা সমস্যায় থাকেন। তারা রাজনৈতিক, পারিবারিক এমনকি অন্যের ব্যক্তিগত সমস্যাগুলোকে খুব সিরিয়াসলি নেন। আর এমনটা যিনি করেন তার মনের সুখ উবে যেতে বেশি সময় লাগার কথা নয়।
আত্মতৃপ্তি আসে না
নিজের দেখভালের কাজটি দয়ালুরা খুব একটা করেন না। বরং তারা অন্যদের বেশি বেশি দিতে ইচ্ছুক। নিজের সমস্যা মেটানোর পরিবর্তে প্রতিবেশী বা অচেনা কাউকে বিপদ থেকে উদ্ধারে অস্থির থাকেন। এ কারণে নিজের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য হুমকির মুখে থাকে।
ত্যাগ
দয়াশীলতার চর্চাকে আরো গভীরে নিতে তারা ক্রমাগত ত্যাগী হতে থাকেন। এমনকি নিজের পরিবার, সময়, কাজ, বন্ধু, ঘুম, বিশ্রাম এমনকি খাবার পর্যন্ত ত্যাগ করতে পিছপা হন না। অথচ তার নিজের এ বিষয়গুলো আগে ঠিকঠাক রাখা উচিত। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের এই ত্যাগী মনোভাব এক ধরনের অভাব সৃষ্টি করে যা তারা নিজে বুঝতে পারেন না। কাজেই ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে যায়।
নিঃস্বার্থ প্রাপ্তি আশা করেন
তারা কেবল দিতেই থাকেন। অন্যের কাছ থেকে নেতিবাচক কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বুঝতে চান না তারা। আবার এমন সময় আসে যখন অন্যের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার দরকার হয়। তখন তারা একই ধরনের প্রাপ্তি আশা করেন। এটা বুঝতে চান না যে, সবাই তার মতো দয়াশীল নন। এ সময়টাতে বড় ধরনের আঘাতের মুখোমুখি হতে হয়। তাই প্রায় সময়ই স্বার্থপর মানুষের সমানে পড়তে হয় তাদের। এটা অবশ্যই দুঃখজনক বিষয়।
অতিরিক্ত দেয়া
দয়ালু মানুষগুলো এত বেশি দেয়ার প্রস্তুতি নেন যা কিনা সাধ্যের বাইরে চলে যায়। এ কারণে অনেকেই দেনার দায়ে পড়ে যান। এ থেকে বেরিয়ে আসাও তাদের জন্যে কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু চাপটা নিজেরই সামলাতে হয়। এক পর্যায়ে তাদের খুব বাজে পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এটা কারো জন্যেই সুখকর নয়।
স্বপ্ন ও চাহিদা থেকে দূরে
তারা কেবল অন্যের জন্যে করে যান মানে এই নয় যে তাদের কোনো চাহিদা বা স্বপ্ন নেই। কিন্তু এদিকে সময় দেয়ার সময় কোথায়? কাজেই ধীরে ধীরে নিজের স্বপ্ন থেকে দূরে সরতে থাকেন তারা। পরিণতি নিজের চাহিদা পূরণ আর হয়ে ওঠে না। স্বপ্নগুলোও অধরাই থেকে যায়। তাদের ভালো থাকার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রেই একটু বদলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়।